রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন
ভোলা প্রতিনিধি॥ ভোলা সদর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে সরকারি চাল চুরি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলার চর জাঙ্গালিয়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. সমশের আলীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মামলার আসামি মো. মজিবল হক পালোয়ান ও মো. ইউছুফ আলী পালোয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. মজিবল হক পালোয়ান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছরের ২৭ নভেম্বর জুমার নামাজের পর আমাকে ও আমার ছোট ভাই মো. ইউছুফ আলী পালোয়ানকে ওই এলাকার সেকেন্দার আলীর ছেলে সমশের আলী সরকারি চাল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দিয়ে আটক করায়। আটকের সময় আমি কারণ জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত কেউ আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ দেয়নি। পরে আমি লোকের মাধ্যমে জানতে পারি চর জাঙ্গালিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন নুরানি মাদরাসার নামে এক মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হয়। সে চাল আত্মসাতের অভিযোগে ওই মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. সমশের আলী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদেরকে আটক করায়।
এই মিথ্যা মামলায় আমাদের দুইজনকে দেড় মাস জেল খাটতে হয়েছে। কিন্তু কবে কখন কে বা কারা এ চাল বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছে এবং কে এ চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে আমি কিছুই জানি না। জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আমরা বিষয়টি সন্ধানে গিয়ে দেখতে পাই, চর জাঙ্গালিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন নুরানি মাদ্রাসার নামে ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা থেকে গত বছরের ১০ অক্টোবর এক মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হয়। সে চাল চর জাঙ্গালিয়া ৮নং ওয়ার্ডের এসহাক দালালের ছেলে মো. ইউছুফ আলী দালাল একই বছরের ১৮ অক্টোবর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের বিলি আদেশে স্বাক্ষর দিয়ে উত্তোলন করেন। পরে চালগুলো ইউছুফ আলী দালাল ও সমশের আলী মিলে আত্মসাৎ করে।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তারা নিজেদেরকে বাঁচাতে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেয়। এমনকি আটকের দিন আমার ভাই ইউছুফ আলী পালোয়ানের ঘর থেকে এক বস্তা রেশন কার্ডের চাল ও সাত বস্তা বাজার থেকে ক্রয়কৃত প্লাস্টিকের বস্তাভরা চাল জব্দ করে সরকারি চাল বলে প্রচার করা হয়।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, সমশের আলী এর আগে জাঙ্গালিয়া বাজারে সরকারি জমি দখল করে দোকান করার সময় মজিবল হক প্রতিবাদ করায় তাকে এ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই তিন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আবু তাহের, মো. হানিফ, আবু মাল ও মো. ইউছুফ আলী পালোয়ান।
এব্যাপারে অভিযুক্ত সমশের আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে মজিবল হক পালোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বিষয়টি অস্বীকার করলে পরে লোকজন নিয়ে তার ভাই ইউছুফ আলী পালোয়ানের থর থেকে আট বস্তা চাউল উদ্ধার করেন। পরে আমি মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় অ্যাসিল্যান্ড স্যারের কথায় আমি মামলার বাদী হয়েছি। এছাড়া তার সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই। মামলার বাদী হওয়ায় সে আমার বিরুদ্ধে এসকল মিথ্যা অভিযোগ করছে।
ভোলা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা সরজমিনে গিয়ে মজিবল হকের বাড়ির ইউছুফের ঘর থেকে আট বস্তা চাউল উদ্ধার করি। এবং মজিবল হক ও তার ভাই ইউছুফকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করি।
Leave a Reply