শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি॥ ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে সাত মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর নির্যাতিতার কাছ থেকে কৌশলে ৩৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে আর ফেরত দেয়নি ধর্ষক। এমনকি ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে নির্যাতিতা বাদী হয়ে ধর্ষক ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামি হলো, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের মৃত ছাদেক ভাট্টির ছেলে আনিচুর রহমান ভাট্টি ও একই গ্রামের মৃত নজের আলী হাওলাদারের ছেলে হালিম হাওলাদার।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, আসামি আনিচ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি রাতে পুলিশ তাকে ধরতে এসেছে এই মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্যাতিতার ঘরে আশ্রয় নেয়। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনামাফিক আনিচের সহযোগী হালিম বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।
আনিচ রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রী কাছে পানি খেতে চাইলে ওই গৃহবধূ পানি নিয়ে ঘরের দ্বিতীয় তলায় যায়। এ সময় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আনিচ। মান সম্মানের ভয়ে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানিয়ে চুপচাপ থাকেন।
ধর্ষক আনিচ তার মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রেখেছে জানিয়ে নির্যাতিতা তার কথানুযায়ী না চললে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে টানা সাত মাস ধর্ষণ করে। এমনকি আনিচ মাছের ঘের করার জন্য ওই গৃহবধূর কাছে তার স্বামীর পাঠানো ৩৫ লাখ টাকা ধার নেয়। ওই গৃহবধূর স্বামী বিদেশ থেকে আসার সময় হয়েছে জানিয়ে চলতি বছরের ৩ জুলাই আনিচের কাছে ধারের টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা শুরু করে।
গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যার পরে নির্যাতিতা রান্না ঘরে যাবার সময়ে ধর্ষক আনিচ ও তার সহযোগী হালিম তাকে জাপটে ধরে। এ সময় আনিচ তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে গৃহবধূর ডাক চিৎকারে তার ছেলে (১৫) এসে উদ্ধার করে।
এদিকে ধর্ষক আনিচ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গৃহবধূর অশ্লীল ছবি, ভিডিও এবং ভয়েস ম্যাসেজ ২/৩ গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। এমনকি প্রবাসে থাকা তার স্বামী কাছে তা পাঠায়। ওই অশ্লীল ভিডিও, ছবি ও ভয়েস ম্যাসেজ নির্যাতিতার বাবার পরিবারসহ বিভিন্ন লোকজন দেখতে পায়।
অবশেষে স্বজনদের সাথে আলোচনা করে নির্যাতিতা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফোরকান জানান, নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply