পিরোজপুরের তিনটি আসনে ঈগলের দাপটে ঝুঁকিতে নৌকা-লাঙল! Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




পিরোজপুরের তিনটি আসনে ঈগলের দাপটে ঝুঁকিতে নৌকা-লাঙল!

পিরোজপুরের তিনটি আসনে ঈগলের দাপটে ঝুঁকিতে নৌকা-লাঙল!




পিরোজপুর প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজুরের তিনটি আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির তিন নেতা। তাদের দাপটে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন নৌকা ও লাঙল প্রতীকের প্রার্থীরা। এর মধ্যে দুটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের দুই প্রভাবশালী নেতা। আর অন্যটিতে আছেন জাতীয় পার্টি (জাপা’র) এক কেন্দ্রীয় নেতা, যিনি চারবারের এমপি।

পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী ও নাজিরপুর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম একাদশ সংসদ নির্বাচনে তাকে প্রথমবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে প্রথমে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এমপি ও মন্ত্রী হয়ে পিরোজপুরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তবে তিনি শাসক দলের এমপি, মন্ত্রী হলেও পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের একটি বড় অংশ শুরু থেকেই তাকে মেনে নিতে পারেনি। সে অবস্থায় এখনো বিরাজমান।

মঙ্গলবার সকালে নাজিরপুরের দিঘিরজান বাজারে গণসংযোগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রাচর শুরু করনে শ ম রেজাউল করিম। শুরুতেই তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে মারমুখী ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়াল। সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে যে কোন মূল্যে নির্বাচিত হওয়ার জন্য নানান সন্ত্রাসীমূলক কাজ করে চলছেন তিনি ও তার পরিবার। তারা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নানা হুমকি দিয়ে চলছেন। তাদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হচ্ছে। নৌকা প্রতীকের অফিস ভাঙচুর করছে।

এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হওয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল। পর পর দুইবারের এমপি এবং দলের জেলা সভাপতি হওয়ায় তার রয়েছে একটি শক্ত বলয়। এছাড়া তার মেজো ভাই হাবিবুর রহমান মালেক পিরোজপুর পৌরসভার বারবার নির্বাচিত মেয়র, সেজো ভাই মো. মুজিবুর রহমান খালেক পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সেজো ভাইয়ের স্ত্রী সালমা রহমান হ্যাপী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একেএমএ আউয়াল তার ভাইদের জনপ্রিয়তাকেও কাজে লাগিয়ে আগাতে চান। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতি হওয়ার সুযোগে দল ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রায় সব কমিটিতে রয়েছেন এ অংশটি দলীয় প্রার্থীও বিরুদ্ধে গিয়ে আউয়ালের পক্ষে মাঠে নেমেছে।

শ ম রেজাউল করিমের বক্তব্যের জবাবে আউয়াল বলেন, উনি (রেজাউল করিম) আমাকে ও আমার পরিবারকে সন্ত্রাসী বলেন। অথচ নির্বাচন শুরুর আগেই ওনার নির্দেশে আমার এক কর্মীকে হত্যা করেছে তার সমর্থকরা।

আমার পরিবারের সদস্যদের গায়েও হাত দেওয়া হয়েছে তার নির্দেশে। সামনে নির্বাচন তা না হলে আমার ও আমার পরিবার ও কর্মীদের গায়ে হাত দেওয়ার ক্ষমতা রেজাউল বা তা লোকজন রাখেনা। জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট খা মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা সভাপতি একেএমএ আউয়ালের পক্ষে নির্বাচন করছি। কেননা আওয়ামীলীগের সুখে-দুঃখে সব সময় একেএমএ আউয়াল ও তার পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। আমরাও তাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। এ আসনে অপর দুই প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (জাতীয় পার্টি) ও মো. ইয়ার হোসেন রিপন (তৃণমূল বিএনপি)

পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ) আসনে এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টি- জেপি’র চেয়ারম্যান বর্তমান এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করছিলেন। তবে সে সময় জেপির দলীয় প্রতীক বাইসাইকেল নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন মেয়াদে সাতবার এমপি ছিলেন। পাঁচবার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এবার আওয়ামীলীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী তার শিষ্য মো. মহিউদ্দিন মহারাজের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন।

মহিউদ্দিন মহারাজ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। দলের জেলা নেতা হওয়ায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের একটি বড় অংশ মহারাজের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালে উপজেলা ও ইউনিয়ন গুলোতে উন্নয়নমূলক কাজ করায় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও আস্থাভাজন। এলাকায় তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে। ফলে ভোটের মাঠে মহিউদ্দিন মহারাজকে নিয়ে বেগ পেতে হবে নৌকার প্রার্থীকে।

মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, বিগত দিনে এখানে জোটের শরিক জাতীয় পার্টি-জেপি থেকে এমপি হলেও তিনি এলাকার উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। তিনি সব সময় আওয়ামীলীগ নিধনের চেষ্টায় ছিলেন। স্থানীয় সব নির্বাচনে উনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এবং সাধারণ জনগণ তার জবাব দেবে। এ আসনে অপর প্রার্থীরা হলেন- মো. মাহতাব উদ্দিন মাহমুদ (গণফ্রন্ট), মো. ছগির মিয়া (বাংলাদেশ কংগ্রেস), মো. জাকির হোছাইন (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), মোহা, মিজানুর রহমান (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি) ও আবুল বাসার (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি)।

অন্যদিকে পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে চারবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টিও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তুম আলী ফরাজী দলীয় মনোনয়ন পানটি। পেয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা মাশরেকুল আজম রবি। এবারের নির্বাচনে রুস্তুম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গত কয়েক বছর ধরে এমপি ফরাজী নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় পার্টির কর্মকা-ে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। উন্নয়ন কমিটির নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে তিনি সভা-সমাবেশ করতেন। এ ছাড়া তিনি রওশনপন্থি হওয়ায় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের তার ওপর ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে।

রুস্তুম ফরাজী সমর্থক মঠবাড়িয়া পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি রুস্তুম হোসনে বলেন, রুস্তুম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি অতীতেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। দলের নেতাকর্মীর ও জনগন তার সঙ্গে রয়েছেন। আমরা আশা করছি, এবারও তিনি এমপি নির্বাচিত হবেন।

ডা. মো. রুস্তুম আলী ফরাজী বলেন, আমি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে অবহেলিত মঠবাড়িয়াকে প্রায় আধুনিক ধ্যান-ধারণায় গড়ে তুলছি। গত পাচঁ বছরে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সাধারণ মানুষ কথনই ভুল করবে না।

পিরোজপুর-৩ আসনে শরিক জোটের হয়ে লাঙল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন মাশরেকুল আজম। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ পল্লীবন্ধু এরশাদকে ভালোবাসেন। আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয় পার্টিও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কখনো দল ছেড়ে যাইনি। দল আমাকে মূল্যায়ন করছে। আধুনিক মঠবাড়িয়া গড়তে মানুষ এরশাদের লাঙল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন।

পিরোজপুর-৩ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন- মো. শহীদুল ইসলাম (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), মো. আমির হোসনে (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), মো. শামীম শাহনেওয়াজ (স্বতন্ত্র), মো. জাসেম মিয়া (মুক্তিজোট), হোসাইন মোশারফ সাকু (বাংলাদেশ কংগ্রেস) এবং মো. শহিদুল ইসলাম স্বপন (বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি)।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD