শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: দুর্ধর্ষ টাইগারদের সামনে মাথা তুলে দাড়াতেই পারলো না ক্যারিবিয়ানরা। ৩২২ রানের বড় টার্গেট ৯ ওভার বাকি থাকতেই ছুয়ে ফেলে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ।সাকিব আল হাসানের দাপুটে সেঞ্চুরি আর লিটন দাসের দুর্দান্ত ফিফটিতে সহজেই সেই রান ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতল ৭ উইকেটে।
বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বল হাতে ৮ ওভারে ৫৪ রানে ২ উইকেট শিকারের পর ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছেন ‘ব্যাক টু ব্যাক’ সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২১ রানের পর সাকিব উইন্ডিজদের বিপক্ষে করেছেন অপরাজিত ১২৪ রান।
এই জয়ের সুবাদে শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা। তারা দুটি ম্যাচ জিতে, একটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। আর দুটি ম্যাচ হেরেছে। সমান ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া।
সোমবার টনটনের ছোট মাঠে এই বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার। সৌম্য সরকার ২৯, তামিম ইকবাল ৪৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। অবশ্য মুশফিকুর রহিম মাত্র এক রান করে আউট হলেও চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব ও লিটন দাস অসাধারণ দৃঢ়তা দেখিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন।
সাকিব ব্শ্বিকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন। ৯৯ বলে ১২৪ রান করেন তিনি। এটি তাঁর নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ১৬টি চারের মার দিয়ে ইনিংসটাকে সাজিয়েছেন তিনি। তবে বিশ্বকাপ অভিষেকে দারুণ উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন লিটন দাস। খেলেছেন ৬৯ বলে ৯৪ রানের দারুণ একটি ইনিংস। যাতে আটটি চার চারটি ছক্কার মার তাঁর এই ইনিংসে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২১ রান তোলে উইন্ডিজ। ভয়ংকর ক্রিস গেইল ১৩ বল খেলে একটি রানও করতে পারেননি! শেষ পর্যন্ত দলীয় ৬ রানে সাইফউদ্দিনের বলে ক্রিস গেইলের ক্যাচ দুর্দান্তভাবে লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। এমন অবস্থায় দলের হাল ধরেন অপর ওপেনার এভিন লুইস এবং শাই হোপ। ৫৯ বলে ফিফটি করেন এভিন লুইস। দুজনের জুটিতে তখন ১১৬ রান এসে গেছে। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। তার ঘূর্ণিতে বদলি ফিল্ডার সাব্বিরের তালুবন্দি হন ৬৭ বলে ৭০ করা এভিন লুইস।
এরপর ৭৫ বলে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা ৬ষ্ঠ ফিফটি করেন শাই হোপ। উইকেটে এসে রানের জন্য ছটফট করছিলেন নিকোলাস পুরান (২৫)। তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। লং অন থেকে দারুন ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। বিধ্বংসী শিমরন হেটমায়ার উইকেটে এসেই তাণ্ডব শুরু করেন। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মাত্র ২৫ বলে। শেষ পর্যন্ত এই মারকাটারি ব্যাটসম্যানকে তামিম ইকবালের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজ। ক্রিস গেইলের মতো আরেক ভয়ংকর হার্ডহিটার আন্দ্রে রাসেলও ‘ডাক’ মারেন আজ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই দানবীয় ব্যাটসম্যান।
এরপর উইকেটে এসে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ১৫ বলে ৩৩ রান করে বিপজ্জনক এই অল-রাউন্ডার সাইফউদ্দিনের শিকার হন। শাই হোপকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন মুস্তাফিজ। ১২১ বলে ৯৬ রান করা হোপকে লিটন দাসের তালুবন্দি করে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন কাটার মাস্টার। শেষদিকে ব্র্যাভোর ১৫ বলে ১৬ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে উইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২১ রান। শেষ বলে ব্র্যাভোকে বোল্ড করে দেন সাইফ। ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ আর সাইফউদ্দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩২১/৮ (গেইল ০, লুইস ৭০, হোপ ৯৬, পুরান ২৫, হেটমায়ার ৫০, রাসেল ০, হোল্ডার ৩৩, ব্রাভো ১৯, টমাস ৬*; মাশরাফি ৮-১-৩৭-০, সাইফ ১০-১-৭২-৩, মুস্তাফিজ ৯-০-৫৯-৩, মিরাজ ৯-০-৫৭-০, মোসাদ্দেক ৬-০-৩৬-০, সাকিব ৮-০-৫৪-২)।
বাংলাদেশ: ৪১.৩ ওভারে ৩২২/৩ (তামিম ৪৮, সৌম্য ২৯, সাকিব ১২৪*, মুশফিক ১, লিটন ৯৪*; কটরেল ১০-০-৬৫-০, হোল্ডার ৯-০-৬২-০, রাসেল ৬-০-৪২-১, গ্যাব্রিয়েল ৮.৩-০-৭৮-০, টমাস ৬-০-৫২-১, গেইল ২-০-২২-০)
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
Leave a Reply