রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
এইচ এম হেলাল ॥ অনেক জল্পনা কল্পনা ও ঢাকায় ব্যর্থ মিশন শেষে অবসর নিলেন দীর্ঘ ২৭ বছর বাস মালিক গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা আফতাব হোসেন। বাস মালিক সমিতির সভাপতি হলেও শ্রমিক ইউনিয়নে প্রভাব বিস্তার করে এতদিন বেশ দাপটের সাথে বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দখলে রেখেছিলেন তিনি।
গত ২ জানুয়ারী এক শ্রমিককে মারধর করার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে সাধারণ শ্রমিকরা। আর তাতে ঘি ঢেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আলফা টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন লিটন মোল্লা।
সূত্রমতে, গত কয়েকদিন ধরেই নথুল্লাবাদে দফায় দফায় আফতাব বিরোধী বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। তবে বাস শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ বিক্ষোভে আলফা মাহিন্দ্রার শ্রমিকরাই অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছে। আর তাতেই সফল লিটন মোল্লা।
আজ মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারী) সকালে আফতাব হোসেন শারীরিক অসুস্থতার কথা স্বীকার করে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অবশ্য ওই পদত্যাগপত্রে সহ-সভাপতি মোঃ ইউনুস আলী খানকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারী প্রভাতী নামে একটি বাসের হেলপার আলমগীরকে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করেন বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেন। এ সময় সাধারণ শ্রমিকরা আফতাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ওই বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়েন আলফা মাহিন্দ্রা শ্রমিকরাও।
অসমর্থিত সূত্র বলছে কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লার নির্দেশেই আলফা শ্রমিকরা বাস শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভে অংশ নেন। এরপর দফায় দফায় বিক্ষোভ ও বৈঠক করেন বাস মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
এদিকে একটি অসমর্থিত সূত্র বলছে, লিটন মোল্লা বাস টার্মিনাল দখলের চেষ্টা করছেন। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ নাকি লিটন মোল্লাকে চেয়ারে বসে তারপর তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেছেন এমনটি দাবী লিটন মোল্লার বলে জানিয়েছেন লিটন ঘনিষ্টরা।
আর লিটন মোল্লা মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী। অপরদিকে আফতাব হোসেন আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অনুসারী।
তাইতো বরিশালে শ্রমিকদের বিক্ষোভে যখন নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উত্তাল তখন আফতার ছুটে গেলেন তার রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কাছে ঢাকায়। তবে আজকের পদত্যাগ ঘোষণার পর মনে করা হচ্ছে আফতার তার রাজনৈতিক অভিভাবক হাসানাতের কাছ থেকে কোন গ্রীন সিগন্যাল পাননি।
তবে কি তিনি স্বেচ্ছায় সভাপতির পদ থেকে সরে দাড়ালেন নাকি চাপের কাছে নতি স্বীকার করলেন এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শ্রমিকদের মাঝে।
তবে আফতারের পদত্যাগের খবরে বাস মালিক ও সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। কেননা দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে শ্রমিক ও বাস মালিকদের অত্যাচার নির্যাতনের মাধ্যমে কোনঠাসা করে রেখেছিলেন আফতাব। তাইতো বিক্ষোভ চললেও বাস চলাচল স্বাভাবিক রেখেছেন শ্রমিকরা।
এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, আফতাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকদের একটি অংশ মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের দাড়স্থ হয়েছিলেন। কিন্তু পরপর দুটি নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় সরোয়ার এ বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নয় বলে জানান শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে জানতে বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
Leave a Reply