বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন
বানারীপাড়া প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের মাদারকাঠি গ্রামের সৈয়দ হুমায়ুন কবির হত্যা মামলার আসামীদের বিচারের দাবীতে তার বৃদ্ধ মা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
এ সময় কবিরের বোন আক্তারুন্নেছা, আইনুন্নেছা, ভাই তরিকুল ইসলাম (বাদী), ২নং সাক্ষী খলিলুর রহমান, ৩নং সাক্ষী জাফর তালুকদার ও জাসদ নেতা আনিচুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বুধবার (৩ফেব্রুয়ারী) সকালে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিচারের দাবীতে অবস্থান কর্মসূচির সময় কবিরের বৃদ্ধ মা মোসাম্মদ ফিরোজা বেগম (৯৫) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই শুক্রবার (তখন রমজান মাস চলছিলো) তার নারিছেড়া ধন রোজাদার কবির জুমার নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়েছিলো।
পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা জিয়াউল হক মিন্টু সহ ১০ জন আসামী তার রোজাদার ছেলেকে নামাজ পড়তে যেতে না দিয়ে দা, হাতুরি, লোহার রড দিয়ে বেধরক মারধর করে হাতে ও পায়ে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দিনের বেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে। পরে কবিরের ভাই সৈয়দ তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় ওই বছরের ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা ( ১২/১০০) দায়ের করেন।
২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর মামলার চার্জশীট দেয়া হয়। আদালতে ওই চার্জশীট গৃহীত হয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ প্রখম আদালতে সেসন মামলা ৫১৪/১৪ এ রূপান্তরিত হয়ে বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমানে মামলাটির বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে।
মামলার বাদীকে দীর্ঘ ৭ বছর ধরেই আসামীরা ভিভিন্ন ধরণের হয়রানি ও হামলা-মামলা দিয়ে বিচার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি মামলাটির সাক্ষীর দিন ধার্য্য ছিলো। তবে আসামীদের প্ররোচনা ও অন্যরা টাকা-পয়সার বিনিময়ে হত্যার শিকার হওয়া কবিরের আপন বোন আক্তারুন্নেছাকে সাক্ষী দিতে না দিয়ে বিভিন্ন রকম ভুল বুঝিয়ে টেন্ডার করে দেয়।
ভাই হুমায়ুন কবিরকে ওই সময়ে গুরতর আহতবস্থায় আক্তারুন্নেছা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময়, মৃত্যুর পূর্বে সে সকল আসামীদের নাম বলে গিয়েছিলো বোনের কাছে। এজন্যই তাকে সাক্ষী দিতে ভয় ও ভুল বোঝানো হয়।
তার পরেও আক্তারুন্নেছা বার বার সাক্ষী দিতে চাইলে জিয়াউল হক মিন্টুকে বাদ দিয়ে সাক্ষী দিলে তার সাক্ষী গ্রহন করা হবে বলে জানান তৎকালীন এপিপি। বর্তমানে ওই কোর্টে নতুন এপিপি নিযুক্ত হলে পূর্বের ঘটনা তার কাছে বললে তিনি বাদী পক্ষকে আদালতে সাক্ষী দিতে আক্তারুন্নেছার রিকলের জন্য আবেদন করেন।
বিচারক আবেদন মঞ্জুর করলে আসামী পক্ষরা আদালতের চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির অর্ডারের বিরুদ্ধে ১৭ জানুয়ারি ৩৭৬নং স্মারকে হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের ৫ নম্বর কোর্টে আপিল করেন। পরে আসামীরা হুমকি দিয়ে বলে মামলা হাইকোর্টে নিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি মামলাটি আর চলবেনা।
এনিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে কবিরের মতো অবস্থা হবে সবার। বর্তমানে কবির হত্যা মাসমলার ১নং আসামী জিয়াউল হক মিন্টু বানারীপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে। ফলে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদ থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে।
বর্তমানে সে জামায়াতে ইসলামী সহ বিভিন্ন উগ্র সংগঠনের সাথে এক হয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গভীর ষড়য়ন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তার সাথে নিষিদ্ধ সর্বহারা পার্টির সাবেক লোকেরাও রয়েছে। এ অবস্থায় বাদী, সাক্ষী ও তাদের পরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
একই মামলায় চাখারের এক সাবেক চেয়ারম্যানও আসামী। সেও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে বিভিন্ন ভাবে তদ্বীর করছেন বলেও জানা যায়। উপরোক্ত বিবারণ রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় হত্যার শিকার হওয়া হুমায়ুন কবিরের মা ফিরোজা বেগম ও অন্যরা অবস্থান কর্মসূচি পালন কালে লিখিতপত্রে পাঠ করেন।
Leave a Reply