সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক সন্তানের জননী বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিচারের নামে প্রহসন করে এলাকার মাতবররা অভিযুক্ত যুবককে দিয়ে ভুক্তভোগী ও তার মায়ের হাত-পা ধরে ক্ষমা চাইয়ে মীমাংসা করে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, ভুক্তভোগী পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে চাইলেও মাতবররা এতে বাধা দেন। ঘটনার আট দিন পর পরিবারের লোকজন কৌশলে থানায় এসে গতকাল শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) রাতে মামলা করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের কাশিয়াগাড়ি গ্রামের এক সন্তানের জননী ওই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মহিলা (৩০) স্বামী পরিত্যক্তা। প্রায় ৮ বছর থেকে ওই মহিলা পিতার বাড়িতে আশ্রিত। গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে বাড়ির পাশে কাশিয়াগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তিনি ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে যান। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি ছাগলসহ স্কুলের বারান্দায় আশ্রয় নেন। এ সময় প্রতিবেশি কপিল উদ্দিনের পুত্র মোস্তাফিজার রহমান (৪৫) তাকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে তার চাচী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি ভাতিজিকে ওই অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তিন দিন পর এলাকার ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন খন্দকার মন্টুর নেতৃত্বে এলাকার মাতবররা কাশিয়াগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সালিশ বৈঠকে বসেন। সেখানে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর বিচারের নামে প্রহসন করে অভিযুক্ত মোস্তাফিজারকে দিয়ে ওই বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর হাত ও তার মায়ের পা ধরে ক্ষমা চাইয়ে ঘটনার মীমাংসা করে ঘটনা ধামাচাপা দেন।
ঘটনার প্রধান সালিশকারী ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন খন্দকার মন্টু সালিশ বৈঠকের কথা স্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষের সম্মতিতে সামাজিক কারণে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। মামলা করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সঠিক নয়। মীমাংসা না মানলে তারা আইনের আশ্রয় নিতেই পারে।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply