বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর শত বছরের ঐতিহ্যবাহী টাউন হল বন্ধ করে স্টল নির্মাণের ঘটনায় একাধিক মিডিয়ায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে বিষয়টি নিয়ে বিচার বিভাগসহ সব প্রশাসনের টনক নড়ে। ফলে শনিবার দুপুরে বিচার বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে এসে টাউন হলের বারান্দার নবনির্মিত স্টল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়।
পরে স্টলের মালিকরা তাদের দোকানের মালামাল সরিয়ে নেয় এবং শ্রমিকদের দিয়ে জন্য নবনির্মিত স্টল ভেঙে ফেলা হয়।
এদিকে টাউন হলের ওই স্টলের ছবি তুলতে গিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আকরাম শিকদার ও স্থানীয় সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী লিকন গাজীসহ কতিপয় ব্যক্তির হাতে মাছরাঙ্গা টিভির জেলা প্রতিনিধি চিন্ময় কর্মকার ও বাংলাভিশন টিভির জেলা প্রতিনিধি মো. শাহাদাৎ হোসেন খানকে লাঞ্ছিত ও হুমকি দেয়ার ঘটনায় সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। চিন্ময় কর্মকার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে পটুয়াখালী সদর থানায় এ জিডি করেন। এর আগে সন্ধ্যায় পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী সামসুর রহমান ইকবালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতী সালাহউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সাংবাদিকদের লাঞ্ছনাকারী ও হুমকি প্রদানের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
অপরদিকে পটুয়াখালীর শত বছরের ঐতিহ্যবাহী টাউন হলসহ জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় পাঠাগার মিলনায়তনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজসেবক এসএম আবুল হোসেন আবু মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৌমেন্দ্র চন্দ শৈলেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবদুল মোতালেব মোল্লা, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক শ ম দেলওয়ার হোসেন দিলীপ, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি গাজী মঈন উদ্দিন টারজন, চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মো. মতিউর রহমান খান, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অতুল চন্দ্র দাস, পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুফতী সালাহউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা ও আবৃত্তিশিল্পী শাজাহান খান, শহীদ স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুজ্জামান খান, দখিনা খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান দিপু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত,পটুয়াখালী জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১৮৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই টাউন হলটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের ইতিহাস। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ টাউন হলে সভা করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, অধ্যাপক মোজাফর আহমেদ, কমরেড মনি সিংসহ উল্লেখযোগ্য দেশবরণ্য ব্যক্তিরা। এখানে দেশবরেণ্য নাট্যদল, আবৃত্তিকার, সংগীত শিল্পীসহ অনেকেই সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে গেছেন।
Leave a Reply