শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের এক গ্রুপের হামলায় অপর গ্রুপের যুবলীগ নেতাসহ দুইজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আর এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা খুনের জন্য বাউফল থানার ওসিকে দায়ী করেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু এবং সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলুর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দলীয় বিরোধ চলে আসছিল।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টায় সালেহ উদ্দিন পিকুর ছোট ভাই ওই ইউপির যুবলীগের সহসভাপতি রুমন তালুকদার (৩০) ও তার চাচাতো ভাই যুবলীগ কর্মী মো. ইসাত (২৪) কেশবপুর বাজারে নবী আলীর দোকানে বসে চা পান করছিল।
এ সময় লাভলুর সমর্থক রফিক, রাসেল, ইব্রাহিম, নুরুর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন দেশীয় অস্ত্রসহ তাদের ওপর হামলা করে। এসময় তাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে রাত ৮টা ৩০মিনিটে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনার আগে গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) দুপুরে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা হামলা পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটে। তখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালেহ উদ্দিন পিকুর এক ভাইসহ উভয় পক্ষের ৪ জন আহত হন।
পিকুর ছোট বোন জেবুন্নাহার অনি অভিযোগ করেন, বাউফল থানার ওসি ওইদিন মামলা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করলে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটত না। মামলা না নিয়ে ওসি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সম্পাদকের সাথে দীর্ঘদিন থেকে আভ্যন্তরীণ বিরোধ চলে আসছিল। একাধিকবার উভয় গ্রুপের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
কিন্তু এ বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দলের উপজেলা পর্যায়ে কোন নেতা হস্তক্ষেপ করেননি। ফলে এই বিরোধ চলমান ছিল। আর এর জের ধরেই এই জোড়া খুন সংঘটিত হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোন মামলা না হলেও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৯জনকে আটক করেছে।
দলীয় বিরোধ ও হত্যাকান্ড সম্পর্কে ওই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে সভাপতি সম্পাদকের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ। এ ছাড়াও আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে দুইজনের মধ্য বিরোধ আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। আমরা দুইজনকে শান্ত থাকার জন্য বলেছি তারা আমাদের কথা শোনেনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান বলেন, ওই এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সহিংস ঘটনার কোন রেকর্ড থানায় নাই, থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নিত। করোনা পজিটিভ হওয়ায় ওসি অফিসিয়াল কার্যক্রম থেকে বাহিরে রয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু বলেন, শুক্রবারের ঘটনায় শনিবার আমি থানায় একটি এজাহার নিয়ে যাই। তখন বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান আমার অভিযোগ রাখেন এবং আমার কাছথেকে ১০ হাজার টাকাও রাখেন কিন্তু মামলা গ্রহণ কিংবা কোন ব্যবস্থা নেননি। ফলে নৃশংস এ হত্যাকান্ড ঘটেছে।
ওসি করোনা পজেটিভ কিনা জানি না। তিনি অফিস করছে নিয়মিত আমি অফিসে গিয়ে তাঁকে পেয়েছি তাঁর সাথে কথা বলেছি তিনিও আমার সাথে কথা বলেছে। করোনা পজিটিভ হলে আমার সাথে কথাও বলত না এবং অফিস ও করত না। এ জোড়া খুনের জন্য বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান পুরোপুরি দাই।
Leave a Reply