বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আবদুল কুদ্দুস নামের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘলবাড়ি-কৈ গ্রামে।অভিযুক্ত শিক্ষক একই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মছির ফকিরের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এর উপযুক্ত বিচার চেয়ে স্থানীয়রা বাঘলবাড়ি-কৈ বহুমুখী দাখিল মাদরাসা সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে উত্তেজনা তৈরি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়।
জানা যায়, গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ফুলের গাছ নেওয়ার বাহানা করে বৃ-রায়নগর গ্রামে ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। পরে ওই ছাত্রী আবদুল কুদ্দুসকে ঘরে বসতে দিয়ে নাস্তা খেতে দেয়। নাস্তা খাওয়ার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। পরে সে (ছাত্রী) বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় এবং সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) মাদরাসা সুপার আবদুস সামাদ আজাদী এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মৌখিক অভিযোগ দেয়।
কিন্তু অভিযুক্ত ওই শিক্ষক মাদরাসা সুপারের নিকট আত্মীয় (সম্বন্ধি) হওয়ায় বিষয়টি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং কাউকে না জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়াভাবে বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করার চেষ্টা করেন।
এদিকে বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা শুরু হয়। শত শত সাধারণ মানুষ এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করে মাদরাসার সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করলে অবস্থা বেগতিক দেখে মাদরাসা সুপার হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দের পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ এসে এলাকাবাসীদের ছত্রভঙ্গ করতে মৃদু লাঠিচার্জ করে। এতে উত্তেজনা শুরু হলে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মগরেব আলী ও চাটমোহর থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ঘটনার ব্যাপারে মাদরাসা সুপার আবদুস সামাদ আজাদী বলেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মাদরাসার সামনে এলাকাবাসীরা জড়ো হলে পুলিশকে খবর দেই।
সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে এমন মীমাংসা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মগরেব আলী জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীদের বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। তবে মেয়ের সম্মানের কথা চিন্তা করে তার (ছাত্রী) বাবা-মা এখন থানায় অভিযোগ বা মামলা করতে অনীহা প্রকাশ করছে।তবে অভিযোগ দিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান তিনি।
Leave a Reply