সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাছের ঘের দখল করতে না পেরে চরফ্যাসনে আওয়ামী লীগ নেতা কাজল ও ছেলে সুজনকে কুপিয়ে জখম করেছে ট্রাক শ্রমিকলীগ নেতা কাশেম বাতান ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা। গত রবিবার সকাল ১০টায় দক্ষিণ ফ্যাসন ৩নং ওয়ার্ড সিএন্ডবি রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত কাজল ওই এলাকার মৃত আলী আহাম্মেদের ছেলে ও পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি।
বর্তমানে তারা বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত আ.লীগ নেতা কাজল জানান, দীর্ঘদিন পূর্বে দক্ষিণ ফ্যাসন ৩নং ওয়ার্ড সিএন্ডবি রোড এলাকায় কাজল ৮০ শতাংশ জমি ক্রয় করে। ওই ক্রয়কৃত জমিতে কাজল দীর্ঘদিন ধরে মাছের ঘের তৈরি করে তার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। সম্প্রতি কাজলের মাছের ঘেরে লোলুপ দৃস্টি পরে পৌর ট্রাক শ্রমিকলীগ নেতা কাশেম বাতান তার সন্ত্রাসী বাহিনীর।
এছাড়া ওই ঘেরে কাজলের যে লভ্যাংশ থেকে মাসিক চাঁদা দাবি করে বসে কাশেম বাতান। চাঁদা না দিলে মাছের ঘের দখল করে নিবে বলে হুমকি দেয়। কিন্তু কাজল চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কাশেম ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এরপর থেকে কাশেম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ওই ঘের দখল নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন গত রবিবার কাশেম বাতান ও তার সন্ত্রাসী পুত্র সোহেল বাতান, শ্যালক ফারুক, শাহেদ, জামাল, আলামিনসহ ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে কাশেমের ওই ঘের দখল করার জন্য যায়। এ সময় কাশেম বাতানসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা যেকোন মূল্যে ওই ঘের দখল করে নিতে বলে হুমকি দেয়। শুধু তাই নয় ঘের দখলে প্রয়োজনে রক্তের বন্যা বসিয়ে দিবে বলে হুংকার দেয়। এমন সংবাদ পেয়ে কাজল ও ছেলে সুজন আসলে কাশেম বাতানের সাথে আলোচনা করার প্রস্তাব দেয়।
কিন্তু কাশেম কোন আলোচনা না করে ওই ঘের দখল করবে বলে হুমকি দেয়। এ সময় বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে কাশেম বাতানসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে কাজল ও সুজনকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলে আহতদের স্বজনরা জানান। অপর একটি সূত্র জানায়, কাশেম বাতান দক্ষিণ ফ্যাশন গ্রামে ডাকাতি ও চার খুন, খদেজাবাগ গ্রামে অজ্ঞাত মহিলার খুন, ওসমান গঞ্জে জাহাঙ্গীর জমাদারের বাড়িতে ডাকাতি এবং চরফ্যাশন থানায় হামলা, সরকারী কাজে বাধা প্রদানসহ পুলিশকে মারধর মামলাসহ প্রায় ১০/১৫টি চাঞ্চল্যকর মামলা রয়েছে।
এরমধ্যে একটি মামলায় কাশেম বাতানের গ্রেপ্তারের পর মানুষ তার উপর এত অতিষ্ঠ ছিলো যে দক্ষিণ ফ্যাশন গ্রামের মানুষ আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরন করে। এ সব মামলার আসামী হওয়া সত্বেও সে অবিরত তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মাদক ব্যবসার জন্য রয়েছে তার আরেকটি বাহিনী। এক সময়ের রিক্সাচালক কাসেম বাতান আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি বড় নেতায় পরিনত হন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধষর্ণ, জমি দখলসহ নানন অপকর্মের মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যান। শূণ্য থেকে লাখপতি কোটিপতিতে উন্নীত হতে গড়ে তোলেন নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর কাসেম বাতান হঠাৎ গডফাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও অপরাধ জগতে তার বিচরন শুরু হয় আরো অনেক আগে। ২০০৭ সনের ২৮ জুলাই দক্ষিণ ফ্যাশন গ্রামে জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধে বিবি হনুফা এবং বিবি আয়শাকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এই জোড়া খুনের ঘটনার মামলায় সিআইডির চার্জশীটভূক্ত আসামী।
Leave a Reply