শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
সুমন খান,বানারীপাড়া প্রতিনিধিঃ
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ সৈয়দ শহীদুল হক জামালকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ায় বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও পিরোজপুর-১(পিরোজপুর সদর-নাজিরপুর ও স্বরূপকাঠি) আসনে নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন মেরুকরনের সৃষ্টি হয়েছে।তিনি এ দু’আসনের যেকোন একটি আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হলে সেই আসনের এতোদিনের রাজনৈতিক সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যাবে।তার সঙ্গে লড়তে হলে আওয়ামী লীগকেও প্রার্থী দেওয়ার ব্যপারে হিসাব কষতে হবে। সেক্ষেত্রে দলের বিজয় ধরে রাখতে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট ও কর্মী বান্ধব প্রার্থী দেওয়ার বিকল্প নেই বলে দলের তৃনমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের অভিমত। বিশেষ করে বরিশাল-২ আসনে স্থানীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে আওয়ামীলীগকে। কারণ সৈয়দ শহীদুল হক জামাল একজন অভিজ্ঞ ও ঝানু রাজনৈতিক পলিসি মেকার হিসেবে পরিচিত।বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম জনপদ উদয়কাঠি ইউনিয়নের লবনসাড়া গ্রামে তার বাড়ি হওয়ায় নদীর পশ্চিম পাড়ের ৫ টি ইউনিয়নে তিন বারের সংসদ সদস্য সৈয়দ শহীদুল হক জামালের ব্যাপক প্রভাব ও জনপ্রিয়তা রয়েছে।এছাড়া বানারীপাড়া,উজিরপুর ও স্বরূপকাঠি উপজেলায় তার সুসংগঠিত নেতা ও কর্মী বাহিনী থাকার পাশাপাশি জনপ্রিয়তা রয়েছে।সৈয়দ শহীদুল হক জামাল ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বরিশাল সংযুক্ত পিরোজপুর (বানারীপাড়া-স্বরুপকাঠি) আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী তৎকালীণ প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করে প্রথম বারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে চমক দেখান। এরপরই তিনি রাজনীতির পাদ প্রদীপের আলোয় চলে আসেন।পুরস্কার হিসেবে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তাকে রেড-ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। চেয়ারম্যান হয়ে তিনি দুই উপজেলার শত শত বেকার যুবককে তার পিছনে না হাটিয়ে হলি ফ্যামেলি ও রেড-ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে চাকুরী দিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপণ কর১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় স্থাণীয় এক নেতার ষড়যন্ত্রের কারনে তাকে পরাজয় বরণ করতে হয়। তবে ২০০১ সালে পূণরায় তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে শের-ই-বাংলার পুত্র ও সাবেক পাট এবং বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী এ কে ফায়জূল হককে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।ওই সময় দলীয় চেয়ারপার্সন খুশি হয়ে তাকে জাতীয় সংসদের হুইপ নিযুক্ত করেন।এছাড়া তাকে প্রথমে মেহেরপুর ও পরে পিরোজপুর জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী করা হয়।২০০৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত একতরফা নির্বাচনেও তিনি বিএনপির এমপি নির্বাচিত হন।ওয়ান ইলেভেনের সেনা সমর্থিত ত্বত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সংস্কারপন্থীর অভিযোগে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের তৎকালীণ উপদেষ্টা,কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ শহীদুল হক জামাল দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হন। ফলে এ অঞ্চলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এ প্রবীণ নেতা ক্ষুদ্ধ হয়ে দলীয় চেয়ারপার্সনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ওই নির্বাচনে পিরোজপুর-১,২ ও বরিশাল -২ এ তিনটি আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়।ওই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হতে না পারলেও তার প্রার্থীতার কারণে বিএনপির প্রার্থীদের ভরাডুবি ঘটে। এবার দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিতের সবুজ সংকেত পেয়েই তিনি বরিশাল-২ ও পিরোজপুর-১ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে দলে ফিরে গেছেন বলে তার ঘনিষ্টজন সূত্রে জানা গেছে।
Leave a Reply