শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক ॥ মা ইলিশ রক্ষা অভিযান আর মাত্র এক দিন বাকী রয়েছে। আগামী ২৮ অক্টোবর রাত ১২ টায় অভিযান বন্ধ করে দিবে প্রশাসন। বরিশালে মা ইলিশের অভিযান প্রতি বছরের চেয়ে ভাল হলেও অভিযোগ রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। কোন কোন স্থানে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মা ইলিশ শিকার আবার কোন থানা পুলিশ মা ইলিশ রক্ষার নামে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিন বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের বন্দর থানা এলাকার টুঙ্গীবাড়িয়ার নতুন হাট নামক স্থানে। জালের ক্রেতা সেজে গিয়ে দেখা মেলে একজনের তার নাম সুরুজ নামের ব্যক্তির সাথে। তার সাথে পরিচয় হওয়ার পরে আমরা দূর থেকে এসেছি জাল ক্রয় করবো। এর পরেই চলে দরদাম। তিনি জানালেন জাল নিতে হলে ২৫ হাজার টাকা লাগবে। এর পরে ওই অবস্থায় চলে অনুসন্ধান। অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে বন্দর থানার ওসি নামক এক কনেষ্টবলের নাম। ওই থানায় ওসি কে জানতে চাইলে শুনা যায় আমরা তো ওসিকে চিনি না। মোগো লগে কতা কয় ফাইজুল ভাই হেই মনো হয় থানার ওসি এমন কথা জানালেন নাম প্রকাশ না শর্তে ফাইজুলের দেয়া ট্রলার মাঝি। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক সেই মাঝির সাথে চলে দিন ব্যপি অনুসন্ধান। সেখানে বেড়িয়ে এসেছে বন্দর থানার বকসি(মুনসী) ফাইজুল ইসলামের ইতিহাস। তিনি বন্দর থানা পুলিশকে দিয়ে ১০টি ট্রলারের অভিযান পরিচালনা করান। প্রতি ট্রলার থেকে ২৫/৩০ হাজার করে টাকা উত্তোলন করেন ওসি’র নামে। প্রথমে ট্রলার প্রতি নেয়ার কথা ছিলো ১০ হাজার টাকা করে। কিন্তু পরবর্তিতে উপরস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজের জন্য আরো ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ১০টি ট্রলার দিয়ে ডিউটি নামের ডাকাতি করিয়েছেন। অভিযোগ সূত্র জানিয়েছেন বন্দর থানার এলাকার মধ্যে তেমন কোন বড় নদী না থাকলেও তারা মেট্টোপলিটন পুলিশের পোষাক পরে নদীতে গিয়ে জেলেদের টর্চলাইট, মোবাইলসহ সকল কিছুই নিয়ে আসে। ২১ দিনের অভিযানে মাত্র ২জন আসামীকে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা হলেও বাকী জেলেদের কেনা বেচা করে কোন নির্দিষ্ট স্থানে বসে। সূত্র জানায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) এবং মৎস্য কর্মকর্তার সামনে পরে যায় বন্দর থানা পুলিশ আড়িয়াল খা নদীর মধ্যে বসে। সেখানে মৎস্য কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বন্দর থানা পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনারা কেন মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে নদীতে আসেন নি কেন। পরে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেও অন্যদের হাত থেকে মেলেনি রক্ষা। সূত্র আরো জানায় বাউফল থানা এলাকার ধূলিয়া নদীতে জাল ধরতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয় বন্দর থানা পুলিশ। পরে জাল মাছ দিয়ে রক্ষা মেলে বন্দর থানা পুলিশের। আর এসব কাজের সহযোগীতা করে আসছে বন্দর থানা পুলিশের দালাল খ্যাত তিন সাংঘাতিক । এরা প্রতিদিন পুলিশের সাথে নদীকে মাছের ভাগা ও টাকার ভাগা পেয়েই সকল কিছুই হালাল করে দেয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, পুলিশ কনেষ্টবল ফাইজুল প্রতিদিন রাতে দিনে মিলিয়ে ১০টি ট্রলারকে ডিউটি দিয়ে থাকে। আর এজন্য ফাইজুলের দরবারে ট্রলার প্রতি দিতে হয় ২ হাজার করে টাকা। এসব টাকা না দিলে ডিউটি জোটে না টাকা না দিতে পারাদের ভাগ্যে। বিভিন্ন কচ দেখিয়ে ফাইজুল হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তাদের ডিউটির বিষয় কিছুই জানে না বরিশাল জেলা মৎস্য অফিস। মা ইলিশ রক্ষায় থানা পুলিশকে নিয়মিত চিঠি ইসু করে মৎস্য অফিস আর তখনেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ফাইজুলের। এবারের অভিযানই নয় রেনু পোনাসহ নানাবিধ মাছের মহাসাগর ফাইজুলকে টাকা দিলেই সব কিছুই ঠিক। বন্দর থানা এলাকার অনেক বাসিন্দাদের অভিযোগ আসলে বন্দর থানায় ওসি কে ফাইজুল না গোলাম মোস্তফা হায়দার সেটা নিয়ে শুরু হয়েছে কৌতুহল। এদিকে স্থানীয়রা দাবী জানিয়ে বলেন বন্দর থানা পুলিশ ও তিন সাংবাদিকদের বাসার ফ্রিজ তল্লাসী করা হলেই বেড়িয়ে আসবে এসব ঘটনার মূল চিত্র। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বরিশাল মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র (ইলশা) জানান, আমার জানা মতে তাদের প্রতি ট্রলারে মৎস্য অফিসের লোক থাকা দরকার কিন্তু তারা না নিয়ে কেমনে এটা করে আমাদের জানা নেই। তবে তারা যদি জাল নিয়ে না পুরে ব্যবসা করে এটা অন্যায় এবং আইনের বর্হিভূত বলেও মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা। ২১ দিনের মধ্যে মাত্র এক দিন নামে মাত্র জাল পুরলেও বাকি জালের আস্তানা গড়ে উঠেছে টুঙ্গীবাড়িয়া ইউনিয়নের টুঙ্গীবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে। ঘটনার বিষয় নিয়ে বন্দর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা হায়দার এর সাথে সেল ফোনে যোগোযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি। (বন্দর থানার স্বঘোষিত ওসি ফাইজুলকে নিয়ে আসছে বিশেষ প্রতিবেদন)
Leave a Reply