মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
মো. সুজন মোল্লা, বানারীপাড়া॥ একজন ১০মম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা রহস্য নিয়ে স্বজন ও সহপাঠীদের কাজ থেকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগ পাওয়া হেছে। জানাগেছে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় বলদিয়া-মলুহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মনির হোসেনের আত্মহত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য তার প্রিয় বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থী মনির হোসেন পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের মহসিন হোসেনের ছেলে। শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারী বলদিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মনির আত্মহত্যা করে। পরে মনিরের আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী এবং বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা যুক্ত হয়ে স্কুলের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এনিয়ে তারা ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে থাকেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় তারা বলেন পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষকরা পরীক্ষার ফি’সহ অন্যান্য পাওনা টাকা চেয়ে শিক্ষার্থীদের তিরস্কার করেন। পাশাপাশি স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতনসহ অন্যান্য বিষয়ে যে অর্থ আদায় করেন তার বিপরীতে কোন রশিদ না দেয়া, বিদ্যালয়ের ওয়াইফাই বিলেরর জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক ৫০ টাকা হারে অর্থ আদায়, প্রাইভেট বন্ধ দিলে ১০ টাকা জরিমানা, স্কুল বন্ধকালীন সময়ে বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য চাঁদাসহ শোভনীয় নয় এমন আচরন করার অভিযোগ তোলা হয় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে।
এদিকে নিহত শিক্ষার্থী মনিরের মামা জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান দীর্ঘদিন যাবৎ তার ভাগ্নে মনির পারিবারিকভাবে আর্থিক সমস্যায় ভূগতেছিল। পাশাপাশি স্কুল হতে পরীক্ষার টাকার জন্য চাপ দেয়ায় তাকে হতাশার মধ্যে পড়তে হয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন নিহত মনিরের বাবা মহসিন শ্যালকের স্ত্রী জেসমিনকে বিয়ে করে তার ছেলে মনির সহ আরও ২ সন্তানকে রেখে অন্যত্র বসবাস করতো। সন্তানদের কোন খোঁজ খবর রাখত না সে। মনিরের মাকে নানা ভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করতো মহসিন। মনিরের মামার অভিযোগ তার বাবা ও সৎ মায়ের জন্য মনির আত্মহত্যা করেছে এমনটাই অভিযোগ মনিরের মামার
মহামারি করোনার কারনে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বলদিয়া মলুহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েই রইলো। এদিকে স্কুলের ওপরে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিহির কুমার রায় জানান শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ সত্যি নয়।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছত্তার বলেন তারা সব সময় শিক্ষার্থীদের ভালোচায়। তার ঘোষণা আছে কোন শিক্ষার্থী ফরম পূরনের জন্য আর্থিক সমস্যায় পড়লে তারা যে অর্থ দিতে পারবে তার বাকী টাকা তিনি দিয়ে দিবেন।
এ প্রসঙ্গে ইলুহার ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, মনিরের মৃত্যুতে তারা সকলেই শোকাহত।
তার মৃত্যুতে স্কুলের কর্মকান্ড যদি বিন্দু পরিমান দোষী হয় তাহলে তার সুষ্ঠ বিচার করা হবে।
Leave a Reply