ভোলায় ভিক্ষা করছে জেডিসি পরীক্ষার্থী তানিয়া Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




ভোলায় ভিক্ষা করছে জেডিসি পরীক্ষার্থী তানিয়া

ভোলায় ভিক্ষা করছে জেডিসি পরীক্ষার্থী তানিয়া




অনলাইন ডেস্ক// আগামী ১ নভেম্বর জেডিসি পরীক্ষা দেবে তানিয়া। কিন্তু পরীক্ষা কি ঠিকভাবে দেয়া হবে তার? একদিকে নিজের পড়ালেখার খরচ অন্যদিকে জঠরের জ্বালা। সব নিজেকেই ব্যবস্থা করতে হবে। তার ওপর গর্ভধারিণী মাও অন্ধ। তাই উপায় না পেয়ে অন্ধ মায়ের সঙ্গে পথেঘাটে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছে সে। সপ্তাহে একদিন স্কুল বন্ধ রেখে তাকে এ কাজ করতে হয়।

সূত্র জানায়, দুই বোন ও মাকে ফেলে বাবা মনছুর আলী চট্টগ্রাম পালিয়ে যান। মা রাশেদা অন্ধ। পরিবারে আয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধ মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করে তানিয়া। কিন্তু ভিক্ষা করলেও পড়ালেখা ছাড়েনি সে।

এ পর্যন্ত চালিয়ে এসে আগামী ১ নভেম্বর জেডিসি পরীক্ষা দিতে বসছে সে। এরপর আরও পড়াশোনার স্বপ্ন তার।

ভিক্ষা করা অবস্থায় তানিয়া ও তার মা রাশেদার সঙ্গে কথা হয় যুগান্তরের এ প্রতিনিধির। জানা যায় তাদের জীবনের গল্প।

রাশেদা বেগম আর মনছুর আলী দম্পতির দুই কন্যাসন্তান। ছেলে নেই। অন্ধ রাশেদার বড় মেয়ে শারমিনের জন্মের পর তানিয়া ৩ মাসের গর্ভে থাকা অবস্থায় সংসার ফেলে স্বামী মনছুর আলী চলে যান চট্টগ্রামে। আজও ফিরে আসেননি মনছুর আলী।

সেই থেকেই রাশেদার ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেয়া। অন্ধ রাশেদা ভিক্ষা করে বিয়ে দেন বড় মেয়ে শারমিনকে। যার বয়স বর্তমানে ২০ বছর। রাশেদার অভিযোগ, মেয়ের ঘরে নাতি-নাতনি হয়েছে। মেয়েজামাই যৌতুকের জন্য চাপ দেয় অটোরিকশা কিনে দিতে। রাশেদার ছোট মেয়ে তানিয়া। স্থানীয় মন্তাজউদ্দিন দাখিল মাদ্রাসায় পড়ে। এবার জেডিসি পরীক্ষা দেবে। সে পড়ালেখায় খুব ভালো বলে জানান মাদ্রাসা সুপার।

মা অন্ধ থাকায় একা ভিক্ষা করতে পারেন না। তাই মাকে সহযোগিতা করতে সপ্তাহে একদিন ক্লাস বন্ধ রেখে প্রতি বৃহস্পতিবার অন্ধ মায়ের ভিক্ষার সঙ্গী হয় জেডেসি পরীক্ষার্থী তানিয়া। লালমোহন বাজারের দোকানে দোকানে সারাদিন তারা ভিক্ষা করে।

দুপুরে কোনো বাড়িতে খাবার চেয়ে খেয়ে নেন মা ও মেয়ে। সারাদিনের ভিক্ষার টাকা দিয়ে সংসার চলে। আর তানিয়ার পড়ালেখার খরচ।

রাশেদা জানান, তানিয়া বড় হচ্ছে। সে মাদ্রাসায় পড়ে। ক্লাস রেখে ভিক্ষা করতে আসতে চায় না। তবুও বুঝিয়ে সুজিয়ে নিয়ে আসি।

তিনি বলেন, ভিক্ষার টাকায় কাগজ-কলম কিনতে হয়, মেয়ের হাত খরচ চালাই। তারপরেও মেয়েটা শিক্ষিত হোক তা চান রাশেদা বেগম।

তানিয়া জানায়, ‘প্রতিদিন ক্লাসে যাই। সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার মায়ের ভিক্ষার সঙ্গী হওয়ার জন্য আমি আসি। মা আমাকে ছাড়া চলতেই পারে না। ক্লাস বাদ দিয়ে ভিক্ষার সঙ্গী হতে আমার খারাপ লাগে, কী করুম আমরা গরিব। মা অন্ধ চোখে দেখে না। বাপকে আমি জন্মের পর চোখে দেখিনি। বেঁচে আছে না মরে গেছে তাও জানি না।’

মন্তাজ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফি উল্যাহ বলেন, তানিয়া আমাদের মাদ্রাসার নিয়মিত ছাত্রী। মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছে। মাদ্রাসা থেকে সে এবার জেডিসি পরীক্ষা দেবে। গরিব অসহায় ভিক্ষা করে সংসার চলে দেখে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD