বাউফলে ১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্বজনের, অনিশ্চিত কন্যা শিশুটির ভবিষ্যত Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বাউফলে ১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্বজনের, অনিশ্চিত কন্যা শিশুটির ভবিষ্যত

বাউফলে ১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্বজনের, অনিশ্চিত কন্যা শিশুটির ভবিষ্যত

বাউফলে ১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি স্বজনের, অনিশ্চিত কন্যা শিশুটির ভবিষ্যত




বাউফল প্রতিনিধি॥ এক মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের গর্ভে জন্ম নেয় এক কণ্যা শিশু। গত দশদিন পার হলেও সেই নবজাতক ও তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের কোন স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। শিশুটির জীবনে এ যেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানি। তারা দুজনেই পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। মা মেয়ের পরিচর্যা ও সার্বিক তত্বাবধানে আছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ ও উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা।

 

 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এসএম সায়েম বলেন, দশ দিনেও মানসিক ভারসম্যহীন নারীর কোন স্বজনের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ওই নবজাতকের নাম রাখেন অপরাজিতা। গত কয়েক দিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স এমনকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে অপরাজিতা হয়ে উঠেছেন আপজন হিসেবে।

 

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, দশ দিন বয়সী শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে বসে আছেন ওই নারী। শিশুটি ও তার মা সুস্থ। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অনেকেই শিশুটি ও তার মাকে পোশাক কিনে দিয়েছেন। তাতে খুব খুশি ওই নারী।

 

 

একপর্যায়ে ওই নারীর কেমন আছেন জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ভালো আছি। নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর নাম আফরোজা। নয়দিন আগেও একই নাম বলেন। ঠিকানা জানতে চাইলে বলেন কাউখালী। স্বামীর নাম বলেন কাওছার। তবে এর আগে ৩১ মে দুপুরে একবার বলেন, তাঁর বাড়ি বানারীপাড়া। আরেকবার বলেন, গলাচিপা উত্তর নলুয়া গ্রামে। স্বামীর নাম বলেন শাহিন।

 

 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী তিন-চার মাস ধরে ঘুরছিলেন উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের রাজাপুর মাতবরের বাজারে। কেউ খেতে দিলে খেতেন। না দিলে অভুক্ত থাকতেন। অধিকাংশ রাতে ওই বাজারে ছাউনির নিচে ঘুমাতেন। গত ৩০ মে (রোববার) সন্ধ্যায় তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। ব্যথায় কাতরালেও সারা রাত কেউ এগিয়ে আসেনি। পরের দিন সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ সন্তান প্রসবের পর জ্ঞান হারান তিনি।

 

 

ওই সময় এগিয়ে আসেন রেনু বালা নামের স্থানীয় এক নারী। তিনি নবজাতক ও প্রসূতিকে উদ্ধার করে পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে খবর পৌঁছায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা প্রশাসনের কাছে। অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে কালিশুরী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মাতবরের বাজার থেকে মা ও শিশুকে নেওয়া হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন ঠিকভাবে নাম-ঠিকানা বলতে না পারা ওই নারী। বয়স আনুমানিক ৩২ বছর।

 

 

চিকিৎসক সায়েম বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নিয়ে নবজাতক এবং ওই নারীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। বর্তমানে শিশুটি ও তার মা পুরোপুরি সুস্থ আছেন। দশদিনেও শিশুটি ও তার মায়ের স্বজনদের খোঁজ না পাওয়ায় শিশুটির নাম রেখে দিলাম অপরাজিতা।’

 

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘শিশুটি ও তার মা শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও শিশুটির মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় শিশুটিকে তাঁর দায়িত্বে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাঁকে বলেছেন, যতদিন লিগ্যাল অভিভাবক পাওয়া না যাবে ততদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখার জন্য।

 

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, আমার ভালো লাগছে যে শিশুটি ও তার মা সুস্থ আছেন। ওই নারী যেসব ঠিকানার কথা বলেছেন ওইসব জায়গায় খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তাঁর কোনো স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যেহেতু শিশুটির মা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাঁর কাছে শিশুটি নিরাপদ না। কোনো দম্পত্তি দত্তক নিতে চাইলে তাঁদের কাছে যথাযথভাবে হস্তান্তর করা হবে।

 

 

তিনি আরও বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) আবার লিখলে ওই নারীর আপনজনের নজরে পড়তে পারে। তাহলে আর শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। মাথা গোঁজার ঠাই পাবে শিশুটি ও তার মা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD