শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
সাইফুল ইসলাম, বাউফল ॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তরগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তৃণমূলের মানুষ ইউপি সেবামূলক কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাড়তি অর্থ ও সময় ব্যয় করে উপজেলার বিভিন্ন অফিস থেকে সেবা নিতে হচ্ছে।
সংশ্লিস্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরস্পর অভিযোগ তুলে নিজেদের দায়মুক্ত হতে যাচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার পার্শ্ববতী কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে তাদের জন্য অফিস বরাদ্ধ থাকলেও সংশ্লিস্ট দফতরের কর্মকর্তাদের দেখা মেলেনি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলার মদনপুরা, নওমালা, কালাইয়া নাজিরপুর এবং বাউফল ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে গিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ এ উপমহােেদশর প্রাচীনতম স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান।
গ্রাম-চৌকিদার আইন ১৮৭০ মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের নাম এবং কার্যাবলী সময়ে নেতৃত্ব বা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে পরিবর্তিত হয়েছে।
এক সময়ে নাম ছিল পঞ্চায়েত। প্রাথমিক ভাবে পঞ্চায়েতের কাজ ছিল গ্রামের আইন শৃংখলা রক্ষার জন্য চৌকিদার নিয়োগ প্রদান করা। পাচঁ সদস্য বিশিষ্ট পঞ্চায়েতে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক মনোনিত হতেন।
উপনিবেশিক শাসনামলে কেবল রাজস্ব আদায়ে দিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও কালক্রমে ইউনিয়ন পরিষ আইনশৃংখলা রক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচী সমন্বয় সাধন এবং জনগনকে কিছু মৌলিক সেবা প্রাদান ইত্যাদিা সঙ্গে যুক্ত হয়।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ যদি ইউনিয়ন পরিষদের অনেক কাজ ও দায়িত্ব বিধৃত আছে তথাপিও ইউনিয়ন পরিষদের দৈনন্দিন কাজ কিভাবে সম্পাদিত হবে সে সর্ম্পকে বিস্তারিত নির্দেশিকা রয়েছে। ২০০৬ সালে লোকাল গর্ভন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য একটি অপারেশনাল ম্যানুয়াল রয়েছে।
যার মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের পরিকল্পনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ক্রয়, উন্নয়ন স্কিম বাস্তবায়ন এবং রিপোটিং ইত্যাদি বিষয় নির্দেশনা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ সেবা সাধারন মানুষের কাছে পৌছানো জন্য উপজেলা দপ্তর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ বসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয় সংশ্লিস্ট সরকার।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, ইউনিয়ন পরিষদের গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী এলজিইডি সহকারী প্রকেীশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকেীশলী অধিদপ্তরের টিউবওয়েল মেকানিক,স্বাস্থ্য পরিদর্শক, পরিবার পরিকল্পনা সহকারী, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেটেনারি ফিল্ড অফিসার, ইউনিয়ন সমাজকর্মী, আনসার ও ভিডিপি দল নেতাদের নির্ধারিত অফিস কক্ষে বসে গ্রামীন লোকদের সেবা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে রয়েছে ওইসব সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা আলাদা কক্ষ এবং টেবিল চেয়ার। প্রতিটি কক্ষ নেইম প্লেট থাকলে বছর পর বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান বক্তব্য হচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদ সভায় কয়েকবার এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংশ্লিস্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া সত্বেও কোন আশানুরুপ ফল পাওয়া যায়নি।
নওমালা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা জানান, নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ বসছি। শুনেছি, ইউনিয়ন পরিষদ এ সরকারি কর্মকর্তা বসবেন। অদ্যবধি ওইসব কর্মকর্তা দেখা পায়নি।
উপজেলা পর্যায়ে খোজ নিয়ে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স রয়েছে। ওই কমপ্লেক্সগুলোতে শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদ সচিব এবং চেয়ারম্যান ও মেম্বার বসে থাকেন।
বাউফল সদর ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গেলে পরিষদে আসা কয়েকজন লোকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে কোন সরকারি লোক সেবা দিতে পাওয়া যায় না।
নাম মাত্র তাদের জন্য রুম বরাদ্ধ। মাসের পর মাস তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। উল্লেখিত বিষয় নিয়ে উপজেলা সরকারি দপ্তরগুলোতে একাধিকবার গেলে সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply