বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক।। বরিশালের অসাধু মাছ ব্যবসায়িরা বেশি অর্থের আশায় চিংড়ি মাছে জেলি মিশিয়ে বিক্রি করছে। মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলে ফায়দা লুটছে ওরা বেশ কয়েক জন মাছ ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রতারিত ক্রেতাদের দাবি বাজার মনিটরিং নিয়মিত না হওয়ায় বেপরোয়া মাছ ব্যবসায়িরা।
বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কাঁচা বাজারে অবৈধ এ ব্যবসা করছে একটি চক্র। বরিশালের হাট-বাজার এমনকি নগরীর অলি-গলিতেও ফেরি করে জেলি মিশ্রিত চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে। কম দামে চিংড়ি পেয়ে ক্রেতার সংখ্যাও প্রতিদিনই বাড়ছে।
অপরদিকে বেশিরভাগ ক্রেতারাই জানেন না টাকা দিয়ে তারা বিষ কিনে খাচ্ছেন। চিংড়ি মাছে জেলি মিশিয়ে ওজন বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে কম দামে। মিশ্রত ওই জেলি মানুষের স্বাস্থের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
বরিশালের মৎস্য ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করেছেন, প্রতিদিন বরিশালে কমপক্ষে ৩০ মন জেলি মিশ্রিতচিংড়ি বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা খুলনা-সাতক্ষিরা-বাগেরহাট থেকে জেলি মিশ্রিত চিংড়ি আমদানি করছেন। স্থানীয় পাইকারি বাজার থেকে ওই চিড়িং ছড়িয়ে পড়ছে বরিশালের হাট-বাজারে।
জালাল নামে এক ক্রেতা জানান, শনিবার ( ৬জুন) সকালে নগরীর নথুল্লাবাদ কাঁচা বাজারে চিংড়ি কিনতে গেলে বিক্রেতা দাম চান প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা। বড় সাইজের চিংড়িমাছ অথচ দাম কম। এতে তার মনে সন্দেহ হয়।
কেননা ওই সাইজের চিংড়ির (১২ থেকে ১৫টি চিংড়িতে এ কেজি) কেজি ৫শ’ টাকার কম হওয়ার কথা নয়। তবু দামে কম হওয়ায় তিনি ২ কেজি চিংড়ি মাছ কিনে আনেন। বাসায় এসে প্রতিটি চিংড়ি যাচাই করে দেখেন তাতে জেলি দেয়া। জানা গেছে স্থানীয়ভাবে বেলতলা, লাহারহাটে নদী থেকে চিংড়ি এনে তাতে অনেক ব্যবসায়ী ওজন বাড়াতে জেলি মেশান। সেই মাছ পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়।
এছাড়া খুলনা, সাতক্ষিরা, বাগেরহাট থেকে আমদানী হওয়া চিংড়িতে জেলি মেশানো থাকে।এজন্য বিদেশে চিড়িং রপ্তানি হচ্ছে না। কেননা বর্তমানে বাজারে আসা অধিকাংশ চিংড়ি মাছেই জেলি মিশ্রিত।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং বাড়ানোর জন্য দাবি জানান ক্রেতারা।
বরিশাল সদর উপজেলা সিনিঃ মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জিব সন্যামত বলেন, এমন অভিযোগ সাম্প্রতিক সময়ে তারাও পাচ্ছেন। তিনি বলেন, তরল জেলি সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়ি শরীরে পুশ এবং মাথার মোচার নিচে মেশানো হয়। এটি ‘আগার’ জাতীয় ক্যামিকেল। ব্যাকটেরিয়া কালচার করার জন্য পাউডার জাতীয় এ ক্যামিকেল ব্যবহৃত হয়। যা পানির সংস্পর্শ পেলে ফুলে যায়। এটি ম্যাজিক বলের আকৃতির। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।
অচিরেই নগরীর বাজারগুলোতে অভিযান চালানোর কথা বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন বলেন, এ জাতীয় জেলি মানুষের দেহের লিভার, কিডনি দুটোরই ক্ষতি করতে পারে। তিনি সর্বসাধারণকে এ ধরনের চিংড়ি না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
Leave a Reply