বরিশালে বীর উত্তম আব্দুস সাত্তার'র চোখেঁ জল Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালে বীর উত্তম আব্দুস সাত্তার’র চোখেঁ জল

বরিশালে বীর উত্তম আব্দুস সাত্তার’র চোখেঁ জল




এম. কে. রানা, অতিথী প্রতিবেদক:লাখো শহীদের আত্মত্যাগ ও বাংলার স্বাধীনচেতা বীর বাঙালীদের অসম যুদ্ধ এবং হাজারো মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ। আমরা হই স্বাধীন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ ৬৮ জন বীর সেনানীকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করেন। যে তালিকায় আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক মন্ত্রী মীর শওকত আলী, বাঙলার বীরখ্যাত আব্দুল কাদের সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে। সেই তালিকায় আছেন আমাদের বরিশালের কাশিপুর গণপাড়ার আব্দুস সাত্তারও।

অথচ আমরা বরিশালবাসী, আমাদের প্রজন্ম হয়তো আজও জানতে পারেনি বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে আমাদেরও একজন আছেন। আমরা বরিশালবাসী গর্বিত। গর্বিত নতুন প্রজন্ম। তবে এই বীর আর্থিক দৈন্যদশায় থাকলেও তাঁর তেমন একটা চাওয়া পাওয়া নেই। তাঁর দাবী বরিশালের অন্তত একটি সড়ক যেন তার নামে নামকরণ করা হয় এবং তার বড় ছেলের একটি চাকুরি।

তার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় যায়, ১৯৬৬ সালের ১২ আগস্ট তৎকালীন ইপিআর এ যোগদান করেন কাশিপুর গণপাড়ার বাসিন্দা মৃত রহমত আলীর মেঝ ছেলে আব্দুস সাত্তার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের পর ইপিআর বাহিনীর বাঙালী সদস্যদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন তিনি। ব্রিগেড হিসেবে ‘জেড’ ফোর্সের সুচনালগ্নে তিনি যুক্ত হন এবং তেলঢালায় প্রশিক্ষণ শেষে মেজর সাফায়েত জামিলের নেতৃত্বে পুনরায় যুদ্ধের ময়দানে ফিরে আসেন। তিনি ময়মনসিংহের ধানুয়া, কামালপুর, সিলেটের গোয়াইনহাট, ছাতক, টেংরাটিলা, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে সম্মুখযুদ্ধে অন্যন্য বিরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি কোদালকাঠী এলাকায় পাক বাহিনীর নোঙর করা গানবোট, লঞ্চ ও মার্জ তারই সহযোদ্ধা তরিকুলসহ মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করেন। যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অতুলনীয় ঘটনা।

মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে (গেজেট নং ৮/১৫/ডি-১/৭২-১৩৭৮) বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৬৮ জন বীর সেনানীকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করেন। সেই তালিকায় ৩৯ নম্বরে আছেন আমাদের বরিশালের গর্ব আব্দুস সাত্তার। তাঁর সাথে আলাপকালে জানা যায়, ১৯৭১ সালে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ৮০০ থেকে ৯০০। যার মধ্যে ৩০% ছিল পাকিস্তানী। মার্চ মাসের শুরুতেই তারা বাঙালী জওয়ানরা একত্রিত ছিলেন এবং ক্যান্টনমেন্টের সব ধরণের অস্ত্র গোলাবারুদ তাদের কব্জায় রেখে দিয়েছিলেন। সাথে সাথে ক্যান্টনমেন্টের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের (পাকিস্তানীদের) এক প্রকার গৃহবন্ধী করে সেখানে বাঙালী জওয়ানরা পাহারা দিতে থাকেন। এরপর ৭ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষনের (তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো, আমি (বঙ্গবন্ধু) যদি হুকুম দেবার নাও পারি …) পরই তাঁরা রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে বেড়িয়ে যান।

দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মাত্র ৭ দিন পূর্বে অর্থাৎ ৯ই ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধে তিনি পাক বাহিনীর গুলিতে আহত হন। তার পায়ে ও বুকে মোট তিনটি গুলি লাগে। দেশ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ল্যান্স নায়েক আব্দুস সাত্তার যোগ দেন। এরপর ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদে আসীন থেকে অবসরে আসেন আমাদের বরিশালের গর্ব আমাদের বীর উত্তম আব্দুস সাত্তার।

একান্ত আলোচনায় তিনি জানান, বিয়ের একদিন পরই তিনি ক্যান্টনমেন্টে চলে যান এবং সেখান থেকেই যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধকালীন সময় স্ত্রীকে তার পিত্রালয়ে লোক মারফর পাঠিয়ে দেন। ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD