রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০১:১৮ অপরাহ্ন
থানা প্রতিনিধি॥ বরিশালের হিজলায় সরকারি রাস্তা দখল করে চলছে ভবন নির্মাণের কাজ। যার কারণে জনগণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ। এমন এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন হিজলার পত্তনী ভাংগা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার এবং সভাপতি সাইফুল বেপারী।
হিজলা উপজেলায় একমাত্র মহিলা দাখিল মাদ্রাসা এটি। চারতলা ভবন পেয়ে খুশি এলাকাবাসী। তবে ভবন তৈরি করতে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। শুধু রাস্তাই নয়, মাউলতলা এবং পত্তনী ভাঙ্গা দুই গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটিও দখল করে রেখেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে নিশ্চুপ উপজেলা প্রশাসন।
পত্তনী ভাংগা হয়ে হাজারী বাড়ির সামনে দিয়ে পত্তনী ভাংগা দাখিল মাদ্রাসা হয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি রাস্তা চলে গিয়েছে হরিনাথপুর পর্যন্ত। বর্তমানে রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলমান। এ রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে তৈরি হচ্ছে মাদ্রাসার চারতলা ভবনের কাজ।
রাস্তার ঠিকাদার হুমায়ুন নলী জানান, রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। টপ লেবেলের ১২ ফুট পর্যন্ত পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলমান। নিচের অংশে কতটুকু তা জানা নেই।
মাদ্রাসার সামনে দিয়ে রাস্তা নেয়ার ব্যাপারে জানান, কর্তৃপক্ষ ভালো বুঝেন। আমরা কী বলব।
সফিজ উদ্দিন বেপারী, হামিদ আলী বেপারী, জামেদ আলী বেপারীসহ এলাকাবাসী মিলে তাদের বাড়ির সামনে একটি মাদ্রাসা তৈরি করেন ৩০/৩৫ বছর আগে। প্রতিষ্ঠাকালে ফোরকানিয়া মাদ্রাসা হলেও পরবর্তীতে এটি মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় রূপ নেয়।
আক্ষেপ করে প্রতিষ্ঠাতার পুত্র সিরাজুল ইসলাম বেপারী, আবুল হোসেন বেপারী, সাইফুল ইসলাম বেপারী জানান, প্রতিষ্ঠানটির সুপার জামাতা, সভাপতি গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। ন্যায় কথা বলতে গেলেও সুপার বলেন, চাঁদা চাই। আমরা এ প্রতিষ্ঠানের সদস্য আছি কি না তাও জানি না।
দুঃখ প্রকাশ করে তারা বলেন, এই দেখেন আমার বাবা-চাচাদের কবর। তারাই এটির প্রতিষ্ঠাতা। কয়দিন পর দেখবেন এই কবরের উপর দিয়ে মানুষ হাঁটছে, গাড়ি চলছে। আমদের কথা কেউ শোনে না। জমি আমরা দিয়েছি, প্রয়োজনে আরও দেব। ৫/১০ ফুট দক্ষিণ দিকে ভবন সরিয়ে নিলে এমন দশা হতো না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে এমন পরিণতি। তার বাবা-চাচাদের আত্মা কষ্ট পেত না।
সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে গেলে দেখা যায় সবুজ নামের এক লোক কাজ করছেন। তিনি সাব কন্টাক্টর। মূল ঠিকাদারের নাম জানেন না।
এখানে সরকারি কোনো লোক উপস্থিত আছে কিনা জানতে চাইলে জানান, তিনি তো ম্যাপ দেখেই কাজ করছেন। অন্যদের দরকার কী?
৯৮ ফুট লম্বা এবং ৩২ ফুট চওড়া বর্তমান ভবনের জন্য সরকার থেকে প্রায় ২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার কাজ চলমান। সুপার রুহুল আমিন জানান, সরকারি রাস্তা এবং কবরস্থান রেখেই নিজস্ব জায়গায় ভবন তৈরি হচ্ছে। তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে ১ (এক একর) জায়গা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রুনু বেগম জানান, তিনি গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার। বিষয়টি আসলেই জটিল। এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
গুয়াবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহজাহান তালুকদার জানান, রাস্তা রেখেই বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে।
এসও নেপাল জানান, অনিয়মের কোনো প্রশ্ন আসে না। আমি ভবনের এসও, রাস্তা কীভাবে যাবে তা আমার দেখার বিষয় না। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাইদ জানান, তিনি বরিশাল অঞ্চলে নেই।
Leave a Reply