বরিশালের বাবুগঞ্জে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব!! হুমকির মুখে একাধিক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালের বাবুগঞ্জে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব!! হুমকির মুখে একাধিক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা

বরিশালের বাবুগঞ্জে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব!! হুমকির মুখে একাধিক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা




প্রিন্স তালুকদার, বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্ধ্যা, সুগন্ধ্যা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তলদেশ কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী, রাজগুরু, রমজানকাঠী, রহিমগঞ্জ, মোল্লারহাট, লামচর, ঘোষকাঠীসহ ভাঙন কবলিত বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। হুমকির কবলে পড়ছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি যাদুঘরসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা ও ঘনবসতিপূর্ন এলাকা। বরিশাল জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত বালুমহাল ২৮টি। মামলা মোকদ্দমার বেড়াজালে ২৩টি বালুমহালের ইজারা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৩টি ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় ২টি মহাল ইজারা দেওয়া আছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার লামচর ঘোষকাঠী সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর ২৫ একর এবং পূর্ব ভূতেরদিয়া সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদীর ২৫ একর মহাল ইজারা দেওয়া রয়েছে। অথচ গুটিকয়েক বালু ব্যবসায়ী ইজারার দোহাই দিয়ে উপজেলার যত্রতত্র থেকে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে চলছেন দিনরাত। ভাঙ্গনের হুমকির কবলে পতিত হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি যাদুঘর, তার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ীঘর, শৈশবের বেড়ে উঠা এলাকা, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু, সেতু পাড়ের হাওলাদার বাড়ী, মাতুব্বর বাড়ী, চরসাধুকাঠী মাদ্রাসা, সরকারী আবুল কালাম ডিগ্রী কলেজ, ভুতেরদিয়া, ক্ষুদ্রকাঠী, মীরগঞ্জ বাজার, ছোট মীরগঞ্জ, রফিয়াদী, মোল্লারহাট এলাকার বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি। ভিটেমাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হতে চলছে শত শত পরিবার। উপজেলার রহিমগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সন্ধ্যা নদী। নদী ভাঙ্গনে হুমকির মধ্যে রয়েছে রহিমগঞ্জ লঞ্চ ঘাট ও মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি যাদুঘর, পাঠাগার। পানি উন্নয়ন র্বোড ভাঙ্গন প্রতিরোধে নদী রক্ষাবাধ নিমার্ন করলেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে নদী রক্ষাবাধে একাধিক স্থানে ফাটলের হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রহিমগঞ্জ, রাজগুরু, ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় সুগন্ধ্যা ও সন্ধ্যা নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের এ কাজে সহযোগীতা করছেন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। নদী ভাঙ্গনের আশংকাকে তোয়াক্কা না করে দিনরাত ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা কোন বিধি নিষেধ মানছে না, অবৈধ বালু ব্যবসায়ী রুপ নিচ্ছে বালুদস্যুতার। উপজেলার রাজনীতির মাঠে দ্বন্দ্ব থাকলেও বালুদস্যুতার প্রশ্নে একাট্টা, এক অপরের ভাইয়ের বন্ধনে আবদ্ধ ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির গুটিকয়েক নেতাকর্মী। শত শত পরিবারের নদী ভাঙ্গন নামক আশংকার ছোবলে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভাগ্যের দরজায় সোনালী সূর্যের উদয় হয় এসব বর্নচোরা নেতাদের। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী, বিএনপি নেতা হারুন অর রশিদ হাওলাদার ওরফে টুন্ডা হারুন, আবদুল হালিম বেপারী, ইউপি সদস্য বাবুল বেপারী, এলাকার সভাপতিখ্যাত জাপা নেতা শামীম আহসান, আব্বাস উদ্দিন ঘরামী, মোয়াজ্জেম হোসেন একাধিক ড্রেজার দিয়ে একাধিক পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রিী করছে। গত ৫ই মার্চ উপজেলার মোল্লারহাট এলাকায় বালুদস্যুরা নদীতে জেলেদের জাল ফেলতে বাধা দিয়ে জেলে ও এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে সভাপতিখ্যাত জাপা নেতা শামীম আহসানসহ একাধিক বালুদস্যু মারাতœকভাবে আহত হন। উপজেলার প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে, দিনের পর দিন এভাবে বালু উত্তোলন করে নিলেও দেখার কেউ নেই। বছরের পর বছর প্রশাসনের সঙ্গে সখ্য গড়ে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করে পকেট ভারী করছে অসাধু বালুদস্যুরা। উপজেলা প্রশাসন ও থানা থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরেও এ অবস্থা চলছে। রহিমগঞ্জ গ্রামের ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন স্মৃতি যাদুঘর রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন র্বোড ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে রক্ষা বাধ নিমার্ন করেন।ওই রক্ষা বাধের পাশে ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। এ ব্যাপারে বালু উত্তোলন কারী ইউপি চেয়ারম্যান নুরেআলম বেপারীর সাথে মুঠোফোটে আলাপকালে তিনি বলেন, “ডিসির কাছ থেকে বালুমহাল লীজ নিয়ে বালু উঠাচ্ছি।” রহিমগঞ্জ যাদুঘর ও লঞ্চঘাট রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড সন্ধ্যা নদীতে রক্ষাবাধ দিয়েছে। জেলা প্রশাসক নদী ভাঙ্গন রক্ষা বাধ এলাকাকে বালুমহল হিসাবে লীজ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী বিষয়টি এড়িয়ে যান। বালুমহল লীজ নেয়ার নামে নদী রক্ষাবাধের এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী। ইউএনডিপির ক্লাইমেট চেইঞ্জ কনফারেন্সে অংশ নেয়া বরিশাল প্রতিনিধি, বর্তমানে ব্যক্তিগত কাজে লন্ডনে অবস্থানরত আরিফুর রহমান মুঠোফোনে জানান, নদী ভাঙন তীব্ররুপ ধারণ করা স্থানের কাছাকাছি এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করলে নদীর গভীরতা আরও বৃদ্ধি পায় এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাও ভাঙনের কবলে পতিত হয়। বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত হাওলাদার বলেছেন, বালুমহাল ঘোষনা এবং ইজারা ছাড়া কেউ নদী কেটে বালু উত্তোলন করতে পারেন না। অবৈধ ভাবে নদী কেটে বালু উত্তোলনের অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদ বলেন, নদীর তীর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বালু উত্তোলন করলে বা কাটলে তেমন একটা ক্ষতি নেই। তবে তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করা হলে আশেপাশের এলাকা অবশ্যই ভাঙনের কবলে পড়বে। বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবুল কালাম আজাদ তালুকদার বলেন, ইউএনওকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া আছে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সহায়তা নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস বলেছেন, যেসব নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD