রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি॥ বরিশালের বাকেরগঞ্জে ভিজিডির উপকারভোগী দুস্থ ও অসহায় নারীদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে। ভিজিডির তালিকায় নিজের নাম ও স্বামীর নাম থাকলেও ঠিকানা পরিবর্তন করে এই সুবিধা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এছাড়াও অসহায় কর্মহীনদের আর্থিক সাহায্যের বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাটের জন্য মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৮ মাস ধরে ভিজিডির উপকারভোগী নারীরা এই চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এমন অভিযোগ এনে শনিবার সকালে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন সম্মেলন করেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর কবাই ইউপির ভিজিডির উপকারভোগী নারীরা।
উপকারভোগীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আমিনা বেগম। তিনি বলেন, সরকার অসহায় দুস্থ নারীদের জন্য প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে ভিজিডি চাল বিতরণ করে আসছে। উপজেলার ৭ নম্বর কবাই ইউপির দুস্থ অসহায় নারীরা এই চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছি।
প্রায় ১৮ মাস ধরে ভিজিডির তালিকায় দুস্থ একধিক নারীর নাম থাকলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান জহিরুল হক তালুকদার ও প্যানেল চেয়ারম্যান আরাফাত ইসলাম তালিকায় নাম নেই বলে ফিরিয়ে দিন। পরে একটি মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের নামে বরাদ্দকৃত চাল ঠিকানা পরিবর্তন করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তালিকা সংগ্রহ করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমার মতো আরো অনেকে রয়েছেন যাদের প্রত্যেকের নিজের, স্বামী, বাবার নাম ঠিক থাকলেও ঠিকানা পরিবর্তন করে কার্ডের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অপরদিকে অসহায় কর্মহীনদের আর্থিক সাহায্যের বরাদ্দকৃত ২ হাজার ৫০০ টাকা দেয়ার জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করা হয়। সেখানেও মোবাইল নম্বর পাল্টে দিয়ে টাকা তুলে নিচ্ছে।
চূড়ান্ত তালিকা অনুসারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তালিকায় ৬৮৯ নম্বর সিরিয়ালে বাকেরগঞ্জের শিয়ালঘূনী গ্রামের হারুন অর রশিদের স্ত্রী হালিমা বেগমের নাম থাকলেও সেখানে মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে ঝালকাঠির নলসিটি উপজেলার ভবানীপুরের মিলন চন্দ্র দাসের।
তালিকা অনুসারে এমন ১১ জন ব্যক্তির নাম ঠিকানায় অন্য ব্যক্তির মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। আবার অন্য জেলার বাসিন্দাও রয়েছেন। এছাড়াও আরো অনেকে রয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বাকেরগঞ্জের ৭ নম্বর কবাই ইউপির সদস্য মো. জহিরুল হক তালুদকার বলেন, ভিজিডির উপকারভোগী নারীদের সংখ্যা ২৪৯ জন। তাদের প্রত্যেকের কাছে কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কর্মহীনদের আর্থিক সাহায্যের বরাদ্দকৃত সব অর্থ পায়নি। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি অবগত আছি। অনেকে কার্ড পাওয়ার পর সেই কার্ড বিক্রি করে দেন। অনিয়ম হলেও দুর্নীতি করা হয়নি। কর্মহীনদের আর্থিক সাহায্যের বরাদ্দকৃত অর্থের জন্য ৯৫২ জনের তালিকা দেয়া হয়েছে। সেখানে হয়তো মোবাইল নম্বর ভুল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি আমার কোনো ঘনিষ্ট লোকের নাম ও মোবাইল নম্বর থাকে তাহলে এর দায় দায়িত্ব নিতে রাজি আছি। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জের ইউএনও মাধবী রায় বলেন, ডিসির কার্যালয়ের মাধ্যমে অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করছেন।
Leave a Reply