তদবির করেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না আইসিইউ,প্রাইভেটে বাণিজ্য Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




তদবির করেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না আইসিইউ,প্রাইভেটে বাণিজ্য

তদবির করেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না আইসিইউ,প্রাইভেটে বাণিজ্য

তদবির করেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না আইসিইউ,প্রাইভেটে বাণিজ্য




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দেশে করোনা শনাক্ত আবার বেড়েই চলেছে। মৃত্যুও উঠেছে ১০ জনের ওপরে। এর ফলে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই আশঙ্কার কথা জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন। সংক্রমণ বাড়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সরকারি হাসপাতালগুলোতেও। করোনা রোগীর একটি অংশকে রাখতে হচ্ছে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ)। ঢাকার বেশির ভাগ করোনা আইসিইউ এখন রোগীতে ভরা। একইভাবে নন-কভিড আইসিইউতেও রোগী কমছে না। ফলে ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না কোনো ধরনের আইসিইউ বেড।

 

 

প্রতিদিনই আইসিইউর জন্য হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। তদবির করেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না আইসিইউ। আইসিইউর জন্য ঘুরতে ঘুরতেই মারা যাচ্ছেন রোগী। ফলে চিকিৎসকরা কোনো জটিল রোগীকে আইসিইউর প্রয়োজন বলে জানালেই স্বজনদের মধ্যে শুরু হয় আতঙ্ক।

 

 

যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিদিন পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনেক আইসিইউ বেড খালি আছে। কিন্তু বাস্তবে যেসব রোগীর স্বজনরা আইসিইউ পেতে ব্যর্থ হন এবং আইসিইউ সাপোর্ট ছাড়াই স্বজনের মৃত্যু দেখেন, তাঁদের কাছে সরকারের আইসিইউ ব্যবস্থাপনার সংকট অনেক বড় এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা হয়ে থাকছে। আর এ জন্য তাঁরা সরকারের ব্যবস্থাপনার ঘাটতিকেই দায়ী করছেন। অনেকে আবার সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ না পেয়ে ছোটেন প্রাইভেট হাসপাতালে। যেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ বা বাণিজ্যের শিকার হন বলে প্রতিনিয়ত অভিযোগ উঠছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণে ঘাটতির বিষয়টি বারবার সামনে চলে আসছে। অবশ্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজেও প্রাইভেট হাসপাতালের খরচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ফি নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলেছেন।

 

 

গত সপ্তাহে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মোহাম্মদপুর এলাকার রোগী ওরফাতুন নেছাকে। কিডনি বিকল, হৃদরোগসহ নানা জটিলতা দেখা দেওয়ায় স্বজনরা তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন। বারডেমের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের ৮৩১ নম্বর বেডে ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেন। স্বজনরা প্রথমে বারডেমে চেষ্টা করে আইসিইউ পাননি। পরে তাঁরা যান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালে। সবখানেই সিরিয়ালের জন্য থাকতে হয় অপেক্ষায়। আর এই অপেক্ষার মধ্যেই গত ৭ মার্চ রাতে মারা যান ওই রোগী।

 

 

ওই রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘এক বছরে আইসিইউ নিয়ে এত কিছু হলো, তারপরও এখন আমরা আইসিইউ সেবা না পেয়ে প্রিয় স্বজনকে হারালাম; এর দায় তো সরকারকেই নিতে হবে।’ ওই রোগীর স্বজন আরো বলেন, ‘আমরা ঢাকা মেডিক্যালেও দৌড়ঝাঁপ করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি, আইসিইউ পাইনি।’

 

 

কেন এমন পরিস্থিতি—তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাজমুল হক বলেন, ‘এখানে সারা দেশ থেকেই রোগীরা আসে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টাই নানা ধরনের দুর্ঘটনার রোগী আসে, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেও রেফার করা হয়। যাদের বেশির ভাগের এক পর্যায়ে আইসিইউর দরকার হয়। এ ছাড়া অনেকেই আবার প্রথমে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে থেকে খরচ চালাতে না পেরে ছুটে আসে ঢাকা মেডিক্যালে। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে, এখানে এখন ১০০ বেডের আইসিইউ চালু করলেও সামাল দেওয়া কঠিন হবে। অথচ আমাদের এখানে আইসিইউ আছে মাত্র ২০টি। এ ছাড়া প্রতিদিন একলাম্পশিয়ার নারী রোগীদের জন্য কমপক্ষে ১০টি আইসিইউর দরকার হয়। সব মিলিয়ে এতটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে যে গত দুই দিনে আমার এখানে একটি আইসিইউ বেডও খালি ছিল না। নতুন কোনো রোগীকেই আমরা আইসিইউ দিতে পারিনি।’

 

 

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘প্রতিদিন এমন কিছু রোগী আসে যাদের আইসিইউতে দীর্ঘদিন রাখতে হয়। ফলে ওই বেডগুলো খালি হয় না। আর আমরাও দিনে এখন গড়ে দুই-তিনজন নতুন রোগী ছাড়া আর কাউকে সুযোগ দিতে পারি না।’

 

 

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্য অনুসারে ঢাকার ১০টি সরকারি হাসপাতালের ১১৭টি করোনা আইসিইউ বেডের মধ্যে ৭৭টিতে রোগী ছিল। গতকাল সকাল পর্যন্ত খালি ছিল ৪০টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩টি বেড খালি ছিল জাতীয় শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। এ ছাড়া তিনটি হাসপাতালের সব আইসিইউ বেড পরিপূর্ণ ছিল রোগীতে। এর মধ্যে একটি হাসপাতালে করোনা রোগীর আইসিইউ নেই। গতকাল বুধবারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সারা দেশে কভিড ডেডিকেটেড ৫৬৬টি আইসিইউর মধ্যে ২০৯টিতে রোগী ছিল এবং বাকি ৩৫৭টি খালি ছিল। যদিও উল্টো ছবি দেখা যায় বেসরকারি হাসপাতালে। ঢাকার ১০টি বেসরকারি হাসপাতালের ১৬৪টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৬২টিতে রোগী ছিল, বাকি ১০২টি ছিল ফাঁকা।

 

 

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন মিয়া বলেন, ঢাকার তিন-চারটি সরকারি হাসপাতালের দিকেই রোগীদের নজর বেশি থাকে। ফলে ভিড়ও ওই সব হাসপাতালে বেশি হয়। স্বাভাবিকভাবেই চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করা যায় না। আবার যেখানে বেড খালি থাকে সেখানে রোগীরা অনেকেই যেতে চায় না। এখন করোনা রোগী আবার কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। তাদের মধ্যে যাদের অবস্থা জটিল তাদের জন্যই আইসিইউ দরকার হয়।

 

 

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের হাতে এখনো বেশ কিছু আইসিইউ বেড ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে সেগুলো নিতে বলছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোতে হয়তো বেড বাড়ানোর মতো জায়গা নেই কিংবা ওই যন্ত্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তা নিতে খুব একটা আগ্রহী না।

 

 

এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নাজমুল হক বলেন, ‘আরো কিছু আইসিইউ বেড বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। আমাদের এখানে জায়গা আছে। তবে যেসব যন্ত্র আমরা এনে ব্যবহার করতে পারব না সেগুলো এনে কী লাভ হবে।’

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD