ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ধরাশায়ী শেবাচিম কর্তৃপক্ষ Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ধরাশায়ী শেবাচিম কর্তৃপক্ষ

ঠিকাদারী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ধরাশায়ী শেবাচিম কর্তৃপক্ষ




নিজস্ব প্রতিনিধি॥  ক্রয় নীতিমালার মধ্যে থেকেও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে শেবাচিম হাসপাতালে পথ্য সরবরাহের কার্যাদেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া সত্যেও তথা কথিত ঠিকাদারী সংস্থার মারপ্যাচে বাদ পড়ে যাচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। তাকে বাদ দিয়ে যুগের পর যুগ ধরে হাসপাতালের পথ্য বিভাগে আধিপত্য গড়ে তোলা সেভেন স্টার গ্রুপকেই কার্যাদেশ দেয়ার পায়তারা চলছে। এর পেছনে টেন্ডার কমিটি ও কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের মার্কেটিং অফিসারের যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ মেসার্স অনলাইন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের।

হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, প্রতি বছরের ন্যায় চলতি অর্থ বছরে রোগীদের পথ্য (খাদ্য) সামগ্রী সরবরাহের জন্য গত ৭ জুলাই দরপত্র আহ্বান করে শেবাচিম কর্তৃপক্ষ। এর পর গত ৭ আগস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র গ্রহন করা হয়। এবারের দরপত্রেও আলোচিত সেভেন স্টার গ্রুপ এগিয়ে থাকে। ৮টি গ্রুপের প্রতিটিতেই দরপত্র জমা দেয় মেসার্স গ্রিন ফ্যাশন, রশিদ এন্ড সন্স, ববি ইন্টারন্যাশনাল, নির্মান কন্ট্রাকশন, কেবি এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স খান ও সনিয় এন্টারপ্রাইজ এর সমন্বয়ে ঠিকাদারী সংস্থা।

তবে এবারের টেন্ডার আগে থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। এজন্য তিনি ব্যবস্থা করেন ওপেন টেন্ডারের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে টেন্ডার কার্যক্রমে সেভেন স্টার গ্রুপের বাইরে ঢাকার মেসার্স অনলাইন ট্রেডার্স এবং চিত্রা এন্টারপ্রাইজ নামক দুটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করে। এতেই ঘুম ভেঙে যায় ঠিকাদার সিন্ডিকেটের। তারা টেন্ডার কমিটিকে কাজে লাগিয়ে বাছাইতেই বাদ করে দেয় চিত্রা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তবে ম্যানেক করতে ব্যর্থ হয় মেসার্স অনলাইন ট্রেডার্স এর স্থানীয় প্রতিনিধিকে। তাই ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়ে বাজার দরের থোরা অজুহাত দেখিয়ে বাদ দেয়ার পায়তারা চলছে অনলাইন ট্রেডার্সকে।

এ ক্ষেত্রে টেন্ডার কমিটির আহ্বায়ক ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক, একাউন্স অফিসার মো. সুলতান এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বরিশাল কার্যালয়ের মার্কেটিং অফিসার মো. মান্নান হাওলাদারের মাধ্যমে বাতিলের চেষ্টা করা হচ্ছে অনলাইন ট্রেডার্সকে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় প্রতিনিধি রাজু জানান, ‘আমি দুটি গ্রুপে (৩নং গ্রুপে মাছ-মাংস-ডি ও ৪নং গ্রুপে কলা ও সব্জিজাত পন্য) দরপত্র দাখিল করেছি। যার মোট আইটেম ২৪টি। এর অনেক আইটেমেই অন্যদের থেকে আমি কম মূল্য দিয়েছি। বিশেষ করে খামারের বয়লার মুরগীর দর নীতিমালা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বানের এক সপ্তাহ পূর্বে যে দর ছিলো তার সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে দিয়েছি। এজন্য অন্যদের থেকে আমাদের অনলাইন ট্রেডার্স সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমরা যেখানে কেজি প্রতি ৩০৫ টাকা দর দিয়েছি সেখানে অন্যরা দিয়েছে ৩২০ টাকার ওপরে।

রাজু অভিযোগ, তিনি সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া সত্যেও দুর্নীতির মাধ্যমে যুগের পর যুগ হাসপাতালে আধিপত্য করে চলা তথা কথিত ঠিকাদারী সংস্থা টেন্ডার কমিটি এবং মার্কেটিং অফিসারকে ম্যানেজ করে পুনরায় গুছ প্রক্রিয়ায় কার্যাদেশ পাওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। এর ফলে সরকারও তার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। তাছাড়া নতুন কোন ঠিকাদার পথ্য সরবরাহের কাজে ঠুকতে পারলে দীর্ঘ যুগের সিন্ডিকেট ভেঙে যাবার ভয়েই তারা কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেছে বলে অভিযোগ ঠিকাদারের।

অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বরিশাল কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট মার্কেটিং অফিসার আব্দুল মান্নান হাওলাদার বলেন, ‘দরপত্র কিভাবে কাকে দেয়া হচ্ছে সেটা আমার জানা নেই। আমার কাছে শুধুমাত্র বাজার দর জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খুচরা বাজার দর নির্নয় করে দিয়েছে। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজে কার্যাদেশ বিনে এবং কিভাবে দিবে সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের। এখানে আমার কোন হাত নেই। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যিনি সর্বনিম্ন দরদাতা হবেন তিনিই কার্যাদেশ পাবেন।

এদিকে টেন্ডার কমিটির প্রধান শেবাচিম হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘টেন্ডার মূল্যায়ন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আমরা আমাদের কার্যক্রম শেষে করে পরিচালক মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করেছি। কার্যাদেশের বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত দিবেন।

তিনি বলেন, ‘অনলাইন ট্রেডার্স নামক যে প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে সেটা সঠিক নয়। কেননা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে আমাদের যে বাজার দর নির্ধারণ করে দিবেন তার বাইরে যাবার কোন সুযোগ নেই। তবে যিনি সর্বনিম্ন দরদাতা তাকেই যে কার্যাদেশ দিতে হবে তারও কোন নিয়ম নেই। কেননা যে সর্বনিম্ন দরদাতা হবেন সে যে মূল্য দিয়েছে তাতে পণ্য সরবরাহ করতে গিয়ে পরবর্তীতে কোন ঝামেলায় পড়বে বা ঝামেলায় ফেলবে কিনা সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। এসব দিক বিবেচনা করেই ঝুঁকি না নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশের আওতায় রাখা হয়নি। তবে আমরা যাই করেছি সরকারের নিয়মের মধ্যে থেকেই করেছি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD