বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৭৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝূঁকিপূর্ন ভবনে ১১ হাজার ৩১৫ শিশু শিক্ষার্থী ভবন ধ্বসের আতংকের মধ্যে প্রতিদিন পাঠদান করছে। এর মধ্যে ২৩টি বিদ্যালয় ভবন অধিক ঝূঁকিপূর্ন হিসেবে চিহ্নিত হলেও মাত্র ২টি বিদ্যালয় ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস বলছে জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
তবে কাঁঠাল পাড়া ও পশ্চিম নাচনাপাড়া বিদ্যালয় ভবনের পিলার, বিম, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় ঘূর্নিঝড় ফনি পরবর্তী মেরামত ও সংস্কার বরাদ্দ দিয়ে বিদ্যালয় দু’টির পাশে অস্থায়ী টিন শেড শ্রেনী কক্ষ তৈরী করে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৭৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৭৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ঝূঁকিপূর্ন এবং ২৩টি বিদ্যালয়কে অধিক ঝূঁকিপূর্ন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা প্রেরন করা হয়েছে।
শিক্ষা অফিস সূত্রটি আরও জানায়, অধিক ঝূঁকিপূর্ন সরকারী বিদ্যালয় গুলো হল পেয়ারপুর আমেনা খাতুন স: প্রা: বি:, নিশানবাড়িয়া মাছুয়াখালী স: প্রা: বি:, দক্ষিন খাপড়া ভাঙ্গা স: প্রা: বি:, উত্তর নিশানবাড়িয়া স: প্রা: বি:, দক্ষিন কমরপুর স: প্রা: বি:, দাসের হাওলা স: প্রা: বি:, গোলবুনিয়া স: প্রা: বি:, পাটুয়া স: প্রা: বি:, নিশানবাড়িয়া স: প্রা: বি:, পাঁচ জুনিয়া স: প্রা: বি:, লোন্দা স: প্রা: বি:, নিজশিববাড়িয়া স: প্রা: বি:, দ: গোলবুনিয়া স: প্রা: বি:, ধানখালী গাজী সফিউর রহমান স: প্রা: বি:, বাদুরতলি স: প্রা: বি:, পূর্ব টিয়াখালী স: প্রা: বি:, দ: টিয়াখালী স: প্রা: বি:, শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর চাকামইয়া স: প্রা: বি:, নেওয়াপাড়া স: প্রা: বি:, কাঁঠালপাড়া স: প্রা: বি:, মস্তফাপুর স: প্রা: বি:, নিজকাটা আর কে স: প্রা: বি:।
এদিকে চাকামইয়া ইউনিয়নের ১১৮ নং কাঁঠালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রতি দেয়ালে ফাঁটল ও ছাদ ধ্বসের ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয় চলাকালীন সকাল সাড়ে দশটায় বিদ্যালয়ের ছাদ ধ্বসে পড়ে। তবে এতে কেউ আহত না হলেও শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আইয়ুব আলী জানান, ’বিদ্যালয়টি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক এবং প্রায় ১০০ শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। ১৯৯৮-১৯৯৯ অর্থবছরের এই ভবনটি নির্মিত হওয়ার পর এটিতে আর সংস্কার করা হয়নি। এলাকাবাসী এখন তাদের কোমলমতি শিশুদের স্কুলে পড়াশুনা নিয়ে খুবই দু:শ্চিন্তায় আছে।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান জানান, ’অতি শীঘ্রই যেনো এই সমস্যার সমাধান করে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায় সেজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানানো হয়েছে।
অভিভাবক মো. জালাল উদ্দিন জানান, ’নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। যার কারণে এটির এই অবস্থা। আমরা সন্তানদেরকে এই ঝুঁকির মধ্যে স্কুলে পাঠিয়ে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকছি।’
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আবুল বাশার জানান, ’উপজেলার ১৭৩টি স্কুলের মধ্যে ৭৬টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝূঁকিপূর্ন।
এরমধ্যে ২৩টি বিদ্যালয় ভবনকে অধিক ঝূঁকিপূর্ন হিসেবে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে দু’টি বিদ্যালয় ভবনে ফাঁটল ও ছাদ ধ্বসের ঘটনার পর ফনি পরবর্তী মেরামত ও সংস্কার বরাদ্দ দিয়ে বিদ্যালয় দু’টির পাশে অস্থায়ী টিন শেড শ্রেনী কক্ষ তৈরী করে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে।’
Leave a Reply