রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:অপর্ণা সেন, সুমন ঘোষ, সৃজিত মুখোপাধ্যায় তিন বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে তাঁর কাজ করা হয়ে গেছে। পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে ইন্ডাস্ট্রি। কেমন করে সামলাচ্ছেন তিনি? স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অকপটে টা জানিয়েছেন শ্রীনন্দা শংকর। আনন্দবাজার পত্রিকার সৌজন্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।
আপনি কী বিবাহিত?
প্রথমেই এই প্রশ্ন?
শোনা যায় আপনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না…
ওহ মাই গড! আমি বিষয়টা একদম পরিস্কার করতে চাই। আমি মুম্বইতে সুখে সংসার করছি। আমাদের বিয়ের দশ বছর হবে এ বার। আপনি এটাও প্লিজ লিখবেন যে আমরা বেশ কিছু সময় লিভ-ইন করেছি। আর ‘বসু পরিবার’-এর প্রিমিয়ারে আমার স্বামী আসবেন। আমার স্বামী কিছুতেই ওর ছবি দিতে দেয়না। সব কিছু পাবলিক করার দরকার কী? তবে এ বার সকলের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব। আশা করি এই ধারণাটা বদলাবে।
‘বসু পরিবার’-এ অসাধারণ অভিনেতাদের মাঝখানে নিজের জায়গা করে নেওয়া সম্ভব হল কী করে?
আমি সত্যি লাকি। অনেকদিন আগে আমার মা (তনুশ্রীশংকর) এর সঙ্গে সুমন একটা পার্টিতে আমায় ডেকেছিল। সে দিন থেকেই আমাকে কাস্ট করার কথা ও মাথায় রেখেছিল।আমি এ ছবিতে যিশুর বউ। এই ছবিতে কাজ করা মানে বাংলা অভিনয়ের ইতিহাসের সঙ্গে থাকা। চমৎকার টুইস্ট আছে। দর্শকরা সেটা এনজয় করবেন। শুটিং-এর সময়টা একটা পিকনিকের মতো ছিল। অতো বড় বড় সব অভিনেতা, আমি বেশ নার্ভাস ছিলাম। কেউ বুঝতে দেয়নি আমায় আমি নতুন।
মনে হয় না, এই ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু করলেন দেরিতে?
নাহ। আমার সে রকম কোনও প্ল্যান ছিল না। রেসের মধ্যেও আমি নেই। তার ওপর মুম্বইয়ে থাকি। ভেবেছিলাম ভাল অফার পেলে তবেই কাজ করবে। হুট্ করে কিছু একটা করার প্রবণতা জন্মায় এই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকলে। আমি সে দিকে যাব না।
এই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকলে আর কী হয়?
এই ইন্ডাস্ট্রির সুবিধে অসুবিধে দুটোই আছে।
যেমন?
এই যেমন আপনি আমার বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলেন। এই প্রশ্নটা একটু অস্বস্তিকর। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে থাকলে এই প্রশ্ন আসবেই।
বিয়ের পর যে প্রশ্নটা আসে সেটা প্রেম। আপনি প্রেমে পড়েন?
ও তো ছোটবেলার বিষয়। এখন এতো সময় নেই। আর শুনুন সেরকম ছেলেই বা কোথায় প্রেমে পড়ার? আর আমি যে বললাম আমি বিবাহিত। এর পর প্রেমে পড়ে, হাবুডুবু খেয়ে কাউকে বৃথা আশা দেওয়ার কোনও মানে হয় না।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার কাজ নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
সৃজিতের সঙ্গে ‘এক যে ছিল রাজা’-য় কাজ করলাম। সুমনের ‘বসু পরিবার’ আসছে ৫ এপ্রিল। আর তারপর অপর্ণা সেনের ‘ঘরে বাইরে আজ’ আসছে। দেখি তার পর কী হয়।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পছন্দের অভিনেত্রী আপনি…
বিষয়টা আপনি যে ভাবে প্লেস করছেন তেমন নয়। ‘এক যে ছিল রাজা’-য় আমার চরিত্রে দু’জন অভিনেত্রীর কাজ করার কথা ছিল। তাঁরা না বলায় আমি কাজ করি। আমাকে বলা হয়েছিল, ছবিতে নাচের অংশ আছে। আর সৃজিত আমার সুবিধে-অসুবিধে জেনেই আমাকে দিয়ে কাজটা করিয়েছে। পরে ও টুইটও করেছিল। বলেছিল, আমার মধ্যে কোনও ‘ননসেন্স’ বা ‘হ্যাঙ্কিপ্যাঙ্কি’ নেই। মিউচুয়াল রেসপেক্টে কাজটা হয়েছে।
‘বসু পরিবার’-এ যিশু এবং শ্রীনন্দা।
‘বসু পরিবার’-এ যিশু এবং শ্রীনন্দা।
এই যে সুবিধে-অসুবিধের কথা বলছেন অভিনেত্রী হিসেবে শরীর নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ আছে আপনার?
দেখুন আমি নিজেকে কী ভাবে মেলে ধরব, কতটা এক্সপোজ করব সে নিয়ে আমার নিজস্ব চিন্তা নিশ্চয়ই আছে। আমি সেই অনুযায়ী কাজ করব।
বিষয়টা পরিষ্কার হল না। ইন্সটাগ্রামে আপনি যেরকম সাহসী ছবি পোস্ট করেন…
শুনুন শুনুন আমার ওই ছবি যদি সাহসী হয় অন্যদের ছবি তাহলে ‘বিয়ন্ড সাহসী’। দেখুন আগে একটা সময় ছিল যখন আমার নিজেকে পছন্দ হতো না। এখন হয়। তাই এই ভাল লাগা থেকে আমি নিজের ছবি দি। সবাই সোশ্যাল মিডিয়া করে। আমিও করি।যা করি সেটা সোজা বলতে পারি। ন্যাকামি, গায়ে ঢলে পড়া এ সব আমার ধাতে নেই। কাজ পাওয়ার জন্য আমি পাগল নই।
বিশাল পারিবারিক ঐতিহ্য। চারিদিকে এমন সব গুণী মানুষ যাঁদের বিখ্যাত বললেও কম বলা হয়…
বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোটবেলায় কোথাও গেলে দেখতাম বাবা-মায়ের সঙ্গে কেউ কথা না বলে সাদা কাগজ এগিয়ে দিচ্ছে। সই নেবে বলে। খুব অবাক লাগতো। আমি যখন জন্মাই তার পরের দিন সেতার দাদু মানে রবিশঙ্কর সেতার বাজিয়ে আমার জন্মের ঘোষণা করেছিলেন! আমি এই সব দেখেই বড় হয়েছি। আর মানুষ আজও এ ভাবেই আমায় কনেক্ট করে। আমি কাজ না করলে শুধু এই পারিবারিক গরিমা দিয়ে নিজেকে বিশাল কিছু ভেবে বসব এমনটা একেবারেই নয়। ওই পরিবার থেকে আসা মানেই আমি সেলিব্রিটি হয়ে গেলাম এমন নয়। আমার কাজ আমার কথা বলবে।
Leave a Reply