রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন
বরগুনা সংবাদদাতা: বরগুনার আমতলী উপজেলা আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে দুঃস্থ মহিলাদের মাঝে ভিজিডি চাল বিতরণের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুঃস্থ তালিকায় ইউপি চেয়ারম্যানের বড় ভাই সরোয়ার হাওলাদারের স্ত্রী নিলুফার নাম রয়েছে।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হাওলাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়নের ছয় ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেনের কাছে আবেদন দিয়েছেন।ইউএনও অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দুঃস্থ মহিলাদের ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় আনার জন্য গত জানুয়ারি মাসে অনলাইনে আবেদন জমা নেন। ওই আবেদন যাছাই বাছাই শেষে হত দরিদ্র ৩০৫ জনের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। জনপ্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। এ মেয়াদ কাল দুই বছর।
ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান অনলাইনে আবেদন যাচাই বাছাইকালে তাদের না জানিয়ে নিজের ইচ্ছামতো তার ভাই, নিকটাত্মীয়, আর্থিকভাবে সচ্ছল, বিদেশে থাকে, অন্য উপজেলায় বসবাস করে এমন পরিবারের লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দীর্ঘ চার মাস ওই তালিকা চেয়ারম্যান জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি।
গত ২৬ মে ওই তালিকা অনুসারে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের চাল বিতরণ শুরু করেন চেয়ারম্যান। ওই চাল বিতরণকালে ইউপি সদস্যরা অনিয়ম খুঁজে পায়। পরে তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
দুঃস্থ মহিলাদেরর ওই তালিকা ঘেটে দেখাগেছে, ওই তালিকায় অর্ন্তভূক্ত ১নং ওয়ার্ডের জাহানারা বেগম, বিভা রানী, পারভীন বেগম, হনুফা বেগম, পারভীন বেগম, জহরা বেগম, রাশিদা বেগম, ২নং ওয়ার্ডের শিউলি বেগম, মনিরা বেগম, সাহিদা বেগম, নাছিমা বেগম, খাদিজা বেগম, ৩নং ওয়ার্ডের সালমা বেগম, মমতাজ বেগম, জোসনা বেগম, ছাহেরা বেগম, ঝর্না বিবি, জাহানারা, রিমা আক্তার, তাসলিমা বেগম, ৪নং ওয়ার্ডের লাকি বেগম, শিরিন বেগম, আসমা বেগম, রাহিমা বেগম,রুজিনা বেগম, ৫ নং ওয়ার্ডের মাহামুদা বেগম, রেশমা আকতার টিকলী, নুরভানু, তুলি, ৭নং ওয়ার্ডের ঝুমুর রানী, থালেদা বেগম, নিলফা, লাইজু বেগম, ৮নং ওয়ার্ডের মাকসুদা বেগম, কাজল রানী, আসমা, লুৎফুন্নাহার ও সালমা বেগম আর্থিকভাবে সচ্ছল।
এর মধ্যে নুর ভানু মহিলা ইউপি সদস্য লাইজুর ভাইয়ের স্ত্রী। নিলুফা বেগম চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বড় ভাই সরোয়ার হাওলাদারের স্ত্রী। লাইজু বেগম পার্শ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলায় বসবাস করেন। জাহানারা বেগমের স্বামী মোতালেব আকন, শিরিন বেগমের স্বামী কামাল হোসেন বিদেশে থাকেন। পারভীন বেগম ইউপি সদস্য কদম আলীর ভাইয়ের স্ত্রী।
৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নাশির উদ্দিন মোল্লা বলেন, চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছামতো তার ভাই, আত্মীয় স্বজন, বিদেশে থাকেন, অন্য উপজেলায় বসবাস করেন এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল এমন ব্যাক্তিদের সুবিধা দেয়ার জন্য আমাদের না জানিয়ে তালিকা করেছেন।
তার অনিয়েমের অভিযোগ এনে ছয় ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছি। আমরা তদন্তপূর্বক চেয়ারম্যান অনৈতিকভাবে যাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন তাদের নাম বাদ দিয়ে হতদরিদ্রদের নাম তালিকাভুক্ত করে চাল বিতরণের দাবী জানাই।৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন মাষ্টার বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে না জানিয়ে নাম দিয়েছেন।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ইউপি সদস্যদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, যতো বরাদ্দ আসে তার অর্ধেক ইউপি সদস্যরা নিয়ে নেন। এতে তার হাত থাকে না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply