অযত্ন-অবহেলায় ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে লাকুটিয়া জমিদার বাড়ির Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




অযত্ন-অবহেলায় ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে লাকুটিয়া জমিদার বাড়ির

অযত্ন-অবহেলায় ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে লাকুটিয়া জমিদার বাড়ির




রিয়াজ মাহামুদ আজিম।।  জমিদারি বিলুপ্ত হলেও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বরিশালের লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। জনশ্রুতি আছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে এ বাড়ি নির্মাণ করা হয়। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এটি সংরক্ষণ বা পরিচর্যার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বরং বাড়ির সীমানাভুক্ত জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি ভবন। ভেঙে ফেলা হয়েছে বাড়ির মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া বাড়িটিতে দর্শনার্থীদের যথেচ্ছ আনাগোনার কারণে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন মূল্যবান নিদর্শন। স্থানীয়দের দাবি, সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলে জমিদারির পাশাপাশি একসময়ের সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্র এ বাড়িটি রক্ষা পাবে।

জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জে লাকুটিয়া জমিদার বাড়ির অবস্থান। ১৭০০ সালের দিকে লাকুটিয়ার জমিদার রাজা রাজচন্দ্র রায় প্রায় এক একর জমি ওপর এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়ির বেশির ভাগ স্থাপনা আটচালা দেউল রীতিতে তৈরি। বাড়ির সামনেই রয়েছে কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন মঠ। সদর দরজার দক্ষিণ রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট ও বিখ্যাত বউরানীর দীঘি। মূল ভবনটি দোতলা এবং সামনে রয়েছে একটি মাঠ। উনিশ শতকেও এ বাড়ি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে স্বাধীনতার আগে বা পরে এ বাড়িটি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

অযত্ন-অবহেলায় এটি এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। চারদিকের দেয়ালগুলো খসে পড়তে শুরু করেছে। বাইরের সিঁড়ি ভেঙে পড়েছে অনেক আগেই। বাড়ির পেছন অংশেই (পশ্চিম পাশে) ছিল সুবিশাল গোপন কামরা। ওই কামরা এখন মাটির নিচেই বিলীন হয়ে গেছে। তবে উত্তর পাশ দিয়ে এখনো ওই কামরার একটি জানালার আকৃতি দেখা যায়। এছাড়া বাড়ির পেছনের অংশের শিখররীতির কয়েকটি মন্দির এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িটির সীমানায় জমিতে তিনটি ভবন নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)।

স্থানীয়রা জানান, লাকুটিয়া জমিদার পরিবারের সদস্যরা প্রজাকল্যাণ এবং বিবিধ জনহিতকর কাজের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল শহরে স্থাপিত হয়েছিল ‘রাজচন্দ্র কলেজ’। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ওই কলেজে থেকেই তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। বরিশাল শহর থেকে লাকুটিয়া হয়ে বাবুগঞ্জের সড়কটি নির্মাণ হয়েছিল লাকুটিয়ার জমিদারের সময়। স্বাধীনতার আগে ওই এলাকায় ‘পুষ্পরানী বিদ্যালয়’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জমিদাররা। জমিদারি বিলুপ্ত হওয়ার পর তাদের উত্তরসূরিও এলাকা ছেড়ে চলে যান।

তারা জানান, ৩০০ বছরের পুরনো এ বাড়িটি দেখতে প্রায়ই দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। তারা বাড়িটি ঘুরে দেখার সময় গুরুত্ব না জেনেই এর ক্ষতিসাধন করেন। তাই সরকারিভাবে বাড়িটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

এ বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়ার রহমান বলেন, আমরা এ জমিদার বাড়িটি সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে আবেদন জানিয়েছি। তারা তালিকাভুক্ত করলে এটি সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে। তবে শুধু এ জমিদার বাড়িই নয়, বরিশালের এ রকম আরো কয়েকটি স্থাপনা নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেবে।

বাড়ির সীমানায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে বরিশাল বিএডিসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক শেখ ইকবাল আহমেদ বলেন, এ জমি বিএডিসি ১৯৭৯ সালে স্থানীয়দের কাছ থেকে কিনে নেয়। পরে মূল বাড়ির অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি না করে ওই জমিতে তিনটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি ভবন গুদাম ও একটি বিএডিসির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এতে জমিদার বাড়ির কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD