অনুমোদনহীন ইটভাটায় উজাড় হচ্ছে বরিশালের বনাঞ্চল Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




অনুমোদনহীন ইটভাটায় উজাড় হচ্ছে বরিশালের বনাঞ্চল

অনুমোদনহীন ইটভাটায় উজাড় হচ্ছে বরিশালের বনাঞ্চল




অনলাইন ডেস্ক: পুরো বরিশাল বিভাগে অনুমোদনহীন ইটভাটা রয়েছে প্রায় ২০০টি। নিয়মের তোয়াক্কা না করে এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে বিপুল পরিমাণ কাঠ। আর এ চাহিদা পূরণে বরিশালে দেদার উজাড় হচ্ছে সামাজিক বনসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সবুজ বেষ্টনীর গাছ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বিভাগে তালিকাভুক্ত ইটভাটার সংখ্যা ৩১০টি। এর মধ্যে অনুমোদন রয়েছে ১৮৯টির। ১২১টি ইটভাটার কোনো অনুমোদন নেই। এছাড়া তালিকার বাইরে থাকা ইটভাটার সংখ্যা কমপক্ষে ৭০টি। অনুমোদিত ভাটাগুলোয় জিগজ্যাগ পদ্ধতি অনুসরণের পাশাপাশি কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। তালিকার বাইরে ভোলায় অত্যাধুনিক হফম্যান কিলন পদ্ধতির দুটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরে ঝালকাঠির নলছিটি ও পটুয়াখালীর দুমকীতে দুটি ইটভাটা পরিবেশ ছাড়পত্র নিলেও এখন পর্যন্ত ইট তৈরির কাজ শুরু করেনি।

তবে অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলোয় সরকারের নিয়ম মানা হচ্ছে না। এসব ভাটায় ইট তৈরিতে প্রচুর পরিমাণে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কিংবা তালিকার বাইরের অনুমোদনহীন সব ইটভাটারই একই অবস্থা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, একে তো ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে, তার ওপর এ বিভাগের অধিকাংশ মানুষ রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করেন! শহরের কিছু মানুষ সিলিন্ডারভর্তি এলপি (লিকুইফায়েড পেট্রোলিয়াম) গ্যাস ব্যবহার করলেও গ্রামাঞ্চলে এ কাঠনির্ভরতা একটুও কমেনি। তাছাড়া খাবার হোটেল, বেকারি ও কমিউনিটি সেন্টারেও জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার হয়। সম্প্রতি দক্ষিণাঞ্চলে এ জ্বালানি কাঠের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। এ সুযোগে একশ্রেণীর মানুষ উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী উজাড় করে ফেলছে।

বরিশাল নগরীর চানমারী, হাটখোলা, পলাশপুর, কাউনিয়া বিসিক এলাকার কাঠ ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক মাসে জ্বালানি কাঠের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। নগরীর পলাশপুরসংলগ্ন কাঠ ব্যবসায়ী খোকন বেপারী জানান, এখন তারা অগ্রিম টাকা দিয়েও কাঠ কিনতে পারছেন না। উপকূল কিংবা নগরীর আশপাশের এলাকা থেকে আগে দৈনিক হাজার হাজার মণ কাঠ আসত। এখন আর সে অবস্থা নেই। ফলে কাঠের দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে রেইনট্রি গাছের প্রতি মণ কাঠ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়; যা কয়েক দিন আগেও ছিল ২০০ টাকা। একইভাবে চাম্বল, মেহগনিসহ অন্য কাঠের দামও বেড়েছে তিন-চার গুণ।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিদিন এ বিভাগে যে পরিমাণে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে, সে পরিমাণে গাছ রোপণ করা হচ্ছে না। তাছাড়া সম্প্রতি নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার নদীতীরবর্তী অসংখ্য গাছ। ফলে সংকট দিন দিন আরো প্রকট আকার ধারণ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সদরসহ বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, বানারীপাড়া, হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দীগঞ্জে ভাটার মালিকরা কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করছেন। পোড়ানো হচ্ছে মূল্যবান বনজ ও ফলদ গাছ। ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিকটবর্তী ফসলি জমি ও গাছ। এসব ইটভাটায় মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করলেও খুব এটা লাভ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশালের পরিচালক আব্দুল হালিম বলেন, কোনো ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না। কাঠ পোড়ানোর জন্য এ বছর বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর ৫০টি ভাটায় অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। একই সঙ্গে ৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর খবর পেলেই তাত্ক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD