বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলে কাদা ছোড়াছুড়ি Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলে কাদা ছোড়াছুড়ি

বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলে কাদা ছোড়াছুড়ি




শাকিব বিপ্লব:উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বাবুগঞ্জের আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সংঘাতের বদলে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি ও চরিত্রহরণ করে কেচ্চা-কাহিনী তৈরি করা শুরু করেছে। গল্প-কাহিনীগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে মিডিয়া অঙ্গনে। এক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ থেকে এই কৌশল দ্বারা নিজ দলীয় প্রার্থীদের হেয় করাই হচ্ছে উদ্দেশ্য। বিশেষ করে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী ইমদাদুল হক দুলালের পরাজয় তরান্বিত করতে এই পন্থা অবলম্বন করার নেপথ্যে মনোনয়ন বঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপনের ভূমিকা রয়েছে বলে দলের মূল স্রোতধারার নেতারা সন্দেহের তীর ছুড়েছে তার দিকে।

 

একাধীক সূত্রের অভিন্ন দাবী, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজাম্মেল হোসেনের পক্ষাবলম্বন করে স্বপন তার অনুসারিদেরকে নির্বাচনী মাঠে কাজ করার গাইডলাইন বাতলে দিয়েছে। সেই সাথে দুলালের চরিত্রহরণ করতে নারী ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত) ফারজানা বিনতে ওহাবকে সংশ্লিষ্ট করে তার ব্যক্তিজীবন নিয়ে নানা গল্প-কাহিনী তৈরি করে প্রচার শুরু করেছে। ইতিমধ্যে মিডিয়া অঙ্গনে ছড়িয়ে দিয়ে তা প্রকাশে সংবাদকর্মীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় বর্তমান চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন স্বপন বহুমূখি চেষ্টা করেও দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হন। পাশাপাশি বর্তমান নারী ভাইস-চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান তাপসীকে-ও একই পরিণতি বরণ করতে হয়। প্রার্থীতা ও মনোনয়ন নিয়ে শুরু থেকেই বাবুগঞ্জ আ.লীগের রাজনীতিতে আভ্যন্তরীন কোন্দল দেখা দেয়, দুলাল মনোনয়ন পাওয়ায় তা এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে।

 

 

কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ ভূমিকা না রেখে কৌশলী পথে অগ্রসর হয়ে ক্ষোভের জ্বালা নিবারনে প্রতিপক্ষ নিজ দলীয় প্রার্থীকে কাবু অথবা পরাজয় নিশ্চিত করতে জোড়তর চেস্টা চলছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল ব্যক্তিগতভাবে সাংগঠনিক হলেও নির্বাচনী রাজনীতিতে অতটা পরিপক্ক নয়। ফলে, আওয়ামী লীগের জেলা নীতি-নির্ধারকরা তাদের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে দুলালের পাশাপাশি নারী ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা বিনতে ওহাবকে মনোনয়ন দিয়ে শক্তিশালী একটি অবস্থান তৈরির পরিকল্পনা নেয়। ফারজানার পারিবারিক প্রভাব ও ব্যক্তি ইমেজ থাকায় দুলালের নির্বাচনী বৈতরণী পার পাওয়া সহজতর ভাবা হচ্ছে। কিন্তু দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বি ইসরাত জাহান তাপসী নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ফলে ফারজানা বিনতে ওহাব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলালের ডামি হিসেবে এই নারী নেত্রী ইতিমধ্যে মাঠ কাপিয়ে তুলেছে।

 

ভাবা হয়েছিলো দুলালের সাথে ওয়ার্কর্স পার্টির প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠবে। ফারজানা বিনতে ওহাবের নির্বাচনী ক্যারিশমায় সেই পরিকল্পনাও এখন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। একদিকে মনোনয়ন বঞ্চিত অন্যদিকে ওয়ার্কর্স পার্টির প্রার্থীকে পরোক্ষভাবে সহায়তা দিয়ে পেরে ওঠতে না পারার বিষয়টি সহজভাবে নিতে পারছেন না বর্তমান চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন স্বপন। কেন্দ্র থেকে প্রার্থী চূড়ান্তের আগেই তিনি এক প্রকার বিদ্রোহ প্রকাশ করে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু জেলা নেতৃবৃন্দের আদেশে তিনি নির্বাচন থেকে সঁড়ে আসেন।

 

একটি সূত্র নিশ্চিত করে, স্বপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় ঘরে তুলতে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টির সাথে একটি গোপন সমঝোতায় উপণীত হয়েছিলো। চুক্তি অনুসারে উল্লেখিত দুটি দল থেকে কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে দুলালের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্বপনের লড়াইয়ের পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু এ খবর ফাঁস হয়ে যায়। অপর একটি সূত্রের দাবী, জেলা আওয়ামী লীগের কর্ণধর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বিষয়টি আঁচ করতে পেরে স্বপন ও তাপসীকে সতর্ক করে নির্বাচনী মাঠে নিজেদের অবস্থান বিবেচনার তাগিদ দেয়ার পরেই তারা উভয়ে প্রার্থীতা থেকে সড়ে দাঁড়ান। কিন্তু স্বপন বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করেন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ তাকে হুমকী স্বরূপ নানা কথা বলায় রাজনৈতিক অস্তিত্বের প্রশ্নে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে সাহস নেয়নি। একইপথ অনুসরন করেন স্বপনের অনুগত বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান তাপসী।

 

 

কৌশলী স্বপন নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর আদেশ মান্য করেছে তা দেখাতে মনোনয়ন দাখিল না করে এখন তার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক থাকতে চাইছে এবং দেখা গেছে। অন্যদিকে গোপনে দুলালের পরাজয় তরান্বিত করতে অপরাপর দলগুলোর সাথে গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুসারে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেনকে কিভাবে মাঠে টিকিয়ে রাখা যায় সেই কৌশল প্রয়োগে পরিকল্পনার ছকে এগুচ্ছে। জনপ্রিয়তার দিক থেকে দুলালের সাথে অন্য কোনো প্রার্থী সমকক্ষ না হলেও ভোটের অংকে ওয়ার্কর্স পার্টির স্থানীয়ভাবে শক্ত ভিত থাকায় নির্বাচনী লড়াই জোরালো হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা।

 

পক্ষান্তরে ফারজানা বিনতে ওহাবের ভোটব্যাংক এবং জনপ্রিয়তা দুলালের দুর্বলতাকে কাটিয়ে তুলতে যাচ্ছে, এমন আশংকা থেকে এই নারী নেত্রীকে আক্রান্ত করার টার্গেট নেয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষের ধারণা অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত ফারজানাকে বিপর্যস্ত করে রাখতে একমাত্র পথই হচ্ছে চরিত্র হরন করে চুপসে দেয়া। তারই আলোকে ফারজানার পারিবারিক ও ব্যক্তি জীবন নিয়ে নানা অপপ্রচার বিভিন্ন মহলে পৌঁছে দিতে মিডিয়াকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। সেইসাথে দুলালকেও সংশ্লিষ্ট করে তৈরী করা হচ্ছে নানা গল্প-কাহিনী। ইতোমধ্যে তাদের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন ব্যক্তিকে দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বাবুগঞ্জের সূত্রগুলো জানায়, ওয়ার্কার্স পার্টি ও আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকলেও মূলত তাদের পক্ষে স্বপনই ডামি প্রার্থী হিসেবে অদৃশ্যে থেকে সকল কলকাঠি নাড়ছে।

 

গত মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষদিনে বাবুগঞ্জে যে সংঘাত তৈরি হয়েছিলো তার দায়ভার দুলালের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টার নেপথ্যেও ছিলো স্বপনের ভূমিকা। কিন্তু তার এই রাজনীতি সহজেই প্রকাশ পেয়ে যায়। অনেকের অভিমত- চতুর স্বপন কৌশলী পথে হাঁটছে। অন্তত ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করে নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে জবাব দিতেই এক প্রকার জেদ কাজ করছে। অন্যদিকে ফারজানা বিনতে ওহাব বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকায় তার ইজ্জতে টান ধরিয়ে ব্যক্তি ইমেজ ক্ষুন্ন করার মধ্যদিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায়।

 

দুলাল ও ফারজানা অভিন্ন অভিযোগ করে জানান, স্বপনকে সামাল দিতে না পারলে বাবুগঞ্জের নির্বাচনী পরিস্থিতি উত্তপ্ত ও সংঘাতের দিকে ধাবিত হতে পারে। যুক্তি স্বরূপ জানান, বর্তমান এই চেয়ারম্যান সাবেক সর্বহারা পার্টির সদস্যদের সংগঠিত করে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজে নামিয়ে দিতে প্রস্তুতিমূলক নানা কার্যক্রমের খবর তাদের কাছে পৌছেছে। ফলে বাবুগঞ্জের নির্বাচনী পরিস্থিতি ভালো নয়। এ অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে খালিদ হোসেন স্বপনের সাথে কয়েক দফা সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।

 

 

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD