শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
বানারীপাড়া প্রতিনিধি ॥ বানারীপাড়ায় সন্ধ্যানদীর খেয়াঘাটের অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে জন প্রতি তিন টাকা করে ও প্রতিটি মটরসাইকেল ২০ টাকা করে টোল আদায় করা হলেও চলতি বছরে জনপ্রতি এক টাকা বাড়িয়ে চার টাকা ও প্রতিটি মটরসাইকেল ৩০ টাকা হারে ধার্য করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বানারীপাড়া উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫ টি ইউনিয়নই সন্ধ্যানদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত। দূর্গম ওই ৫ ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষের বাস। প্রতিদিন নদী পাড় হয়ে তাদের পূর্ব পাড়ের বন্দর বাজার,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,স্কুল-কলেজ ও অফিস আদালতে আসা যাওয়া করতে হয়।
৯ মে এলাকাবাসীর স্বার্থে ওই সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও দলীয় নেতা-কর্মীরা নদীর পাড়ে খেয়াঘাটে এসে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক ঘটনাস্থলে গিয়ে খেয়াঘাটের মূল ইজারাদার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে পূর্বের মতো জনপ্রতি তিন টাকা হারে ও প্রতিটি মোটরসাইকেল ২০ টাকা হারে টোল নেওয়ার জন্য বলে তাদের ক্ষোভ প্রশমণ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা তালুকদার,আওয়ামী লীগ নেতা ডা. খোরশেদ আলম সেলিম,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু, ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, মাইনুল হাসান মোহাম্মদ ও আ.মন্নান মৃধা, ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন প্রমুখ।
ওই সময় ইজারাদার বিষয়টি মেনে নিলেও পরবর্তীতে টোল আদায়ে বাধা প্রদানের অভিযোগ এনে জেলা পরিষদ বরাবরে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করায় এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক অভিযোগ করেন এর আগে একাধিকবার বাইশারী সৈয়দ বজলুল হক কলেজের নামে ওই কলেজের তৎকালীন সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানা নামমাত্র মূল্যে সন্ধ্যানদীর খেয়াঘাটের ইজারা নিয়ে কলেজ ফান্ডে কানা কড়িও দেননি বরং লাভের সমুদয় টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের গভর্নিং বডির নবনির্বাচিত সভাপতি হিসেবে তিনি এ বিষয়টি তদন্ত করবেন বলেও জানান।
কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মিজানুল ইসলাম মুকুল জানান, কলেজের নামে খেয়াঘাটের ইজারা নেওয়া হলেও কলেজ ফান্ডে এক টাকাও দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, নূন্যতম ৫ লাখ ও সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকায় কলেজের নামে খেয়াঘাটের ইজারা নেওয়া হয়েছিলো বলে জানা গেছে।
অথচ এ বছর ১৪২৬ (বাংলা সন অনুযায়ী) একই খেয়াঘাট ব্যক্তির নামে ৫৩ লক্ষাধিক টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে। গত বছর ছিলো তা ২৬ লক্ষাধিক টাকা। ফলে শুধু কলেজের নাম ব্যবহার করায় ইতিপূর্বে কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব কম পেয়েছে সরকার। এদিকে ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলাদ হোসেন সানার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply