মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
নাজিরপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের নাজিরপুরে অষ্টম শ্রেণির এক মাদরাসা ছাত্রী ও দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।
প্রায় দু’মাস আগে ওই মাদরাসা ছাত্রীকে উপজেলার দেউলবাড়ী ইউপির তুরুকখালী বাজার এলাকা থেকে তুলে নিয়ে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা এলাকায় ধর্ষকের ভগ্নিপতির বাড়িতে নিয়ে বিয়ের নামে প্রতারণা করে সেখানে আটক রেখে ধর্ষণ করে। পরে ওই ছাত্রীকে সেখানে ফেলে পালিয়ে যায়।
গত সোমবার ওই মাদরাসা ছাত্রী স্ত্রীর দাবী নিয়ে ধর্ষকের বাড়িতে গেলে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ধর্ষকের পরিবার।
স্থানীয়রা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। বর্তমানে ওই মাদরাসা ছাত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে নাজিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষক আবুল হাসান উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউপির মুনিরাবাদ গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীর ছেলে।
ওই মাদরাসা ছাত্রীর বাবা জানান, প্রায় দু’মাস আগে তার মেয়ে মামা বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে তুরুকখালী বাজার এলাকা থেকে আবুল হাসান ও তার ভগ্নিপতি মেহেদী মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে ওইদিন রাতে মেহেদী তাকে মোবাইল করে উজিরপুর উপজেলার হারতা গ্রামে তার বাড়িতে যেতে বলেন এবং তার মেয়ে সেখানে আছে বলে জানায়।
তিনি সেখানে গেলে তার মেয়েকে আবুল হাসানের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার কথা বলেন। তখন তিনি তার মেয়ে নাবালিকা বলে বিয়ে দিতে অস্বীকার করলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর রেখে মেয়েকে সেখানে রেখে দেয়। এ সময় তারা এ বিষয়ে কোনো বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেয়।
আবুল হাসানের বাবা তার দুঃসর্ম্পকের আত্মীয় হওয়ায় তিনি তখন কোনো মামলা করেননি। সেখানে আবুল হাসান তার মেয়েকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে। পরে আবুল হাসান তার মেয়েকে সেখানে ফেলে পলিয়ে যাওয়ায় গত সোমবার তার মেয়ে স্ত্রীর দাবিতে আবুল হাসানের বাড়িতে গেলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে তার মেয়েকে মারধর করে সেখান থেকে বের করে দেয়।
এছাড়া এ ঘটনার আগে ধর্ষক আবুল হাসান একই গ্রামের দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ের নামে প্রতারণা করে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে ধর্ষক আবুল হাসানের বাবা আইয়ুব আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি তার ছেলে ওই দুই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন বলে স্বীকার করেন। তবে তিনি কোনো বিয়েতেই উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান। তাছাড়া ওই মাদরাসা ছাত্রীকে মারধর করা হয়নি। তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে জানান।
এ বিষয়ে নাজিরপুর থানার ওসি মো. মুনিরুল ইসলাম মুনির জানান, ওই মাদরাসা ছাত্রীর মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply