রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলার বাটনা গ্রাম থেকে ছাগল চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় কাগাশুড়া বাজারে জনতার হাতে কথিত সাংবাদিকসহ ৩জনকে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো দৈনিক বরিশাল ক্রাইম পত্রিকার ফটো সাংবাদিক পরিচয়দানকারী মজিবর রহমান’র ছেলে নাইম (১৮), সাহেব আলী হাওলাদারের ছেলে সাকিব হোসেন (১৬) এবং রুস্তম আলী হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদার (১৫)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি স্ব-রোড দপ্তরখানা বলে জানা গেছে। স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দৈনিক ক্রাইম নিউজের ফটো সাংবাদিক পরিচয়দানকারী নাইম ও তার দুই সহযোগি সাকিব হোসেন এবং সুজন হাওলাদার সদর উপজেলার বাটনা গ্রাম থেকে ছাগল চুরি মটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল। কাগাশুরা নামক বাজারে এলে ছাগল মালিক ও স্থানীয়দের চোখে পড়ে বিষয়টি। এ সময় তাদেরকে স্থানীয় বাজারের লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং গণধোলাই দেয়। তবে কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায় সাকিব। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সময় অনলাইন টিভি চ্যানেলের পরিচালক এইচএম রানাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় সাকিব। এ সময় স্থানীয়রা চোর সাকিবকে চিনতে পেরে তাকেও গণধোলাই দেয় এবং রোষানলে পড়ে এইচএম রানা। খবর পেয়ে কাউনিয়া থানার এসআই জসিম, এসআই হাবিব, এএসআই নাসির, এএসআই জিয়া, এএসআই মাহাবুব, এএসআই ফিরোজ ও এএসআই হালিম ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, গত বছর ১৩ আগস্ট দৈনিক ক্রাইম নিউজের প্রকাশক ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে কথিত সাংবাদিক শাহ আলম নলছিটি থানা মোল্লারহাট জেড.এ ভূট্টো বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে উৎকোচ দাবি করে গণধোলাই খেয়েছিলেন। সূত্র জানায়, টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক শাহিন ও সহকারি শিক্ষক রফিকুলের কাছে উৎকোচ দাবি করে। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম কথিত সাংবাদিক শাহ আলমের হাতে দুই হাজার টাকা দিলে সংবাদ প্রকাশিত হবে না জানিয়ে বিদ্যালয় থেকে চলে আসেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শাহ আলম ওই বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নেই বলে অপপ্রচার চালান। এ ঘটনার পর শাহ আলম দপদপিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন ডকইয়ার্ডের সামনে আসলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিন তার কাছে ফেসবুকে অপপ্রচার করার বিষয়টি জানতে চায়। এতে চটে যায় কথিত সাংবাদিক শাহ আলম শাহ। উত্তেজিত হয়ে শিক্ষক শাহিনের সাথে অসদাচারণ করেন তিনি। শিক্ষকের সাথে এমন আচারণে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় জনতা শাহ আলমকে গণধোলাই দেয়। গণধোলাই খেয়ে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় কথিত এই সাংবাদিক। উল্লেখ্য, এই কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইটভাটা, বেকারিসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এসব অপকর্মে তিনি বাংলাদেশ সময় নামে একটি টিভি চ্যানেলের বুম ও একটি ভিডিও ক্যামেরা ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে আতংকিত করেন। এছাড়া টাকার বিনিময় বিভিন্ন এলাকায় এ ধরণের চোর-বাটপারকে সাংবাদিকের পরিচয়পত্র প্রদান করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
Leave a Reply