শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
কুয়াকাটা প্রতিনিধি॥ ঈদ পরবর্তী কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। করোনার ভয়কে পেছনে ফেলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সমাগমে এখন মুখর সাগরকন্যা।
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ঈদের চতুর্থ দিন মঙ্গলবার হাজার হাজার পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়ে মিলনমেলায় রূপ নেয় কুয়াকাটা। ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সৈকতে হৈ-হুল্লোড়, গোসল, দৌড়ঝাঁপ ও আনন্দে মেতেছেন পর্যটকরা।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত ঘুরে দেখা যায়, নেচে-গেয়ে দীর্ঘদিনের ঘরবন্দী মানুষ মিলিত হয়েছে প্রাণের স্পন্দনে। সব কিছুই মিলিয়ে দীর্ঘদিনের সুনসান নীরব পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা পুনরায় ফিরে পেয়েছে পূর্ণতা। সৈকতের দর্শনীয় স্থানগুলো বাইকে ঘুরে দেখছেন ভ্রমণপিপাসুরা।
ওয়াটার বাইক নিয়ে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়ানোর দৃশ্য রোমাঞ্চকর। পর্যটকদের এসব দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। সৈকতে নতুন যুক্ত হওয়া ঘোড়ার গাড়িতে শিশু ও বয়স্করা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে সমুদ্র ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকন করছেন। কেউ কেউ চার চাকার বিচ বাইক নিয়ে জলকেলিতে মিলিত হয়েছেন। সমুদ্রের সান্নিধ্যে এসে বুকভরা নিশ্বাস নিতে পেরে খুশি পর্যটকরা।
পাশাপাশি সুন্দরবনের পূর্বাংশ টেংরাগিরি বনাঞ্চল, লেম্বুর বন, গঙ্গামতির লেক, জাতীয় উদ্যান, লাল কাঁকড়ার চর, বৌদ্ধবিহার ও রাখাইন পল্লীতে অসংখ্য পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে ৩০-৪০টি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে এসেছেন।
আবাসিক হোটেল-মোটেলে রয়েছে চাহিদামাফিক বুকিং। বেচাকেনা বেড়েছে খাবার হোটেল, শামুক ও ঝিনুকের দোকান, শুঁটকি মার্কেট, বার্মিজ পণ্যসহ পর্যটকনির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এই প্রথম পর্যটকদের পদচারণায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে কুয়াকাটায় এমনটি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সমুদ্র লাগোয়া আবাসিক হোটেল সৈকতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমান শেখ বলেন, ঈদের দিন থেকে পর্যটকরা কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেছেন। রোববার থেকে ধারাবাহিকভাবে বুধবার পর্যন্ত আমার হোটেলের শতভাগ রুমই বুকিং আছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে অধিকাংশ পর্যটক এসি রুম ভাড়া নিয়েছেন।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা গেস্ট হাউসের স্বত্বাধিকারী এমএ মোতালেব শরিফ বলেন, পর্যটকদের কুয়াকাটায় টানতে ৩০-৪০ শতাংশ ছাড়ে রুম বুকিং দেয়া হয়। এমন ইতিবাচক সিদ্ধান্তে প্রত্যেক আবাসিক হোটেলে আশানুরূপ রুম বুকিং হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে করোনাকালীন লোকসান পুষিয়ে অচিরেই লাভের মুখ দেখবেন ব্যবসায়ীরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ সিনিয়র এএসপি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের সেবা অব্যাহত রাখতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তাদের নিরাপত্তায় দর্শনীয় স্থানগুলোতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। ঈদ-পরবর্তী কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
Leave a Reply