শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখলীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন ট্যুরিজম পার্ক এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বুধবার (৬ নভেম্বর) মহিপুর ইউনিয়নে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করতে গেলে দখলদারেরা বাধা প্রদান ও সহিংসতার অভিযোগ তুলেছেন। এক পর্যায়ে দখলদাররা প্রশাসনের উপর হামলা চালায় এবং ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভারকে মারধর করে। এ ঘটনায় মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে মহিপুর থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন ট্যুরিজম পার্কে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক পরিবার বসবাস করছিল। বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেতৃত্বে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয়রা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং প্রশাসনের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে দখলদাররা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজ বন্ধ করার জন্য ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভারকে মারধর করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনার পর বুধবার রাতে উপজেলা প্রশাসন সরকারি কাজে বাধা, সম্পদ নষ্ট, এবং হামলার অভিযোগে মহিপুর থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও অজ্ঞাত শতাধিক দখলদারকে আসামী করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে স্থানীয় শতাধিক নারী ও পুরুষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিছিল করেছে, তারা দাবি করেছেন, তাদের পুনর্বাসন করা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা হোক।
মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় দখলদাররা একত্রিত হয়ে প্রশাসনের উপর হামলা চালায় এবং ভেকু মেশিন ভাঙচুর করে। এতে ভেকু চালকসহ তিনজন আহত হন। তিনি জানান, এই ঘটনায় তিনি সরকারি কাজে বাধা, সম্পদ নষ্ট ও হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, ২০২৩ সালে একই এলাকায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা আবার ফিরে এসে সরকারি জমি দখল করেছে। তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, স্থানীয় দখলদাররা দাবি করছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমিতে বসবাস করে আসছে এবং পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ অভিযান চালানো ঠিক হয়নি। তাদের মতে, এই জমি দীর্ঘদিন ধরে পতিত ছিল এবং তারা সেখানে কোনো অন্যায় করেননি। তারা জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের পুনর্বাসন এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply