ঈদকে সামনে রেখে আগৈলঝাড়ায় ছড়িয়ে পড়ছে মাদক, বাড়ছে উদ্বেগ ! Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




ঈদকে সামনে রেখে আগৈলঝাড়ায় ছড়িয়ে পড়ছে মাদক, বাড়ছে উদ্বেগ !

ঈদকে সামনে রেখে আগৈলঝাড়ায় ছড়িয়ে পড়ছে মাদক, বাড়ছে উদ্বেগ !




আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি: ॥  নতুন প্রজন্ম এখন ইয়াবায় উম্মাদ! ইয়াবা এমন একটি মাদক যা মানুষকে শুধু মৃত্যুর দিকেই ঠেলে দেয়না, মৃত্যুর আগে ইয়াবাসেবীকে পাগলে পরিণত করে। আর এখন সেই ভয়াবহ মরণ নেশা ইয়াবা এখন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবসমাজ মাদকের মরণ নেশায় বুদ হয়ে এখন মাদকের বশ্যতা স্বীকার করেছে।

পুলিশী অভিযান মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের এতটুকু দমন করতে না পারায় অভিভাবকরা তাদের ছেলে সন্তানদের নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছেন। তারা মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যাপক অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করেছেন। ঈদকে সামনে রেখে অবাধে চলছে মাদকের বিক্রয় ও ব্যবহার। ইতিমধ্যে পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানে ইয়াবা ব্যবসায়ী চুনোপুটিরা ধরাপরলেও রাঘব বোয়ালরা পর্দার আরালে থেকেই ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে যাচ্ছেন।

ইয়াবার ব্যবহার শুরু হয় মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈনিকদের ক্লান্তি দূর করার জন্য। বাংলাদেশে এর ব্যবহার কবে নাগাদ শুরু হয়ে ছিল তার সঠিক ভাবে জানা নেই। তবে এক যুগ আগে থেকে ভয়ানক ছোবল ছিল শুধু মাত্র রাজধানী কেন্দ্রিক। ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার পয়সারহাট গ্রামের আ. রব মিয়ার ছেলে ঝন্টু মিয়াকে (২৪) প্রায় ২ কেজি গাঁজা ও ৮০ পিস ইয়াবা বিক্রির সময় পয়সারহাট ব্রিজের পশ্চিমপাশ থেকে প্রথমবার হাতেনাতে গ্রেফতার করেছিল এসআই ইদ্রিস। এব্যাপারে মামলাও হয়েছিল।

এরপর থেকে এ অঞ্চলে ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের কথা প্রশাসন স্বীকার করে। ইয়াবা বিক্রেতাদের কাছ থেকে জানাযায়, এঅঞ্চলে এখন চার ধরনের ইয়াবা ক্রয় বিক্রয় হয়। এর মধ্যে গাঢ় লাল রঙ্গের চম্পা প্রতি পিচ খুচরা ২০০ থেকে ২৩০টাকা বিক্রয় হয়। যশোরে এটি কেনা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। হালকা গোলাপী রঙ্গের আর সেভেন ইয়াবার দাম সব চাইতে বেশি। এটি ৫০০ টাকা করে ব্ক্রিয় হয়। হালকা গোলাপী রঙ্গের আরেক ধারনের ইয়াবা এর নাম জেপি এর খুচরা মূল্য ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।

মাটি রঙ্গে ইয়াবা যার নাম ডগ, এই ইয়াবা বিক্রয় হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া দেশীয় তৈরী ভেজাল ইয়াবা ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। এসব মাদকদ্রব্য পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া ও কালকিনি উপজেলার মাদকের ডেরা থেকে আনা হয় বলেও জানা গেছে। প্রশাসন মাঝে মধ্যে বিভিন্ন স্পট থেকে অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতার করলেও কয়েকদিনের মধ্যেই তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে নব উদ্দমে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিলের পাশাপাশি বর্তমানে ড্যান্ডি নামে নেশা জাতীয় দ্রব্য সহজলভ্য ও সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মাদকের তালিকায় স্থান পেয়েছে।

বিভিন্ন সরকারের সময় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে কিছু সরকার দলীয় প্রভাবশালীদের মদদে উপজেলার বিভিন্নস্থানে মাদক বিক্রির সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ মাদক বিক্রি ও সেবনের কয়েকটি চিহ্নিত স্পট হচ্ছে- গৈলা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা, গৈলা বাজারের ২-৩টি জায়গা, গৈলা এতিমখানার পাশে মতি সরদারের বাড়ি, উপজেলা সদরের হেলিপ্যাড, বাইপস সড়ক, থানার উত্তরপাশের টেম্পোস্ট্যান্ডসহ ২-৩ জায়গা, উপজেলা সদরের কালীখোলা এলাকা, কেজি স্কুলের পশ্চিমপাশে, পশ্চিম সুজনকাঠী ও নগর বাড়ী সিমান্তে সোহাগ হাওলাদার এর বাড়িতে,সোহাগ হাওলদার কয়েকবার প্রসাশনের হাতে মাদক সহ ধরা পরলেও আইনের ফাক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে এসে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করে।

নগরবাড়ীর আবু তালেব সরদারের নেতৃত্বে কালাম সরদার ও মতলেব সরদারে ঘড়ে রাতে জুয়া ও মাদকের আর্ডা বসে, এছাড়াও ঘোড়ার পাড়, কালুরপাড়, পয়সারহাটের পূর্ব ও পশ্চিমপাড়ের ভ্যানস্ট্যান্ড, বাগধা, পাকুরিতা স্কুল এলাকা, বাকাল নওপাড়া গ্রামে শুক্কুর মোল্ল¬ার বাড়ি, জোবারপাড়-নাঘিরপাড়ের ব্রিজ ও স্কুল এলাকা, বড়মাগরা উত্তরপাড়, আস্কর বাঁশতলায় আয়নাল ও কবিরের বাড়ি, ছয়গ্রাম বন্দর, মিশ্রিপাড়া হাট ও সুইজগেট, কালুরপাড়, সাহেবেরহাটে মন্টু ভুঁইমালি, রামেরবাজার, মোল্ল¬াপাড়া, রাজিহার আলোশিখা এলাকা, মাগুরা বাজার, ভালুকশী, চৌদ্দ ঘড়, ক্লাব বাড়ী, রামানন্দেরআঁক, কোদালধোয়া’সহ আরও কয়েকটি জায়গায় প্রতিনিয়ত মাদকবিক্রি ও সেবন চলছে।

নাম না প্রকাশের শর্তে মাদক ব্যবসায় সংশ্লি¬ষ্ট এমনি একজন জানান, টেকেরহাটে পুলিশী চেকপোস্ট বসার কারণে মাদক পাচারকারীরা আগৈলঝাড়ার আশেপাশে কোন পুলিশী চেকপোস্ট না থাকায় নিরাপদ ট্রানজিট হিসেবে এ রুটটি অধিক নিরাপদ হিসেবে ব্যবহার করছে। যশোর-গোপালগঞ্জ থেকে মাদকের চালান পয়সারহাট-আগৈলঝাড়া হয়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল যোগে বরিশাল সদরসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় অভ্যন্তরীণ রুটে পাচার হচ্ছে। ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল ড্রাইভাররা জেনে শুনে বেশি পয়সা পাওয়ার লোভে এসমস্ত কাজ করে আসছে।

এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা রামশীল থেকে রাজিহার ও চাঁদশী হয়ে গৌরনদী এবং রাজিহার থেকে ঘোষেরহাট রুট ব্যবহার করছে। গৌরনদীর ঘোষেরহাট ঠাকুরবাড়ি মাদকের অন্যতম একটি জমজমাট বিক্রয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ওই এলাকার বিক্রেতারা বাশাইল ওয়াপদা এলাকায় ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রির বিভিন্ন ষ্পট গড়ে তুলেছে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, আগৈলঝাড়ায় বর্তমানে গাঁজা, ফেন্সিডিলের পাশাপাশি যৌণ উত্তেজক ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছে চায়ের দোকানে।

এসব স্থানে উঠতি কিছু রাজনৈতিক পাতিনেতাদের অবাধে মাদকের বিক্রয় ও ব্যবহার চলছে। ইয়াবা ব্যবহারকারীদের পার্শপ্রতিক্রীয়া সম্পর্কে ডাক্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, হেরোইনের চাইতে ইয়াবা সেবনকারীদের পার্শপ্রতিক্রীয়া ভয়াবহ। নিয়মিত ইয়াবা সেবন করলে মস্তিস্কে রক্ত ক্ষরণ, নিদ্রাহীনতা, খিচুনি, ক্ষুধামন্দা, ফুসফুস , কিটনির সমস্যা, দ্রুতগতির হৃদস্পন্দন, উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রা, হাইপারর্থামিয়া, এরা বেশ কয়েক রাত প্রর্যন্ত না ঘুমিয়ে থাকতে পারে। প্রায় সময় হতাশায় ভোগে, স্বাভাবিক স্মৃতিশক্তি থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি এরা মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলে। এরা মৃত্যুর আগে পাগল হয়ে যায়। এঅঞ্চলে কয়েকজন পাগল হয়ে ািচকিৎসা করিয়েছে।

বর্তমানে কয়েকজন চিকিৎসাধিন রয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযান মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের এতটুকু দমন করতে না পারায় অভিভাবকরা তাদের ছেলে সন্তানদের নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছেন। গত ১৭ এপ্রিল আগৈলঝাড়া থানা প্রশাসনের আয়োজনে মাদক সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও নারী নির্যাতন বিরোধি সূধি সমাবেশে প্রধান অতিথি বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম আগৈলঝাড়া থানাকে মাদকমুক্ত মডেল থানায় রূপান্তর করার ঘোষনা দেন।

তার এই ঘোষনাতে সাধুবাদ জানিয়ে অভিভাবকরা মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আরো ব্যাপক অভিযান পরিচালনার অনুরোধ করেছেন। আগৈলঝাড়া থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, ঈদকে সামনে রেখে মাদক বিরোধি অভিযান বাড়ানো হয়েছে। যাতে কোন ভাবেই যেন আগৈলঝাড়ায় মাদক ঢুকতে না পারে। পুলিশের এ অভিযান চলমান থাকবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD