অভিযান-১০ লঞ্চটির পদে পদে অনিয়ম Latest Update News of Bangladesh

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৮ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
বরিশালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্য কোন দ্বন্দ্ব নেই: চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির মোবাইল ইন্টারনেট গতি সূচকে বাংলাদেশের আরও অবনতি ৫২৭টি ভারতীয় খাদ্যপণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানের অস্তিত্ব মিলেছে: ইইউ মাদক মামলার বাদী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ, আসামী খালাস কাউখালীতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা বৃষ্টির জন্য বরিশালে ইসতিসকার নামাজ আদায় সদর উপজেলার শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চাই : এসএম জাকির তাপপ্রবাহে তৃষ্ণার্তদের মাঝে ইয়াস’র পানি ও স্যালাইন বিতরণ মঠবাড়িয়ায় বৃষ্টি কামনা করে ইসতেস্কার নামাজ আদায় বৃষ্টির জন্য ঝালকাঠিতে ইস্তিসকার নামাজ আদায়




অভিযান-১০ লঞ্চটির পদে পদে অনিয়ম

অভিযান-১০ লঞ্চটির পদে পদে অনিয়ম

অভিযান-১০ লঞ্চটির পদে পদে অনিয়ম




ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হওয়া অভিযান-১০ লঞ্চটির যেসব নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকার কথা ছিল, সেগুলো নৌযানটিতে ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে বিভিন্ন মহলে। এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো নানান অনিয়মের তথ্য।

 

 

রোববার দুপুরে ঝালকাঠির লঞ্চ টার্মিনালে বেঁধে রাখা আগুনে পুড়ে যাওয়া অভিযান-১০ লঞ্চটি ঘুরে দেখা গেছে, লঞ্চটির নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার কিছু অংশ ছিলো ডেকের যাত্রীদের জন্য। আর দ্বিতীয় তলার অর্ধেক অংশ এবং তৃতীয় তলার পুরোটাই ছিলো কেবিন যাত্রীদের জন্য। অভিযান-১০ লঞ্চে সিঙ্গেল ও ডাবল মিলিয়ে শতাধিক কেবিন ছিলো। আর এ সকল কেবিনে পাঁচ তারকা মানের হোটেলের মতো সব ধরনের আয়োজন ছিলো। শুধু পর্যাপ্ত ছিলো না অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ও জরুরি মুহূর্তে পানিতে লাফিয়ে জীবন বাঁচানোর বয়া।

 

 

অভিযান-১০ এর ডেকের যাত্রীদের জন্য নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় ৫০টিরও কম বয়া ছিলো। দ্বিতীয় তলার কেবিন ব্লকে দুই পাশ মিলিয়ে ৮ থেকে ১০টি বয়া রাখার স্থান ছিলো আর তৃতীয় তলায় ৫৮টি সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিনের জন্য সব মিলিয়ে ২০টি বয়া রাখার স্থান ছিলো। অর্থাৎ শতাধিক কেবিনের জন্য মাত্র ৩০টি বয়া রাখার স্থানের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

 

 

 

হাজারের বেশি যাত্রী বহনকারী বিলাসবহুল অভিযান-১০ লঞ্চ যাত্রী সেবায় আকৃষ্ট করলেও উপেক্ষিত থেকে গেছে লঞ্চে ওঠা যাত্রীদের জীবন রক্ষার বিষয়টি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র যেন আরেক শুভঙ্করের ফাঁকি। পুরো লঞ্চটিতে মাত্র তিনটি অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র পাওয়া গেছে। সেটিও ইঞ্জিন রুমের পাশে।

 

 

এ ছাড়া লঞ্চের রান্নাঘর ছিলো ইঞ্জিন রুমের মাত্র ১০ ফুটের মধ্যে, চায়ের ক্যান্টিন ছিলো ১৫ ফুটের মধ্যে। ছিলো না জরুরি মুহূর্তে বের হওয়ার কোনো উপায়। লঞ্চ থেকে যাত্রীদের বের হওয়ার প্রধান দরজাটি তিন ফুটেরও কম। সেখান দিয়ে একসঙ্গে দুজন মানুষ বের হওয়াই কষ্টকর।

 

 

এ দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির লাইনের ব্যবস্থা থাকলেও ছিলো না ব্যবহার করার ব্যবস্থা। এমনকি আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পরও অব্যবহৃত থেকে গেছে সেই পানির লাইন।

 

 

যাত্রীদের জন্য রাখা জীবনরক্ষা সামগ্রী বয়া রাখা ছিলো অন্তত ১২ ফুট উচ্চতায়। তা আবার শক্ত করে বাধা, আগুনে পুড়ে গেছে ভস্মিভুত হয়ে। যা দেখে শনিবার তদন্ত কমিটির সদস্যরা মন্তব্য করেছেন, এই বয়া কীভাবে পাবে যাত্রীরা। বাস্তবে ঘটেছেও তাই। লঞ্চে থাকা অল্পসংখ্যক যে বয়া ছিলো তার বেশির ভাগই থেকে গেছে লঞ্চে। কিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে আর কিছু বয়া আগুনে খানিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও টিকে গেছে যাত্রীদের জীবন নিয়ে অবহেলা আর লোক দেখানোর প্রতিবাদ হিসেবে।

 

 

বয়া রাখার স্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঘটনার পরের দিন লঞ্চটি পরিদর্শনে আসা নৌ পরিবহন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সাবেক নৌ মন্ত্রী শাহজাহান খানও। দুর্ঘটনার তৃতীয় দিনের বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া অভিযান-১০ লঞ্চটি পরিদর্শনে যান ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতরের পরিচালক (অপারেশন ও ম্যানটেনেন্স) লে. কর্নেল জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দলটি দগ্ধ অভিযান-১০ ঘুরে দেখেছেন।

 

 

 

নৌপরিবহন অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, অভিযান-১০ লঞ্চটি ২০১৯ সালে নিবন্ধিত হয়। এর মালিক সূত্রাপুরের বাসিন্দা মো. হাম জামাল শেখ নামে এক ব্যবসায়ী। লঞ্চটিতে ১২৫টি লাইফ বয়া, ২২টি লাইফ জ্যাকেট, ফায়ার এক্সটিংগুইশার ২০, বালি ভর্তি বালতি ১৫টি, পাম্প ১টি ও ১টি বালির বক্স থাকার কথা। বয়াগুলো যাত্রীদের হাতের নাগালে ও প্রকাশ্যে রাখার নিয়ম রয়েছে। যেন দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি নিয়ে যাত্রীরা পানিতে ঝাঁপিয়ে প্রাণ রক্ষা করতে পারেন।

 

 

উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, একটি বয়া ধরে ৬-৭ জন যাত্রী পানিতে ভেসে থাকতে পারে। সে অনুযায়ী, ৩১০ জন যাত্রী থাকলে সবাই পানিতে ঝাঁপ দিলেও বয়ার সংকট হতো না। কিন্তু বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা অনেকেই জানিয়েছেন, লঞ্চটি আগুন লাগার পর প্রায় ১ ঘণ্টা পানিতে চলমান অবস্থায় ভেসে ছিল। যারা সাঁতার জানতেন, তারা পানিতে ঝাঁপ দিয়েছেন। আর অনেকেই বয়ার খোঁজে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেছেন। কেউ পুড়ে মারা গেছেন। কেউ পানিতে ডুবে গেছেন। একপর্যায়ে ঝালকাঠির দিয়াকূল গ্রামের তীরে লঞ্চটি ভাসা অবস্থায় আটকে গেলে দ্রæত নামতে গিয়ে যাত্রীদের অনেকে আহত হন।

 

 

জুম্মান নামে লঞ্চের বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী জানান, তিনি নিচ তলার ডেকের সামনের দিকে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে দেখেন আগুন আর আগুন। তিনি বলেন, সাঁতার জানলেও মাঝ নদীতে কতক্ষণ আর ভেসে থাকা যায়। তাই পানিতে ঝাঁপ দেয়ার জন্য একটি বয়া খুঁজছিলাম। কিন্তু দেখি, কোথাও বয়া নেই। যে কটি ছিল, তার কয়েকটা নিয়ে অনেক আগেই মানুষ পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে। বাকিগুলো এতোই শক্ত করে বাধা ছিলো যা কেউ টেনেও ছুটাতে পারেনি। এ অবস্থায় লঞ্চের একেবারে সামনে অপেক্ষা করতে থাকি। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকি। পরে লঞ্চটি তীরের কাছাকাছি গেলে লাফিয়ে পানিতে নেমে প্রাণ বাঁচাই।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD