শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
৫৭ ধারা বলে আর কিছু থাকবে না। এটি ডেড হয়ে যাবে। সংসদীয় কমিটিতে নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা সংসদের আগামী অধিবেশনে পাস হবে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, সাংবাদিকতার জন্য ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অতএব অপপ্রয়োগ যেন না হয় তা নিশ্চিত করা সরকারে মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, নতুন আইনে ৫৭ ধারার কোনো বিষয় নেই। শুধু ডিজিটাল অপরাধগুলো চিহ্নিত করেছি। সরাসরি ও ৫৭ ধারা সংশ্লিষ্ট অপরাধে যেসব মামলা হতো, নতুন আইন অনুযায়ী পুলিশ সেসব বিষয়ে কোনো রকমের ব্যবস্থা নিতে পারবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক থাকবে, তার অনুমতিক্রমেই কেবল মামলা করতে পারবে। সুতরাং অপপ্রয়োগের জায়গাটাকে আমরা বন্ধ করার চেষ্টা করছি।
টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল ও সাইবার ক্রাইম বন্ধ করতে চাই। মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বর্তমানে ৫৭ ধারায় যে মামলাগুলো আছে, সেগুলো বিদ্যমান আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি হবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমানে ৫৭ ধারায় সরাসরি কেউ মামলা করতে পারে না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কোনো থানা ৫৭ ধারায় মামলা গ্রহণ করে না। আর ৫৭ ধারা বস্তুতপক্ষে ‘ডেড’। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর ৫৭ ধারা নামক কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না। সুতরাং এটি নিয়ে টেনশনের কোনো কারণ নেই।
ইতিমধ্যে ৫৭ ধারায় যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোর কী হবে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যেগুলো মামলা আছে সেগুলো স্বাভাবিক গতিতে আইন অনুযায়ী যেভাবে নিষ্পত্তি হয় সেভাবে হবে। যে মামলা যে আইনের আওতায় আছে তা নিষ্পত্তি হবে ওই আইনেই। আমরা আইনে এ ব্যবস্থা করতে পারবো না, যে অতীতের সমস্ত মামলা বিলীন করে দেওয়া হোক।
মন্ত্রী বলেন, নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে ওই ধরনের আর মামলার সুযোগ থাকবে না। কারণ আইনে একটি কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। ওই কমিশনের অনুমোদন ছাড়া এ আইনে কেউ মামলা করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ৫৭ ধারার কোনো ধারণা আমরা নতুন আইনে রাখিনি। কারণ, আমরা মনে করি আমাদের দেশের সংবাদপত্র, মিডিয়ার মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সুতরাং তার ওপরে কোনো ধরনের শিকল বা তালা দেওয়া আমাদের কোনো আইনেই উচিৎ নয়। আমরা উন্মুক্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করি এবং স্বাভাবিক অপরাধের চেয়ে ডিজিটাল অপরাধের গুরুত্ব অনেক বেশি। অতএব আমাদের প্রযুক্তিগত দিক থেকে ডিজিটাল অপরাধ দমন করতে হবে। তবে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা হরণ করে নয়।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে চায়। সেটি শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, রাজধানী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন এবং গ্রাম পর্যন্ত ডিজিটাল হবে। সেক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
Leave a Reply