শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ আক্রান্ত হয়েছেন হৃদরোগে। মুমূর্ষ অবস্থায় স্বজনরা নিয়ে ঘুরেছেন হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তু একাধিক হাসপাতালে ঘুরেও নূন্যতম চিকিৎসা না পেয়ে শেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো রাজধানীর লালমাটিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম নেওয়াজ খানকে। ৫৯ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী ১১ মে দুপুর ১টার দিকে ১/২ ব্লক সি-এর নিজ বাসায় বসে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। জরুরী ভিত্তিতে তাকে নিকটস্থ মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়।
সেখানে গুরুত্বর অসুস্থ্য শামীম নেওয়াজ খানকে শুধুমাত্র অক্সিজেন দিয়ে রেখে দেওয়া হয় এবং প্রথমিক উপসর্গমতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন রোগী হার্ট এ্যাটাকা করেছেন। কিন্তু ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের জানান, রোগী যে রোগেই আক্রান্ত হোক; করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া তাড়া কার্যত চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করতে পারবেন না।
স্বজনরা অনুনয় করলে ওই হাসপাতাল থেকে অসুস্থ্য শামীম নেওয়াজ খানকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়। এসময়ে রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে রাখার জন্য বলা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোড় করে অসুস্থ্য শামীম নেওয়াজ খান ও তার স্বজনদের বের করে দেন।
এ পর্যায়ে হৃদরোগে আক্রান্ত ওই রোগীতে নিয়ে মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রিপোর্ট না পেয়ে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন।
কোন হাসপাতাল যখন নিচ্ছিল না আর অসুস্থ্য ব্যবসায়ী শামীম নেওয়াজ খানকে নিয়ে পুরো রাজধানী ঘুরছিলেন স্বজনরা। তাতেই রাত ১০টা বেজে গেলো। উপায়ন্ত না পেয়ে শেষ চেষ্টা চালাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মুমূর্ষ ব্যবসায়ীকে। ততক্ষণে আর কোন চিকিৎসার অপেক্ষা করেননি ৫৯ বছর বয়সী শামীম নেওয়াজ খান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানালেন অসুস্থ্য শামীম নেওয়াজ খান মারা গেছেন।
রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, তার পরের দিন ১২ মে শামীম নেওয়াজ খানের করোনা টেস্টের রিপোর্ট আসে। রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসে। তারা জানান, আমরা সতর্ক ছিলাম। করেনায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই আমরা বুঝতাম। রিপোর্টও নেগেটিভ। কিন্তু হাসপাতালগুলো অসহযোগীতা করে এবং চিকিৎসা না করে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন।
আমরা ঢাকার কোন হাসপাতাল বাদ রাখিনি। কিন্তু কেউ করোনা রিপোর্ট ছাড়া রোগীর চিকিৎসা শুরু করবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন।
Leave a Reply