যতো যাত্রী উডাইতে পারে লঞ্চআলাগো ততোই লাভ ! Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




যতো যাত্রী উডাইতে পারে লঞ্চআলাগো ততোই লাভ !

যতো যাত্রী উডাইতে পারে লঞ্চআলাগো ততোই লাভ !




নিজস্ব প্রতিবেদক ॥‘লঞ্চের নাকি টিকিট শেষ অইয়া গেছে, টিকিট শেষ অইয়া গেলে এহন আমরা যামু কেমনে, ছেলেপান নিয়া তো সকাল সকালই লঞ্চঘাটের দিকে রওনা হইছি।’ শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে বাইপাস সড়ক ধরে সদরঘাটের দিকে যাওয়ার পথে মাইদুল ইসলাম এভাবেই উৎকণ্ঠার কথা জানান।

একই বাসে পাশের আরেক যাত্রী অনেকটা কৌতূহল নিয়ে জানতে চান, ‘প্রতিবার ঈদের সময় ট্রেন আর বাসের টিকিটের জন্য অপেক্ষা-হুড়োহুড়ি ও লাইন দেওয়ার খবর দেখতে পাই, কিন্তু লঞ্চে লাখ লাখ মানুষ ঈদে বাড়ি ফিরলেও টিকিটের জন্য তো এমন কোনো ঘটনা আমাদের চোখে পড়ে না; তবে ঠিকই খবর শুনি যে লঞ্চের আগাম টিকিট শেষ, কারণটা কী?’ কারণটা জানা যায় একটু পরেই সদরঘাটে গিয়ে।

গতকাল সকাল ১০টা নাগাদই লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় করতে শুরু করছিল দূরপাল¬ার বিভিন্ন রুটের যাত্রী। বিশেষ করে বরিশালগামী সাধারণ যাত্রীর ভিড় বেশি। বরিশাল অঞ্চলের কোনো কোনো রুটের যাত্রীও তখনই হাজির লঞ্চঘাটে। ঘাটে এসেই তারা যে যার মতো লঞ্চে উঠে ডেকে চাদর বিছিয়ে বসে পড়ে।

কেউ বা বসে পাশের বেঞ্চে। ‘বিনা টিকিটেই’ সবাই উঠে বসেছে লঞ্চে। টিকিট ছাড়া লঞ্চে উঠলেন কিভাবে, দূরপাল¬ার বাসে বা ট্রেনে তো আগে টিকিট কাটতে হয়, এখানে লাগেনি? প্রশ্ন শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন শরীয়তপুরগামী সাহানারা বেগম। বললেন, ‘এইডা আবার কী কন! কই কোনো কালেই তো লঞ্চে চড়নের আগে মোগো টিকিট কাটতে অয় নাই, লঞ্চ অনেক দূর যাওনের পর মাঝরাইতে আইয়া টিকিট দিয়া যায়।’ সিরাজ মোল¬া নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘খালি কেবিনের যাত্রীগো আগে টিকিট কাটা লাগে,

কারণ কেবিন তো গোনা গোনা অল্প কয়ডা, আর ডেকে তো একেকটা লঞ্চে হাজার হাজার মানুষ যায়, যত যাত্রী উডাইাতে পারে লঞ্চওয়ালাগো ততই লাভ।’ বন্দর ভবনে লঞ্চের টিকিট কাউন্টারের কাছে ঘুরতে থাকা বরিশালের যাত্রী সালাউদ্দিন সরদার বলেন, ‘কেবিনের বুকিং দেওয়ার জন্য আসছি, কিন্তু একটি লঞ্চেও নাকি কোনো কেবিন খালি নেই। এখন তো বিপদে পড়ে গেলাম।’

বন্দরে দায়িত্ব পালনকারী একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রতিবার ঈদের সময় যত বিশৃঙ্খলা হয় তার সবটাই বেহিসাবি যাত্রীর কারণে। যাত্রীর ঢল আসে, তারা ঠেলাঠেলি করে নিজ নিজ পছন্দের লঞ্চে উঠে পড়ে। তাদের নিয়ন্ত্রণের কথা মুখে বা কাগজে-কলমে বলা হলেও বাস্তবে সেটা সম্ভব হয় না। মাঝেমধেই গ্যাংওয়ে ও পন্টুনে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয় যাত্রীদের ভিড়ে। আর এর জন্য মূলত দায়ী লঞ্চ মালিকরা। তাঁরাই চান না যে বাস-ট্রেনের মতো লঞ্চে ডেকের যাত্রীদের আগাম টিকিট দেওয়া হোক। বরং তাঁরা ঈদকে ব্যবসার বড় সুযোগ মনে করেন।

যে কারণে ধারণক্ষমতার দিকে না তাকিয়ে যে যত পারে কর্মীদের মাধ্যমে ডাকাডাকি আর ধাক্কাধাক্কি করে যাত্রীদের লঞ্চে তুলে নেয়। কোন লঞ্চে কত যাত্রী উঠল তার কোনো সঠিক হিসাব পায় না বন্দর কর্তৃপক্ষ। ওই কর্মকর্তা বলেন, কর্তৃপক্ষ রীতিমতো লঞ্চমালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। বেশি কড়াকড়ি করতে গেলে ধর্মঘটের হুমকি দেয়। নৌযাত্রী পরিবহন ব্যবস্থাপনার ওপর নজর রাখা সূত্রগুলো জানায়, ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বা দূরপাল¬ার একেকটি লঞ্চের কেবিনের সংখ্যা গড়ে এক শটিরও কম। আর প্রতিটি লঞ্চে কেবিনের যাত্রীর সংখ্যা দুই শ’র কাছাকাছি।

এ ছাড়া কোনো কোনো লঞ্চে সোফা বা ইকোনমি শ্রেণিতে আরো বড়জোর এক থেকে দেড় শ যাত্রী থাকে। এই দুই শ্রেণির যাত্রী একেকটি লঞ্চের ধারণক্ষমতার ৫ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে আকারভেদে একেকটি লঞ্চের ডেকে কাগজ-কলমে ৮০০ থেকে এক হাজার ৭০০ যাত্রী ধারণক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু ঈদের সময় ডেকে যাত্রী তোলা হয় এ ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাবি¬উটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর এম মাহবুব উল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বহু চেষ্টা করেছিলাম সব যাত্রীকে আগাম টিকিট দিতে এবং কমপক্ষে ৩০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে ছাড়তে। মালিকদের নিয়ে বৈঠকও করেছিলাম। মালিকরা আমাদের ওয়াদা দিলেও তা শেষ পর্যন্ত করেননি।

এর আগেও অনেক টাকা ব্যয় করে তাঁদের পরামর্শ অনুসারেই কাউন্টার করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেখানেও কেউ থাকে না।’ এদিকে আমাদের চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল থেকেই চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে লঞ্চ, স্টিমার, ট্রেন ও সড়কপথে আসা মানুষজন গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে নিয়মিত লঞ্চের বাইরেও বাড়তি যাত্রী সামাল দিতে একাধিক বিশেষ লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সার্ভিসের বিআইডাবি¬উটিসির ব্যবস্থাপক পারভেজ খান জানান, চারটি ফেরি ২৪ ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে যানবাহন পারাপার অব্যাহত রেখেছে। এবারের ঈদে চাঁদপুর-ঢাকাসহ আরো কয়েকটি নৌপথে ৫০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ, দুটি স্টিমার চলাচল করবে। গতকাল থেকে শুরু হওয়া এসব যান ঈদের পর ১২ জুন পর্যন্ত চলবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD