মেয়ের লাশ দাফন করতে দিচ্ছেন না ইউপি চেয়ারম্যান Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




মেয়ের লাশ দাফন করতে দিচ্ছেন না ইউপি চেয়ারম্যান

মেয়ের লাশ দাফন করতে দিচ্ছেন না ইউপি চেয়ারম্যান




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ গ্রামের বাড়িতে মেয়ের লাশ দাফন করতে দিচ্ছেন না ইউপি চেয়ারম্যান, এ জন্য এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গ পাঁচ হাজার টাকায় চুক্তি করেছিলেন মেয়ের মৃতদেহ দাফনের। কিন্তু মেয়ের লাশ ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক দাফন না করেই ফেলে দেয় তিস্তা নদীতে। দুই দিন পর সেই মৃতদেহ লালমনিরহাটের তিস্তার পানিতে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। আদিতমারী থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর সেই হতভাগ্য বাবা জানতে পারেন তার মেয়ের লাশ দাফন হয়নি। সব ঘটনা জানতে পেরে পুলিশের তত্ত্বাবধানে শেষ পর্যন্ত লাশ দাফন হয়।

এমন মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায়। যার শিকার মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের হতভাগ্য বাবা গোলাম মোস্তফা।আদিতমারী থানা পুলিশ জানায়, পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের (২২) মরদেহ রোববার সন্ধ্যায় তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। সোমবার বিকেলে মরদেহের জানাজা শেষে মৃতের নিজ গ্রামে দাফন করে যৌথভাবে আদিতমারী ও পাটগ্রাম থানা পুলিশ।

জানা গেছে, মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে। তিনি একই উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার স্বামী নিগৃহীতা মিজানুর রহমানের স্ত্রী।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানান, বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে ছয় মাস আগে বিয়ে হয় পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে একাই গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মৌসুমী। বৃহস্পতিবার অসুস্থতা অনুভব করলে একটি ট্রাকে পাটগ্রামে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। পথিমধ্যে রংপুরের তাজহাট এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকচালক তাকে মৃত দেখে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে তাজহাট থানা পুলিশ মৌসুমীর মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পরদিন শুক্রবার খবর পেয়ে মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা তাজহাট থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন।

তিনি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাতকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করে নিজ এলাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি চান। কিন্তু চেয়ারম্যান ওই মরদেহ করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে তার পরিবার ও মরদেহবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন বাবা গোলাম মোস্তফা।

নিরুপায় হয়ে হতভাগ্য বাবা মেয়ের মরদেহ দাফন করতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার একজন লাশবাহী গাড়ি চালকের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা চুক্তি করেন লাশ দাফনের। চালক মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়ে গোলাম মোস্তফাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে মরদেহটি তিস্তা নদীতে ফেলে দেন। দুই দিন পরে স্থানীয়দের খবরে রবিবার রাতে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারী ব্যাগে মোড়ানো অজ্ঞাত মরদেহটি উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।

সোমবার ঈদের নামাজ শেষে আদিতমারী থানা পুলিশ জানাজা শেষে আদিতমারী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিতেই খবর পেয়ে পরিচয় শনাক্ত করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় আদিতমারী থানা পুলিশ পাটগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় পাটগ্রামের নিজ গ্রামে সোমবার বিকেলে মৌসুমীকে দাফন করেন।

মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আদিতমারী থানায় কথা হলে তিনি বলেন, হাতে পায়ে ধরতে চেয়েও লাশ গ্রামে নিতে দেয়নি আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত চেয়ারম্যান। বাধ্য হয়ে একজন ড্রাইভারকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি লাশ দাফন করতে। তারাও দাফন না করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। অবশেষে আবারো মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করতে হলো আদিতমারী থানায়। পুলিশের পাহারায় মেয়ের মরদেহ দাফনের জন্য বাড়ি যাচ্ছি। মেয়ের মরদেহ নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে তাদের বিচার চাই।

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাতের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও দুঃখজনক। সরকারী ব্যাগে মোড়ানো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। মৃতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তার বাবার আকুতি জেনে পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মরদেহ তার গ্রামে দাফন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবতির্তে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD