মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি॥ বর্ষা এলেই পটুয়াখালীর মহিপুর থানার সাথে পার্শ্ববর্তি ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের যাতায়াত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। পাকা রাস্তা না থাকায় মাটির রাস্তায় অতিরিক্ত কাঁদা পানি জমে যে কোন ধরনের যান বাহন চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে পরায় মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
২০১৬ সালে মহিপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন থানা হওয়ায় জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেএেলাকার মানুষ। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েক হাজার জনগণ নতুন থানার সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তারা শুকনো মৌসুমে থানা সদরে যাতায়াত করতে পারলেও বর্ষাকালে মহিপুর থানার সাথে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া মহিপুর সদর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর, মনোহরপুর, সেরাজপুর, লতিফপুর, নিজশিববাড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা চরম দুর্ভোগময়।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তা কাঁচা হওয়ায় বর্ষাকালে হাটু পরিমাণ কর্দমাক্ত থাকে। তখন মানুষ চলাচল তো দূরের কথা গবাদিপশুও চলতে পারে না। তাই মহিপুরের পাইকবাড়ি থেকে মোয়াজ্জেমপুর মাদরাসা হয়ে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত পাকা রাস্তা হলে এ দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হবে। শুকনো মৌসুমে ডালবুগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, বালিয়াতলী, লালুয়াসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়েই চলাচল করে থাকেন। এটিকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে পায়রা বন্দরে যাতায়াতের সহজ পথ হিসেবেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে এ বিষয়ে আলাপকালে তাঁরা জানান, বর্ষাকালে অত্র এলাকায় হঠাৎ করে কোনো চুরি-ডাকাতি ও মারামারিসহ কোনো ধরনের অপকর্ম সংঘটিত হলে মহিপুর থানা থেকে পুলিশ পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি কোনো অসুস্থ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোরও নেই কোনো সুব্যবস্থা। ফলে দুর্ঘটনা চরমরূপ নিলেও কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না। অনেক ভুক্তভোগীরাও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তাছাড়া এ এলাকায় এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অঙ্গীকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও এ এলাকায় নেই তার বাস্তবরূপ। মহিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আ: মালেক আকন জানান, উল্লেখিত রাস্তাটির ১কি:মি: ইতিপূর্বে পাকা হয়েছে বাকি ৬ কি:মি: রাস্তা পাকা করার জন্য আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে উর্ধ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন নিবেদন করেছিলাম। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিব ভাইয়ের কাছে রাস্তাটি পাকা করার জন্য দাবী জানিয়েছি । ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সিকদারের কাছে উল্লেখিত সমস্যার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মহিপুর থানা সদরের সাথে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের যোগাযোগ বর্ষাকালে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুই দুই বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। এ অবস্থায় সকল জনপ্রতিনিধি ও সকল দপ্তরে অনেকবার আবেদন করেছি। তারা এ বিষয়ে সমাধান করবেন বলে আশস্ত করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো বাস্তবরূপ নেই। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী, মহিপুর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান মহিব সাহেবকেও এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তিনি হয়তো শীঘ্রই ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করছি।’
এ বিষয়ে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন সময়ে আশ্বস্ত করলেও জনগণ কবে নাগাদ মহিপুর থানা সদরের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করতে পারবেন এবং বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন তার অপেক্ষায় দিন গুনছেন ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষ।
Leave a Reply