শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক : দেশের প্রেক্ষাগৃহ সর্বশেষ সরব ছিল প্রায় তিন মাস আগে! গেলো বছরের ১৩ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’র সুবাদে তৈরি হয়েছিল সেই কোলাহল। এরপর গুটি কয়েক ছবি মুক্তি পেয়েছিল বটে, কিন্তু আলোচনা দূর; দর্শকের নাগালও ছুঁতে পারেনি। এর মাঝে আবার কিছু ছবির মুক্তি স্থগিত করা হয় রাজনৈতিক ও নির্বাচনজনিত পরিস্থিতির কারণে। ফলে ধারণা করা হচ্ছিল, নতুন বছরে দারুণ কিছুতেই সূচনা হবে।
ধারণা একেবারে অমূলকও ছিল না। কারণ শোনা যাচ্ছিল, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আসবে শাকিব খান অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘দরদ’। এছাড়া ভালোবাসার মাসে মুক্তির বার্তা দিয়েছিল ‘কাজল রেখা’ টিম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, দুটি ছবিই রয়েছে এখন অনিশ্চয়তায়! এই অনিশ্চয়তা অবশ্য মুক্তি নিয়ে নয়, তারিখ নিয়ে।
একটু খোলাসা করা যাক প্রসঙ্গ। গেলো ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ‘দরদ’ নির্মাতা অনন্য মামুন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি অনুকূলে থাকে, তাহলে ২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে ছবিটি। এর নড়চড় হবে না। কিন্তু সোমবার (৮ জানুয়ারি) এক বার্তায় তিনি দর্শককে ফেলে দিলেন অনিশ্চয়তায় সাগরে! জানালেন, ‘দরদ’র মুক্তির তারিখ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না।
অনন্য মামুনের ভাষ্য, “আমরা ‘দরদ’র একটি বড় প্ল্যান করছি। ২৫ থেকে ৫০ হাজার শাকিবিয়ানকে (শাকিবের ভক্ত) নিয়ে একটি ইভেন্ট হবে, সেটার রেজিস্ট্রেশন ওপেন করে দেবো। যেমনটা ফোক ফেস্ট বা এরকম বড় ইভেন্টে দেখা যায়। সেই ভক্তদের নিয়েই ছবির গান ও ট্রেলার একই দিনে মুক্তি দেবো। এটা বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি। ছবি মুক্তির তারিখ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না। একটাই কারণ, আমাকে ছবিটি আরও চার ভাষায় প্রস্তুত করতে হবে। বলার জন্য বলিনি প্যান ইন্ডিয়ান মুভি, একসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারতসহ ৩০ দেশে একই দিনে ‘দরদ’ মুক্তি পাবে। সেটা যেদিনই মুক্তি পাক। এটা চ্যালেঞ্জ।”
মামুনের বক্তব্য থেকে সহজেই আঁচ করা যায়, ‘দরদ’র কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। যেহেতু ছবিটি বাংলার পাশাপাশি হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মালায়লাম ইত্যাদি ভাষায় মুক্তি পাবে; তাই প্রতিটি ভাষার জন্য আলাদা ডাবিং করতে হচ্ছে। এছাড়া ছবির গানগুলো ভারতের প্রভাবশালী কোনও প্রতিষ্ঠানের ব্যানারেই ছাড়তে চান বলে জানান মামুন। এসব প্রক্রিয়া সেরে মুক্তির আলোয় আসতে তাই আরও কিছুটা সময় চান এ নির্মাতা।
অন্যদিকে ‘কাজল রেখা’র ভাগ্য ঝুলে আছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর ওপর। কারণ ছবিটি নির্মিত হয়েছে সরকারি অনুদানে। ফলে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার আগে এটি তথ্যমন্ত্রী দেখবেন। এরপর সেন্সরে যাবে এবং ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে মুক্তি। কিন্তু গত মাস খানেক ধরেই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বর্তমান মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তাই ছবিটি দেখার সময় পাননি। এদিকে নির্বাচন শেষ হলেও শপথসহ আরও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। তাই নতুন মন্ত্রী দায়িত্বে আসা পর্যন্ত ‘কাজল রেখা’র মুক্তির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
ছবিটির নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম জানিয়েছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি তারা মুক্তির তারিখ ভেবেছিলেন। কিন্তু এখন সেটা পেছাতে হচ্ছে। অনিশ্চয়তার কারণে নতুন তারিখও চূড়ান্ত করতে পারছেন না। তবে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ‘কাজল রেখা’য় অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, সাদিয়া আয়মান, শরিফুল রাজ, খায়রুল বাসার, গাউসুল আলম শাওনসহ আরও অনেকে। প্রায় চারশ বছর আগের ময়মনসিং গীতিকা অবলম্বনে ছবিটি নির্মিত হয়েছে।
‘দরদ’-এ শাকিব খানের নায়িকা বলিউডের সোনাল চৌহান। ছবিতে বাংলাদেশ ও ভারতের আরও অনেক অভিনয়শিল্পী রয়েছেন। এটি প্রযোজনা করেছে ঢাকার অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট, কিবরিয়া ফিল্মস, ভারতের এসকে মুভিজ ও ওয়ান ওয়ার্ল্ড মুভিজ।
Leave a Reply