সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠির শহরের পূর্বচাঁদকাঠি আবাসিক এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনায় নিহতের ময়না তদন্তের জন্য রয়েছে মর্গ (লাশকাটা ঘর)। সন্ধ্যা হলেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ভূত আতঙ্ক নেমে আসে। মর্গ স্থানান্তরের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন। বুধবার (৪ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে স্থানান্তরের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জানা গেছে, হত্যা, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনায় নিহতের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে বস্তুগত সাক্ষ্যের জন্য আশির দশকে জিয়াউর রহমানের আমলে ঝালকাঠির পূর্বচাঁদকাঠি এলাকায় স্থাপন করা হয় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গ (লাশকাটা ঘর)। তখন ঐ স্থানটি ছিল বেশ শুনসান নির্জন। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এলাকাটি এখন ঘন বসতিতে রূপ নিয়েছে। গড়ে উঠেছে অনেকগুলো বহুতল ভবন। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা লাশ ময়না তদন্ত করার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থাকলেও তা ব্যবহার হয়নি কখনো। বর্তমানে সেই কক্ষে হাসপাতালের এক কর্মচারী বসবাস করছে। বর্তমানে লাশকাটা ঘরটির সামনে দিয়ে শিশুরা স্কুলে যেতে ভয় পায় বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যার পর ঐ এলাকায় কোনো রিকশা বা অটো যেতে চায় না। ওখানকার বাড়ির মালিকরা জানিয়েছেন তারা ঠিকমতো ভাড়াটিয়াও পাচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা নাসরীন আক্তার বলেন, সন্ধ্যায় কোনো লাশ আনা হলে তা সারারাত রাস্তার পাশে রেখে দেওয়া হয়। আর তা যদি হয় পানিতে পড়া গলিত লাশ বা কবর থেকে তোলা লাশ! তাহলে অত্র এলাকায় গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। এটি এখন স্থানান্তর করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানান, বাংলাদেশের ৯০ ভাগ জেলায় হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিশেষ কক্ষে মর্গ রয়েছে। যেখানে অপ্রীতিকর ঘটনায় নিহতদের মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য লাশকাটা হয়। কিন্তু ঝালকাঠি সদর হাসপাতালটি ব্যতিক্রম। ঘনবসতি আবাসিক এলাকা থেকে অনতি বিলম্বে এ লাশকাটা ঘরটি সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজ আল মাহামুদ বলেন, গত বেশ কয় বছর আগেই তৎকালীন জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবগত করেছি। যেহেতু আমার নির্বাচিত এলাকায় এই সমস্যাটি রয়েছে, আমি এটি অপসারণের ব্যাপারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই আমাদের এমপি মহোদয়কে (আমির হোসেন আমু) বলে লাশকাটা ঘরটি সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করব। সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার জানান, ১শ শয্যা হাসপাতালের জন্য ১ জন ডোম নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি ওখানে গিয়েই কাজ করতেন, সেও চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। মাস্টাররোলে ১ জনে কাজ করছেন। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শেষ করা হলে বহুতল ভবনের একটি কক্ষে মর্গের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। তখন আবাসিক এলাকার মর্গটি অপসারণ করা হবে।
Leave a Reply