শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমির গাজীর (২৪) হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। মঙ্গলবার জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আমির গাজীর বাবা আলতাফ গাজীর লিখিত বক্তব্য পাঠ করার কথা ছিল। তবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা আলতাফ। একপর্যায়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
এরপর পাশে থাকা তার স্ত্রী খাদিজা বেগম লিখিত বক্তব্য পাঠ করার চেষ্টা করেন। তবে তিনিও কান্নায় ভেযে পড়েন। এসময় প্রেস ক্লাবের হলরুমে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সেখানে উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীরাও। পরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত আমির গাজী মামাতো ভাই মো. সুজন।
আলতাফ গাজী নগরের আলেকান্দা রিফুজি কলোনীর বাসিন্দা। মোটরসাইকেল নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ২৬ জানুয়ারি আমিরকে প্রতিপক্ষরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। ২৪ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় আমিরের। এ ঘটনায় আমিরের মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় দু’জন আসামি গ্রেফতার হলেও তারা এখন জামিনে মুক্ত। জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে তারা হুমকি দিচ্ছেন বলে নিহত আমিরের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। এ অবস্থায় তাদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত আমিরের বাবা-মায়ের পক্ষে মো. সুজন বলেন, গত ২০ জানুয়ারি আমিরের মোটরসাইকেল চুরি হয়। পরে খোঁজ নিয়ে আমির জানতে পারে, নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিঅ্যান্ডবি সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে ইসলামপাড়ার মো. আসদুজ্জামান বাদশার ওয়ার্কশপে তার মোটরসাইকেলটি রয়েছে। ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলটি আনতে গেলে ১০-১৫ জন কিশোর সন্ত্রাসী মিলে আমিরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমিরকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। গত ২৪ মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় আমির।
এদিকে হামলার ঘটনার পর আমিরের মা খাদিজা বেগম প্রথমে ৭ জনকে আসামি করে বরিশাল কোতয়ালী থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। আমির মৃত্যুর পর গত ৪ এপ্রিল আরও দুজনের নাম যুক্ত করে মোট ৯ জনকে আসামি করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রিট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- মো. এমরান (২২), হৃদয় (২৪), মো. রাজা (২২), মো. আবিদ (১৯), মো. মেহেদী (১৯), মো. রাফি (১৯), মো. আসাদুজ্জামান বাদশা (২৪), বনি আমিন (২৩), মো. হানিফ আকন (২৩)। এদের মধ্যে রাফি ও আসাদুজ্জামান গ্রেফতার হলেও পরে জামিনে মুক্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মামলার পর থেকেই আসামিরা হুমকি দিচ্ছেন। রাফি ও আসাদুজ্জামান জামিনে বেরিয়ে আসার পর হুমকি-ধামকিরে মাত্রা বেড়েছে। আসামিরা বলেছে, মামলা তুলে না নিলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। হুমকির কারণে আমিরের পরিবার ও স্বজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ অবস্থায় দ্রুত বিচার শেষ করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত আমিরের বাবা-মা ছাড়াও বোন জোনাকি ইসলাম, নানী জোহরা বেগম, চাচাতো ভাই মো. খায়রুল উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply