বরিশালে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পরা Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পরা

বরিশালে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পরা

বরিশালে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন মৃৎশিল্পরা




মোঃসুমন তালুকদার, স্টাফ রিপোর্টার॥ বাঙালি জীবনের হাজার বছরের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিল্পটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আধুনিক জিনিসপত্রের ভিড়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকা এবং মাটির দাম বৃদ্ধিসহ নানা সংকট এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে বলে জানান কুমারেরা।

 

মৃৎশিল্প বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য।কিন্তু কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এই শিল্পের প্রসার। অনেকে এ পেশায় থাকলেও মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা না থাকায় অভাব-অনটনে সংসার চালাতে পারছেন না তারা।একবেলা আধবেলা খেয়ে দিনানিপাত করছেন অনেক মৃৎশিল্পী। এক সময়ের কর্মব্যস্ত কুমারপাড়ায় এখন শুনসান নিরবতা।

 

গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর এলাকার পাল পারার অসংখ্য পরিবার এ পেশার সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও কিছু দিনের ব্যবধানে প্রায় ৫০টি পরিবারেরও বেশি পরিবার এ পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে। বরিশাল জেলার মাটি বেলে ও দো’আঁশ হওয়ায় আগৈলঝাড়া, ও উজিরপুর থেকে মাটি সংগ্রহ করে এসব সামগ্রী তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকতেন মৃৎশিল্পীরা।

 

টরকী বন্দরের পাল পারার মৃৎশিল্পী বিকাশ পাল বলেন, যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় আমরা মাটির জিনিস তৈরি করে আসছি।

 

এ পেশার সঙ্গে আমরা জড়িত থাকলেও আমাদের উন্নয়নে বা আর্থিক সহায়তায় সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি ও বিভিন্ন এনজিও বা সমিতি থেকে সহযোগিতা পেলে হয়তো বাপ-দাদার আমলের স্মৃতিকে ধরে রাখা সম্ভব হতো। মৃৎশিল্পী রগু পাল বলেন, এ শিল্পের জন্য আড়াই শতক (১ কাঠা) মাটি কিনতে লাগে ৫০ হাজার টাকা। তার পরেও এই মাটি অনেকেই দিতে চায় না।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, নানামুখী সংকটের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প। ফলে এর ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। স্টিল, চিনামাটি, মেলামাইন ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বাজারে আসার পর মানুষ আর মাটির তৈরি হাঁড়ি, থালা, গ্লাস, মসলা বাটার পাত্র, মাটির ব্যাংক ও খেলনা সামগ্রী ইত্যাদি ব্যবহার করছেন না।

 

এখন শুধু গবাদিপশুর খাবারের জন্য গামলা, কলস, মাটির ব্যাংক, মাটির পাতিল ও সংখ্যালঘুদের পূজা-পার্বণের জন্য নির্মিত কিছু সামগ্রীর চাহিদা রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ অবশ্য এখনও দৈনন্দিন প্রয়োজনে কিছু মাটির তৈরি পাত্র ব্যবহার করেন। কিন্তু মাটির তৈরি সৌখিন জিনিসপত্রের বাজার চাহিদা তেমন একটা নেই বললেই চলে।

 

এক সময় কম দামে মাটি সংগ্রহ করা গেলেও এখন মাটি কিনতে হয় অনেক বেশি দামে। এছাড়া মাটি ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়। ফলে কুমার সম্প্রদায়ের সদস্যরা বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। অপরদিকে, গিতা বালা নামে এক নারী মৃৎশিল্পী জানান, প্রথমে মাটি তৈরি করে তার পর বিভিন্ন আসবাপত্র তৈরি করতে হয়।

 

মাটির তৈরি এসব সামগ্রী শুকানো, রং করাসহ পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত করতে সাত দিন সময় লাগে। পরে এসব সামগ্রী বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়।মাহিলারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান (ইউপি) সৈকত গুহ পিকলু জানান, মাটির জিনিসের চাহিদা কমতে থাকায় এবং দূরের এলাকা থেকে বেশি দামে মাটি কিনতে হয় বলে মৃৎশিল্পীরা দিন দিন এ ঐতিহ্য থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু সংখ্যক পরিবার বংশ পরম্পরার কারণে এ শিল্প ধরে রেখেছে।

 

এ শিল্পের জন্য সরকারিভাবে যদি কোনো সহযোগিতা করা হয় তবে বাঙালির ঐতিহ্যময় এ শিল্প ধরে রাখতে পারবে মৃৎশিল্পীরা।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD