সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পর প্রাপ্তি তথ্যানুযায়ী সংবাদ প্রকাশ করে আদালতে দায়েকৃত মামলার আসামী হলেন দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার কর্তৃপক্ষসহ ৩ জন সাংবাদিক। মামলাটির বাদী হলেন বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলাম (৭১)। বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে কিনা? এমন তথ্যের খোঁজ-খবর না নিয়ে আদালতে আইনের আশ্রয় নিয়েছে ওই চেয়ারম্যান। তবে প্রকাশিত সংবাদের এবং দায়েরকৃত মামলার অভিযোগের বর্ণনায় রয়েছে ব্যাপক গরমিল।
ঘটনাচক্রেফুটে উঠেছে, দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরিদ উদ্দিন’র ছেলে মোঃ ফরহাদ হোসেন (ফুয়াদ) গত ২১/১০/১৮ইং তারিখে তথ্য অধিকার আইনে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আরটিআই) এর বরাবর তথ্য চেয়ে আবেদন করেন। লিখিত আবেদনে উল্লেখ থাকে, (ক) আপনার আওতাধীন এলাকাতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের অক্টেবর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত কি কি উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। তার বিস্তারিত তথ্য। (খ) বাজেট এর বিস্তারিত তথ্য। বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে ০৫/১১/১৮ইং তারিখে জে:প:ব:/বি-৫/১৩/২০১৮/৬৩৫ নং স্বারকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম আকন স্বাক্ষরিত ডাকযোগে প্রেরিত তথ্য প্রদান প্রসংগে লিখিতভাবে জানান তথ্য গ্রহনের ফটোকপির মূল্য বাবদ ২০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
০৮/১১/১৮ইং তারিখে আবেদনকারী ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ফটোকপির মূল্যে পরিশোধ করে তথ্য গ্রহন করেন। যার স্বারক নং জে:প:ব:/বি-৫/১৩/২০১৮/১০১৭। বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে দেয়া ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাধ্যতামূলক কার্যাবলীর বিবরণের ১০১ ও ১০৩ ক্রমিক নং এ উল্লেখ রয়েছে, বরিশাল জেলা পরিষদ ভবন সম্মুুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামে ছবির ভিক্তিতে ম্যুরাল নির্মাণ (চলমান)।
যার বরাদ্দ ১২ লাখ টাকা। একইভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কৃষক কূলের নয়ন মনি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতসহ বাংলাদেশের বিশিষ্টজনদের একটি ম্যুরাল নির্মাণ।
যার ব্যয় ধরা হয় ৫ লাখ টাকা। আবার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রকল্পের ২২৮ নং ক্রমিক নং এ উল্লেখ রয়েছে, বরিশাল জেলা পরিষদ ভবন সম্মুুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নামে ছবির ভিক্তিতে ম্যুরাল নির্মাণ। এর বরাদ্দ ধরা হয় ০৪ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাধ্যতামূলক কার্যাবলীর বিবরণের ৩, ১২৩ ও ১২৪ নং ক্রমিকে উল্লেখ রয়েছে, বরিশাল জেলা পরিষদ অফিস ভবনে ৬ লাখ টাকায় ২টি টয়লেট নির্মাণের বরাদ্দ ধরা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস হল রুমে ০১ টি টয়লেট নির্মাণ।
বরাদ্দ ধরা হয় ২ লাখ টাকায়। আবার অফিস কক্ষে ০১ টি টয়লেট নির্মাণে ০২ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। সর্বমোট ০৪টি টয়লেট এর বরাদ্দ করা হলেও সরেজমিনে নতুনভাবে স্থাপনা করা টয়লেটের অস্থিত্ব নেই। বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া এ সব তথ্যের ভিক্তিতে চলিত বছরের ১৭ ও ২৪ জানুয়ারী দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকায় দুইটি সংবাদ প্রকাশ হয়।
যার শিরোনাম ছিল “ ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে জেলা পরিষদের বাণিজ্যে!’ ও ‘জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুলের ১০ লাখ টাকার টয়লেট নির্মাণ!’ ” প্রকাশিত সংবাদ দু’টির তথ্যের বিষয়ে এখনও যে কেউ সরেজমিনে পরিদর্শন করলে হাতেনাতে প্রমাণ মিলবে। অথচ তথ্য অধিকার আইনে পাওয়া প্রাপ্তি তথ্যের অনুকূলে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মইদুল ইসলাম গত ৩০/০১/১৯ ইং তারিখে বরিশাল চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকার কর্তৃপক্ষসহ ৩ সাংবাদিক কে অভিযুক্ত করে মামলা (নং-২৩) এমপি-দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, ওই পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এম. লোকমান হোসাঈন, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ ফরহাদ হোসেন (ফুয়াদ) ও যুগ্ন সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম। দায়েরকৃত মামলায় চেয়ারম্যান মইদুল উল্লেখ করেন প্রকাশিত সংবাদে তার ১০ কোটি টাকার মানহানি হয়েছে।
Leave a Reply