সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ছাত্রীদের কুরুচিপূর্ণ বার্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রেম নিবেদন করে আসছেন যশোরের মনিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী।
হায়দার আলী নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে প্রধান বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে তাদের ব্যবহৃত ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করে বার্তা দিয়েছেন।
সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বিদায় নেয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আপত্তিকর বার্তা দেয়ায় সে এটি ফাঁস করে দেয়। সোমবার প্রধান শিক্ষকের এ ধরণের কর্মকাণ্ডের বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফীর কাছে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী লিখিত আবেদন করেছে।
এদিকে রোববার রাত থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর আপত্তিকর কথাবার্তার কয়েকটি স্ক্রিনশট ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সর্বমহলে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। এমনকি তার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। তারা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও শঙ্কিত হচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক নিজের ভেরিফাইড আইডি থেকে প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকজন ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভাষাও ব্যবহার করেন। স্কুল থেকে বিদায় নেয়া শিক্ষার্থীরাও তার হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না।
তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর বলেন, কয়েকদিন ধরে তার ব্যবহৃত আইডিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র আইডি হ্যাক করে এসব কাজ করেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইডি হ্যাক হলে জিডি করতে হয় তা তিনি জানেন না।
অভিযোগকারী দুই ছাত্রী ছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা হয়রানির কথা বলেছে।
এক ছাত্রী জানায়, গত আগস্টে তাকে ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর কথাবার্তা লিখলে সে প্রধান শিক্ষকের আইডি ব্লক করে দেয়।
অপর এক শিক্ষার্থী জানায়, স্যারের এমন কুরুচিপূর্ণ লেখার প্রতিবাদ করলেই বিদ্যালয়ে না আসার হুমকি দিতেন।
আরেক শিক্ষার্থী জানায়, সে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনওকে জানানোর কথা বললেই প্রধান শিক্ষক কিছুদিন চুপ হয়ে যেতেন। কিছুদিন পর থেকে আরেকজনের সঙ্গে এমন আপত্তিকর বার্তা দেয়া শুরু করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষকের আইডিতে নাকি মাসখানেক ধরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই তিনি রোববার পুরনো আইডি বন্ধ করে নতুন আইডি খুলেছেন। আমাদের সেই আইডিতে রিকুয়েস্ট পাঠাতে বলেছেন।
এর আগেও চলতি বছরের শুরুতে লিতুনজিরা নামে এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এই প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ছাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত টিম গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply