রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০২ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ॥ নথুল্লাবাদেও হোটেল ডে-নাইট এর মালিক ফয়েজ এবার নিজের অপকর্ম ঢাকতে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে এবং এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে মাসোয়ারা দিয়ে পঁচা-বাসি ও মরা মুরগীর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই তিনি মোটরসাইকেল চালকদের এলাকার ত্যাগ করতে নানান হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন। এর কারণ অবশ্য সপ্তাহ দুই পূর্বে মরা মুরগী রান্নায় বাধা দেয়ার অপরাধে সাথি আক্তার নামে এক নারী শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদ করেছিল চালকরা। এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ঘর মালিক এ ঘটনা জানতে পেরে ফয়েজকে দোকান ছেড়ে দিতে বলেছে। আর এরপর থেকেই ফয়েজ নিজেকে আ’লীগের পরিচয় দিয়ে রাজত্ব কায়েম করতে চায়। তবে স্থানীয় আ’লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন ফয়েজ কোন কালেই আ’লীগের রাজনীতি করেনি। সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় ৩০ আগস্ট সকাল সাড়ে ৬টায় কাজ করতে আসে নারী কর্মচারী সাথি আক্তার (৩০)। আসার পর তাকে মসলা বাটার জন্য বলে কর্মচারী রিপন। এ সময় কর্মচারী রিপনকে একটি মরা মুরগী কাটতে দেখে বাধা দেয় সাথি। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে রিপন রান্না করার লাকড়ি দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায় সাথির মাথায় আঘাত করে লাকড়ি দিয়ে। এতে তার মাথা ফেটে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে সাথি। অন্যান্য কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে আহত সাথি হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পরপরই আঘাতকারী রিপন পালিয়ে যায়। তবে হোটেল মালিক ফায়জুর রহমান ফয়েজ ঘটনার প্রায় তিন ঘন্টা পর হোটেলে আসলেও আহত সাথির খোঁজখবর না নিয়ে রিপনের পক্ষে সাফাই গেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে তার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে হোটেল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রায় দিনই হোটেলে মরা মুরগী রান্না করা হয়। ইতিপূর্বে আহত সাথি তাতে বাধা দিলে তাতে ক্ষীপ্ত হন হোটেল মালিক ফয়েজ। সূত্রটির ধারণা এরই জের ধরে গতকাল সকালে পুনরায় মরা মুরগী রান্নায় বাধা দিলে তাকে মারধর করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাস টার্মিনাল হওয়ায় দূও দূরান্ত থেকে যাত্রী বোঝাই পরিবহন গাড়ি এসে নথুল্লাবাদে নামে। ক্ষুধার্ত মানুষগুলো তড়িঘরি কওে খাবার খেতে হোটেলে ঢুকে। এ সুযোগে মরা পশুর মাংস পরিবেশন করা হয় তাদের। মাঝে মধ্যে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। অপরদিকে অন্যান্য হোটেলের তুলনায় খাবারের মান খারাপ হলেও দামে বেশি হওয়ায়ও কাস্টমারের সাথে তর্কাতর্কি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। স্থানীয় শ্রমিকরা একাধিকবার হোটেল মালিক ফয়েজকে বিষয়টি অভিযোগ আকাওে জানালেও তিনি তাতে কর্নপাত করেনি বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্প্রতি হোটেল মালিক ফয়েজ কাশিপুর এলাকার আওয়ামীলীগ নামধারী কিছু লোকজন সাথে নিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ড্রাইভার ও পার্শ্ববর্তী দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখান।
কিন্তু খোজ নিয়ে দেখা যায় আদৌ তারা আওয়ামীলীগ বা ছাত্রলীগের কেউ নন। এমনকি ফায়েজুর রহমান বিমানবন্দর থানা পুলিশের নামও ব্যবহার করেছেন ইয়াকুব আলী সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির কাছে। পরে থানায় যোগাযোগ করে জানা যায় তারা এবিষয়ে কোন কিছুই অবগত নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক বলেন, এয়ারপোর্ট থানার ওসি মুকুলের অনুমতি নিয়েই তিনি ফুটপাতে চুলা বসিয়েছেন।
এখানে বাধা দেয়ার কেউ নাই। শ্রমিকরা আরো বলেন, থানার ওসি মুকুল থাকতে সাংবাদিকরা আমার কিছুই করতে পারবে না বলেও হুমকি দেয়া তাদের। ইয়াকুব আলী সুপার মার্কেট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক তানভীর হায়দার রোমান ফুটপাত ছেড়ে দিতে বললে প্রথমে ফায়েজুর রহমান অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেও পরে অন্যান্য ব্যবসায়িদের চাপে ক্ষমা চান। এ বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, তাকে বারবার মালিক সমিতি ও দোকান মালিক পক্ষ সাবধান করলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। এমনকি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার প্রভাব দেখান তিনি। তার কার্যক্রমে অন্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনায় সমস্যা হওয়ায় দোকান মালিক পক্ষ ইতিমধ্যে তাকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য জানিয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
Leave a Reply