সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ অজপাড়া গাঁয়ের নিভৃত পল্লীর এক দরিদ্র গৃহবধূ ফাতেমা বেগম। অভাব-অনটনই যার নিত্যসঙ্গী। দিনমজুর স্বামীর সংসারে দুবেলা দুমুঠো ভাত, মোটা কাপড় পরিধান করার চেষ্টায়ই যার পথচলা।
এমনই এক কঠিন বাস্তবতার মুখে জীবন সংগ্রামে নেমেন দিন পার করছেন আত্মপ্রত্যয়ী ফাতেমা বেগম। হোগলা বুনানো, কৃষি কাজ করা ও খালে জাল ফেলে মাছ ধরেই ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি।
ফাতেমা বেগম জানান, ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থাকলেও বাবার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ৮ম শ্রেণিতে পড়াকালীন তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। দাম্পত্য জীবনে ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জননী তিনি। বড় মেয়ে রোজিনা আক্তারকে ২ বছর আগে বিয়ে দেন। মেয়ে জামাইও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। বড় ছেলে রাহাত স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে স্বল্প বেতনে চাকরি করেন। বাকী ২ ছেলে-মেয়ে পড়াশুনা করছেন।
ফাতেমার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল হলেই কৃষিক্ষেতের পরিচর্যা, একটু বেলা বাড়লেই সকালের পান্তাপানি খেয়ে সংসারের খুটিনাটি কাজ সেরে হোগলপাতার হোগলা বুনানো, দুপুর হলে রান্নার কাজ আবার বিকেল হলে হোগলা বুনানো শুরু করে সেই কাজ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। সুযোগ বুঝে জোয়ারের পানিতে বেহুন্দি জাল দিয়ে মাছ ধরা। এসব থেকে যেই আয় হয় তা দিয়েই সন্তানদের পড়াশুনা ও সংসারিক খরচ মিটাতে হয়।
ফাতেমা আরো জানান, জেলে হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাভুক্ত করে তাকে প্রণোদনা সহায়তা পাবার সুযোগ করে দিচ্ছেন। সরকারিভাবে তিনি এ সুযোগ ছাড়া অন্য কোনো সহায়তা বা কোনো ঋণের জালে আবদ্ধ না হয়েই সংগ্রামী জীবনযাপন করছেন তিনি।
ইউপি সদস্য মো. কুদ্দুস হোসেন জানান, ফাতেমা বেগম দরিদ্র পরিবারের হলেও পরিশ্রমী একজন নারী। খালে জাল ফেলে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তাই তাকে জেলে হিসেবে একটি কার্ড দেয়া হয়েছে। ফাতেমা বেগম তার পরিশ্রমের মাধ্যমে সততা ও আত্মনির্ভরশীলতার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।
Leave a Reply